News update
  • 3 killed, 10 injured in Pabna Bus-truck collision     |     
  • UN Chief Appalled as Gaza Crisis Deepens, Aid Blocked     |     
  • Dhaka’s air quality ‘moderate’ also on Friday morning     |     
  • Russia 1st country to recognize Taliban rule in Afghanistan     |     
  • New report seeks reforms for free, pluralistic media in BD     |     

অনলাইনে ইনকাম ট্যাক্স বা আয়কর রিটার্ন দেওয়ার পদ্ধতি কী?

বিবিসি বাংলা ট্যাক্স 2024-10-31, 8:13am

tryrtyrtuyu758-52f573adfad91ecb67e6af3a2e6a88d11730340828.jpg




বাংলাদেশে আগে থেকেই অনলাইনে আয়কর দেওয়ার সুযোগ থাকলেও এবারই প্রথমবারের মতো কয়েকটি এলাকা ও খাতের জন্য অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

গত ২২শে অক্টোবর এ সংক্রান্ত এক বিশেষ আদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

এই আদেশের ফলে এখন থেকে ঢাকার দুটি এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আয়কর সার্কেলগুলোর সব সরকারি কর্মচারী এবং দেশের সকল তফসিলি ব্যাংকের কর্মীদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমেই তাদের রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

এছাড়া, টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মীদেরও বাধ্যতামূলকভাবে আসতে হবে এই প্রক্রিয়ার অধীনে।

সোমবার এক ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সারাদেশের ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের “ঘরে বসেই আয়কর জমা দিয়ে” রিটার্ন দাখিল করতে আহ্বান জানান।

নিজে নিজে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে করদাতাদের বেশ কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে বলছেন আয়কর আইনজীবীরা।

ই-রিটার্ন হোমপেজ

অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে কী লাগবে?

সনাতন পদ্ধতিতে অর্থাৎ, অফলাইনে কর দেওয়ার সময় বেশ কিছু কাগজপত্র সরবরাহ করতে হয়। যেমন- ইটিআইএন, জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি, আগের রিটার্নের কপি ইত্যাদি।

তবে, ই-রিটার্ন দিতে করদাতাকে কোনো কাগজপত্র জমা বা আপলোড করতে হয় না। শুধু প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দাখিল করলেই হয়।

তবে, “সকল কাগজপত্র সংগ্রহে থাকা উচিত, কর অফিস থেকে যাচাই করতে চাইলে যেন দেখানো যায়,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ঢাকার একজন আয়কর আইনজীবী মো. ইসহাক।

তাছাড়া, তাহলে তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে ভুল হওয়ার ঝুঁকি কমবে বলেও মনে করেন তিনি।

অনলাইন প্রক্রিয়া

অনলাইন রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হয়। এর জন্য প্রয়োজন ট্যাক্সপেয়ার ইনডেক্স নাম্বার বা টিআইএন এবং ‘বায়োমেট্রিক ভেরিফাইড’ মোবাইল ফোন নম্বর।

আইন অনুযায়ী, টিআইএন থাকলেই আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। সেটি না করলে জরিমানা করার বিধান রয়েছে।

তবে, রিটার্ন দাখিল করলেই যে আয়কর দিতে হবে তা নয়। কারো আয় যদি করযোগ্য না হয় তার কর দেবার প্রয়োজন নেই, শুধু রিটার্ন জমা দিলেই হবে।

নিবন্ধনের পর সাইন ইন করে ড্যাশবোর্ডের 'সাবমিশন' অপশনে যেতে হবে। এই অপশনে ‘রেগুলার ই-রিটার্ন’ ও ‘সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন’ ক্যাটাগরি বেছে নিতে হয়।

করযোগ্য আয় পাঁচ লাখ টাকার বেশি না হওয়া, গণকর্মচারী না হওয়ার মতো সাতটি শর্ত মিলে গেলে সিঙ্গেল পেজ বা এক পাতার রিটার্ন পূরণ করার প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে।

সেখান থেকে 'অ্যাসেসমেন্ট ইনফরমেশন'-এ গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে।

