News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

'গ্যাসের অপচয় ও চুরিতে বছরে হাতছাড়া হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার'

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক জ্বালানী 2024-09-04, 7:32pm

5734101268071c1992d13dc8bdf4256a46ffebfb7f8b1857-797cb32f2085f7150eba7d3e4fb920d81725456769.jpg




দেশের ১০ শতাংশ গ্যাস অপচয় এবং চুরি হয়েছে অভিযোগ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের দিকে যাওয়ায় কথা বলে বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অনেক অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। সে সুযোগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেও যথেষ্ট অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এসব কারণে বছরে সরকারের হাতছাড়া হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার।

দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট থেকে দ্রুত উত্তরণ সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতি দেশের জ্বালানিনির্ভর শিল্পগুলোকে আরও দীর্ঘসময় ভোগাবে বলে জানান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এমন অভিমত প্রকাশ করেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের দিকে যাওয়ায় কথা বলে বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অনেক অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। সে সুযোগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেও যথেষ্ট অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। ফলে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

দেশের ১০ শতাংশ গ্যাস অপচয় এবং চুরি হচ্ছে অভিযোগ করে ইজাজ বলেন, এসব কারণে বছরে সরকারের হাতছাড়া হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার। জ্বালানি খাতকে আমদানিনির্ভর করা হয়েছে। নতুন গ্যাস না পেলে দশ বছরের মধ্যে দেশের মজুত শেষ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এদেশে গ্যাসের সিস্টেম লস ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এটি অসম্ভব। এ লসের কথা বলে গ্যাস চুরি হচ্ছে। যেভাবে লসের কথা বলা হয়, বাস্তবে সেটা অর্ধেকও হবে না। এছাড়া টেকনিক্যাল লস রয়েছে। এসব কমিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা সম্ভব হলে এখনকার সংকট হয়তো খুব স্বাভাবিকভাবে উতরে যাওয়া যেতো।

ড. ইজাজ হোসেন আরও বলেন, সিস্টেম লসের বিষয়টি একটি শুভংকরের ফাঁকি। গ্যাসের সিস্টেম লসটা পুরোপুরি চুরি, বিগত সরকার নিজেও সেটা জানতো। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, আমাদের জাতীয় সম্পদ এভাবে চুরি হয়ে গেছে, কেউ কিছু বলেনি। আর এখন তো আমরা অনেকটা সোনার দামে এলএনজি কিনে আনছি। জাতীয় স্বার্থে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে গ্যাসের এই চুরি বন্ধ করা উচিত ছিল, কিন্তু রাজনৈতিক মদতে সেটা আরও বেশি হয়েছে। এই চুরি হওয়া গ্যাস দিয়ে কমপক্ষে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হতো।

নতুন সরকারকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে পরিকল্পনাহীনতার বড় বড় দৃষ্টান্ত রয়েছে। গৃহস্থালিতে গ্যাস বিতরণ বাড়িয়ে অনিয়ম হয়েছে। এ খাতে ১১ শতাংশ গ্যাসের বড় অংশ চুরি হচ্ছে। এসব নতুন সরকারকে বন্ধ করতে হবে।

আইবিএফবির সভাপতি হুমায়ুন রশিদ বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়বে। শিল্পক্ষেত্রে তৈরি হবে হতাশা। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে আইবিএফবি’র সমর্থন অব্যাহত থাকবে। জ্বালানি সংকটে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্ব দেয়া উচিত।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম বলেন, বিগত সরকারের সময় সব খাতে ‘তথ্য সন্ত্রাস’ হয়েছে, জ্বালানিতে তা আরও বেশি হয়েছে। সরকার একটি উন্নয়নের টার্গেট নিয়েছে, কিন্তু কোনো পরিকল্পনা ছাড়া ওই অবকাঠামো করা হয়েছে। তথ্যে উন্নয়ন দেখানো হয়েছে, যা বাস্তব উন্নয়নে কাজে আসেনি।

তিনি বলেন, সরকারের কিছু বিষয় জ্বালানি খাতকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। টার্গেট করা হয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চতকল্পে উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার, কিন্তু সেটা ধরে-বেঁধে করা হয়েছে। উৎপাদন অর্ধেক হলেও কাগজে-কলমে শতভাগ দেখানো হয়েছে। সরকার সুবিধা নিয়েছে এ খাত থেকে। সেজন্য এ খাতকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। কিন্তু উন্নত কোনো দেশের সরকার এ ধরনের খাত নিয়ন্ত্রণে রাখে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ে কারিগরি সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়েছে রাজনৈতিকভাবে।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানিবিষয়ক ম্যাগাজিন ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’-এর সম্পাদক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল ও বাংলাদেশ সোলার রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল আক্তার প্রমুখ। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।