৬ জুলাই সিডনির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরতলির পিট টাউনে হকসবারি নদীর ধারে উপচে পড়া জলরাশির দিকে তাকিয়ে বাসিন্দারা। ছবি: এএফপি
অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ঝুঁকিতে পড়বেন বলে সতর্ক করেছে দেশটির প্রথম ন্যাশনাল ক্লাইমেট রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অস্ট্রেলিয়ায় ঘন ঘন ও তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন—বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, দাবদাহ, খরা ও দাবানল আরও বেড়ে যাবে। খবর বিবিসির।
অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী ক্রিস বোয়েন বলেন, “অস্ট্রেলিয়ানরা ইতোমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ভোগ করছে। তবে এখন আমরা যতটা তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ করতে পারব, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ততটাই ভয়াবহ প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে।”
প্রতিবেদনটি তিনটি বৈশ্বিক উষ্ণতা পরিস্থিতি (১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি, ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ও ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) বিবেচনায় নেয়।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার তাপমাত্রা ইতোমধ্যেই ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়ে গেছে।
যদি উষ্ণতা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ায়, তবে সিডনিতে তাপপ্রবাহজনিত মৃত্যু ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে এবং মেলবোর্নে তা তিনগুণ হতে পারে।
২০৫০ সালের মধ্যে উপকূলীয় "অতি ঝুঁকিপূর্ণ" এলাকায় বসবাসকারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে এবং বর্তমান জনসংখ্যা স্থির থাকলে ঝুঁকিতে পড়বেন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী— তীব্র তাপপ্রবাহে মৃত্যুহার বাড়বে, ভয়াবহ বন্যা ও অগ্নিকাণ্ডে পানির মান নষ্ট হবে, সম্পত্তির মূল্য হ্রাস পাবে প্রায় ৬১১ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৪০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
বিশেষভাবে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চল, দূরবর্তী অঞ্চল ও বড় শহরের বাইরের উপকণ্ঠ এই ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রতিবেদনটি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, জীববৈচিত্র্য, কৃষি ও জরুরি সেবা খাতে ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করবে।
মন্ত্রী বোয়েন আরও বলেন, “এই প্রতিবেদন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে গোটা দেশ ঝুঁকিতে আছে। পদক্ষেপ না নেওয়ার খরচ সবসময় পদক্ষেপ নেওয়ার খরচের চেয়ে বেশি হবে।”