News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

অগ্নিঝরা বিতর্কে একে অপরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুললেন ট্রাম্প-হ্যারিস

বিবিসি বাংলা গনতন্ত্র 2024-09-11, 9:17pm

img_20240911_211756-ca85d5c08183e8aa5ffa46b95cfc7f7f1726067898.png




যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমালা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কে একে অপরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার অভিযোগ তুলেছেন।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মিজ হ্যারিস একপর্যায়ে বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশ শেষ হবার আগেই দর্শকরা 'ক্লান্ত হয়ে' সভাস্থল ত্যাগ করেন। তার মন্তব্যে বিরক্ত হয়ে মি. ট্রাম্পকে গলা চড়িয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে দেখা যায়।

দুজনের মধ্যে প্রথম এই বিতর্কে যেসব বিষয় এসেছে সেগুলোর মধ্যে আছে অর্থনীতি, গর্ভপাত, পররাষ্ট্র নীতি, গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ, আফগানিস্তানে তালেবান ইস্যু, প্রজেক্ট-২০২৫, ছয়ই জানুয়ারির দাঙ্গাসহ নানা বিষয়।

বিতর্কের শুরুতেই দুজন করমর্দন করেন। কমালা হ্যারিসের বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।

তাদের কাছে প্রথম প্রশ্ন ছিল “ আপনি কি বিশ্বাস করেন যে আমেরিকানরা এখন চার বছর আগের চেয়ে ভালো আছে?”

হ্যারিস “অংশগ্রহণমূলক অর্থনীতি’ গড়ে তোলার বিষয়ে নিজের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান।

তরুণ পরিবারগুলোকে সাহায্য করার জন্য আবাসনের খরচ কমানোর কথা জানান তিনি।

তিনি আরো যোগ করেন, “ক্ষুদ্র ব্যবসা হলো আমার আবেগের মধ্যে অন্যতম একটি”।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস অর্থনীতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি বলেন, “ ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রেট ডিপ্রেশনের পর আমাদের জন্য সবচেয়ে খারাপ বেকারত্ব রেখে গেছেন”।

গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে যুক্তরাষ্ট্রের চরম অর্থনৈতিক মন্দার সময়টিকে 'গ্রেট ডিপ্রেশন' বলা হয়।

“আমরা ট্রাম্পের রেখে যাওয়া জঞ্জাল পরিষ্কার করছি” যোগ করেন তিনি।

হ্যারিস প্রজেক্ট - ২০২৫ এর কথা উল্লেখ করে এটিকে “বিস্তারিত এবং বিপজ্জনক পরিকল্পনা” বলে অভিহিত করেছেন। এও বলেছেন ট্রাম্প যদি প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে ঢোকে তবে এটিকে বাস্তবায়ন করবে।

ট্রাম্প প্রজেক্ট – ২০২৫ এর সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থীদের তৈরি প্রজেক্ট-২০২৫ পরিকল্পনায় প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়ানোসহ বিভিন্ন উগ্র-ডানপন্থী নীতি গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে বিতর্ক

বিতর্কের মডারেটররা মার্কিন ভোটারদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু গর্ভপাত অধিকার তুলে ধরেন। এতে ট্রাম্পের অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানান। কারণ অতীতে এ বিষয়ে ট্রাম্পের মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল।

ডেমোক্রেটরা গর্ভধারণের ‘নবম মাসে’ গর্ভপাতের অনুমতি দিতে চায় দাবি করে ট্রাম্প তার বক্তব্য শুরু করেন।

ডেমোক্রেটরা এ বিষয়ে 'আমূল পরিবর্তন-বাদী’ উল্লেখ করে ট্রাম্প দাবি করেন হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে টিম ওয়ালজকে বেছে নিয়েছেন বিশেষ করে নবম মাসে গর্ভপাতের পক্ষে কথা বলার জন্য।

কিছু রাজ্যে জন্মানোর পর শিশুদের হত্যার বিষয়টি অনুমোদন করে ট্রাম্পের এই দাবির পর মডারেটর বলেন, “এই দেশে এমন কোন রাজ্য নেই যেখানে জন্মানোর পর শিশুকে হত্যা করা বৈধ”।

