News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ জালিয়াতি নিয়ে সতর্ক করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গনতন্ত্র 2024-10-28, 3:07pm

rwerwqrqwrwq-c61ab307358d3e58a44b1cab36093d281730106459.jpg




‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বা ডিজিটাল গ্রেফতারি নামক এক নয়া জালিয়াতি সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে একের পর এক এই জাতীয় অপরাধমূলক ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসছে।

ভুক্তভুগীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতারকরা সরকারি কর্মকর্তা সেজে যোগাযোগ করেন।

পুলিশ বা আয়কর কর্মকর্তা সেজে ভিডিও কলের মাধ্যমে ভুক্তভুগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল প্রতারকেরা। তারপর ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উঠেছে এ কথা জানিয়ে তাদের কাছ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই নয়া পদ্ধতিতে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল।

পুলিশ বা আয়কর কর্মকর্তার ভুয়া পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করা প্রতারকরা ওই ব্যক্তিদের (ভুক্তভুগীদের) কোনও একটা নির্দিষ্ট জায়গায় (মূলত সেই ব্যক্তির বাড়িতেই) থাকার নির্দেশ দিয়েছিল। একইসঙ্গে বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।

তার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করেছেন, ভারতীয় আইনে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বলে কিছুই নেই। শুধু তাই নয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কখনওই ফোন বা ভিডিও কলের মাধ্যমে নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে না বা তাদের ব্যক্তিগত বিবরণও চাইবে না।

দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “প্রতারকরা পুলিশ, সিবিআই কর্তা, নারকোটিক্স বিভাগের (নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো বা মাদক সংক্রান্ত অপরাধ দমন শাখা) কর্মকর্তা এবং কখনও কখনও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কর্মকর্তার ছদ্মবেশ ধারণ করে যোগাযোগ করে।”

তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে কোনও স্টুডিওতেই পুলিশ স্টেশন, আয়কর অফিস বা তদন্ত সংস্থার দফতরের মতো ‘সেট আপ’ তৈরি করে প্রতারকরা।

তারপর ফোনে ভিডিওকল মারফত নিশানায় থাকা ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ফোনের পর্দায় এক ঝলক দেখে ওই স্টুডিওর ‘সেটআপ’ কোনও সরকারি দফতরের মতোই মনে হতে পারে।

পুরো বিষয়টাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে প্রতারকেরা সংশ্লিষ্ট দফতরের (যে দফতরের কর্মকর্তা সেজে ভুক্তভুগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে) কর্মকর্তাদের মতোই উর্দি পরেন।

জাল পরিচয়পত্র বানিয়ে সেটা টার্গেট করা ব্যক্তির সামনে ফোনের পর্দায় পেশও করেন।

প্রকাশ্যে আসা অভিযোগগুলো থেকে জানা গিয়েছে প্রতারকেরা মূলত কয়েকটা বিষয় নিয়েই ভুক্তভুগীদের নিশানা করেন।

ফোনের অপর প্রান্তে থাকা প্রতারকেরা নিশানায় থাকা ব্যক্তিদের জানান তারা কোনও আইন বহির্ভূত কোনও পণ্য পার্সেল হিসাবে পাঠিয়েছেন।

তাদের নামে কোনও বেআইনি পণ্য পার্সেলে পাঠানো হয়েছে। কোনও সময় আবার বলা হয় যে ভুক্তভুগীদের মোবাইল ফোন কোনও আইন বহির্ভূত কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার ‘ডিপ ফেক ভিডিও’ ব্যবহার করা হয়। সেই ভুয়ো অভিযোগের ভিত্তিতে ‘ফলস অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট’ বা ভুয়ো গ্রেফতারি পরওয়ানা দেখানও হয় ভুক্তভুগীদের।

সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ নামে এই প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে।

গত অগাস্ট মাসে ব্যাঙ্গালোর পুলিশ এমনই এক ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই ব্যক্তিরা এক ভুক্তভুগীকে প্রতারণা করে তার কাছ থেকে ভারতীয় মূল্যের দুই কোটি টাকা আদায় করেছে বলে অভিযোগ।

যে ব্যক্তি পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতারকেরা তাকে বলেছিলেন তার ঠিকানায় পাঠানো একটা পার্সেল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

ওই ব্যক্তিকে ফোন করে দাবি করা হয়েছিল পার্সেলে ‘এমডিএমএ’ নামক মাদক রয়েছে এবং পুলিশ তা বাজেয়াপ্তও করেছে।

এরপরই হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে তাকে প্রতারকরা হুমকি দেয়। ওই ব্যক্তিকে বলা হয়, টাকা না দিলে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার বিরুদ্ধে।

চলতি মাসেই মালা পার্বতী নামে দক্ষিণ ভারতের একজন অভিনেত্রী এই জালিয়াতির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রধানত মালায়ালাম ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুম্বাই পুলিশের কর্মকর্তার ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ওই অভিনেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। প্রতারকরা তাকে নিজের ভুয়ো পরিচয়পত্রও দেখিয়েছিলেন।

অভিনেত্রী মালা পার্বতীকে বলা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে তাইওয়ানে মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ‘ভার্চুয়াল গ্রেফতার’ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

অভিনেত্রী দাবি করেছেন, কোনও রকম আর্থিক লেনদেনের আগেই তিনি বুঝতে পারেন যে পুরো বিষয়টাই আসলে প্রতারণার একটা অংশ।

এই জাতীয় ঘটনা থেকে সাবধান করতেই সাম্প্রতিক অনুষ্ঠানে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ সম্পর্কে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সতর্ক করেছেন দেশবাসীকে।

জাতির উদ্দেশ্যে তার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী সুরক্ষিত থাকার জন্য সাধারণ মানুষকে তিনটে পদক্ষেপ অনুসরণ করার কথা। একইসঙ্গে কোনও পরিস্থিতিতেই যাতে কেউ আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন, সে কথাও বলেছেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “প্রথমত, শান্ত থাকুন এবং আতঙ্কিত হবেন না। সম্ভব হলে রেকর্ড করুন বা স্ক্রিন (মোবাইল ফোনের স্ক্রিন) রেকর্ডিং করুন," বলেন প্রধানমন্ত্রী।

“দ্বিতীয়ত, মনে রাখবেন, কোনও সরকারি সংস্থা অনলাইনে আপনাকে হুমকি দেবে না।“

“তৃতীয়ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন। ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইনে ফোন করে এবং এই অপরাধ সম্পর্কে পুলিশকেও জানিয়ে দিন।”