‘আয়ের সময় এবং উৎস উল্লেখ করতে হবে এখানে,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন আয়কর আইনজীবী মো. ইসহাক। সেই সাথে যত ধরনের খাত থেকে আয় হয় সেগুলোও উল্লেখ করতে হবে।

এরপর ধাপে ধাপে পূরণ করতে হবে আয়ের বিবরণ, কর রেয়াতের তথ্য, ব্যয়, সম্পদ ও দায়, কর ও পরিশোধ।

আয়ের বিবরণ অংশে আয়ের ধরন নির্ধারণ করতে হবে।

যেমন - চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সরকারি না বেসরকারি, প্রতিষ্ঠানের নাম, বেতনকাঠামো বাছাই করা।

কর রেয়াত পাওয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের তথ্য প্রদান করতে হবে। সেজন্য বেছে নিতে হবে ইন্সুরেন্স, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র বা অন্যান্য বিনিয়োগের সংশ্লিষ্ট খাত।

অন্যান্য ধাপগুলোও একইভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পার করার পর ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফর্ম প্রস্তুত হবে।

“আগে এই কাজগুলো পেশাদার ব্যক্তিদের দিয়ে করানো হতো বলে অনেকের কাছেই, বিস্তারিত তথ্য দেয়ার বিষয়টি নতুন বলে গণ্য হবে,” বলছিলেন ইনকাম ট্যাক্স কনসালটেন্ট ও আইনজীবী তারিক রিজভী।

“তাই, প্রথমবার যারা অনলাইনে সাবমিট করবেন তাদের হয় এক্সপার্ট, না হয় কোনো অভিজ্ঞ ট্যাক্সপেয়ারকে দেখিয়ে নেয়া উচিত,” যোগ করেন তিনি।

রিটার্ন ফর্ম তৈরির পর সেটি ডাউনলোড করে অনলাইনেই সাবমিট করা যাবে।

যেসব বিষয় লক্ষ রাখতে হবে

ওয়েবসাইটে একবারে সব তথ্য পূরণ করার বাধ্যবাধকতা নেই। ড্রাফট হিসেবে রেখে পরবর্তীতে সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে।

আয়কর আইনজীবী মো. ইসহাক বলেন, পেপারওয়ার্ক রেডি করে ডেটা এন্ট্রি করা উচিত।

"কারণ একটি তথ্যের গড়মিল হলেও তার জন্য পরে করদাতাকে জবাবদিহি করতে হবে," বলেন মি. ইসহাক।

আইনজীবীদের কাছ থেকে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র সম্পর্কেও একটি ধারণা পাওয়া যায়।

যেমন- চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বেতন বাবদ উপার্জনের নথি, ভাড়ার রসিদ ও চুক্তিপত্র, স্থানীয় পর্যায়ে করের রসিদ, সম্পদ ক্রয়-বিক্রয়ের দলিল, উৎসে কর কর্তনের সনদ, ব্যাংক হিসাবের বিবরণ ইত্যাদি।

রিটার্ন দাখিল করার সময় সম্পদের স্বচ্ছ বিবরণ থাকা জরুরি। অন্যথায়, জটিলতা তৈরি হতে পারে।

আইনজীবী তারিক রিজভীর মতে, আয়কর রিটার্নে ব্যক্তিগত আয় টাকা থেকে শুরু করে স্থাবর-অস্থাবর সব ধরনের সম্পদের তথ্যই সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে।

"এক রিটার্নে কোনো একটি সম্পদের তথ্য উল্লেখ না থাকলে সেটি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত হিসেবে বিবেচিত হয়, ফলে পরবর্তীতে রিটার্নে সেটি অন্তর্ভুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে," বলেন তিনি।

সেক্ষেত্রে আইনি প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে।

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আয়ের বিপরীতে ব্যয়ের অঙ্কে সংগতি থাকা উচিত।

"কারো আয় হিসেবে যে অঙ্কে উল্লেখ করা হয়, খরচের জায়গায়ও তার প্রতিফলন থাকা উচিত।"

জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে আয়ের সামঞ্জস্য না থাকলে আইনগত জটিলতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন আইনজীবীরা।