হ্যারিস উল্লেখ করেন ট্রাম্প দুই বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের তিনজন বিচারপতিকে নিয়োগ করেছিলেন যারা গর্ভপাতের জাতীয় অধিকারকে বাতিল করেছিল।

তিনি বলেন, বেশ কিছু রাজ্য “ট্রাম্পের গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞা যা ধর্ষণ এবং অজাচারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য” এমন বিষয়টি পাস করেছিল।

এই নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গর্ভপাতের কারণে একজন নারীর “পার্কিং লটে গাড়ির ভেতরে রক্তপাত হচ্ছে” কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিতেও ভীত কারণ তারা ভয় পায় যে তাদের জেলে যেতে হতে পারে।

“তাও আপনি মনে করেন জনগণ এটা চায়?”

“তারা এটা চায় না” এ কথা বলার সময় মিজ হ্যারিসের কণ্ঠ আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়ে।

মডারেটররা এ বিষয়ে হ্যারিসের প্রতিক্রিয়া জানতে চায়।

“ ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) রাজধানীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে একদল সহিংস জনতাকে উস্কে দিয়েছিলেন” বলেন মিজ হ্যারিস।

তিনি আরো যুক্ত করেন, “ সাবেক প্রেসিডেন্টকে শুধুমাত্র সেই কারণে অভিযুক্ত এবং অভিশংসনের মুখোমুখি হয়েছিলেন ”।

তবে এই ঘটনার দায় তৎকালীন কংগ্রেস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং ওয়াশিংটনের মেয়রের ওপরে চাপান ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গাজা-ইরায়েল যুদ্ধ

কীভাবে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনা করবেন এবং অচলাবস্থার নিরসন করবেন বিতর্কের একপর্যায়ে মিজ হ্যারিসকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়।

এই ইস্যুতে নিজের আগের কিছু মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে মিজ হ্যারিস বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে কিভাবে তারা এটা করে তাও গুরুত্বপূর্ণ।

“এই যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত,” মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটা অবিলম্বে শেষ হওয়া উচিত”।

মিজ হ্যারিস যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। “গাজা পুনর্নির্মাণের” জন্য একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের কথাও বলেন।

কিভাবে গাজা যুদ্ধ শেষ করবেন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া বেসামরিক নাগরিকদের ফেরানো হবে এ কথা ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়।

যদি তিনি এখনও রাষ্ট্রপতি থাকতেন তাহলে সংঘর্ষ “কখনই শুরু হত না” দাবি করে ট্রাম্প বক্তব্য দেয়া শুরু করেন।

মি. ট্রাম্প বলেন, “ হ্যারিস ইসরায়েলকে ঘৃণা করেন। তিনি যদি প্রেসিডেন্ট হন তাহলে আমি বিশ্বাস করি যে এখন থেকে দুই বছরের মধ্যে ইসরায়েলের অস্তিত্ব থাকবে না”।

ট্রাম্প তার সমাপনী বক্তব্যে বলেছেন, হ্যারিস পলিসির বিষয়ে যে তালিকা দিয়েছে এগুলো কিছুই না। কারণ ইতোমধ্যে প্রায় চার বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি এবং সেগুলি সবগুলোর কাজ শেষ করতে পারেননি।

তিনি বলেন, “আমরা একটি ব্যর্থ জাতি। আমরা এমন একটি জাতি যেটি গুরুতর অধঃপতনের মধ্যে রয়েছে। সারা বিশ্বে আমাদের উপহাস করা হচ্ছে”।

হ্যারিসকে তিনি 'দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ভাইস-প্রেসিডেন্ট' উল্লেখ করে বলেন, নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে।

বিতর্কের একপর্যায়ে ট্রাম্প হ্যারিসের বর্ণ নিয়েও উপহাস করেন।

হ্যারিস বিতর্কে তার বক্তব্য এই বলে শুরু করেন যে আমেরিকার জন্য তার এবং ট্রাম্পের দুটি 'খুব ভিন্ন' দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

নিজের করা আগের একটি লাইনের পুনরাবৃত্তি করে তিনি জানান ভবিষ্যতের দিকে তার দৃষ্টি এবং ট্রাম্প অতীতের দিকেই দৃষ্টি দিচ্ছেন।

“আমরা পেছনে ফিরে যাচ্ছি না” উল্লেখ করে মিজ হ্যারিস বলেন, “আমরা একটি নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারি”।