ঢাকা বিভাগে অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে জেল জরিমানার পাশাপাশি উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও বেশিরভাগই ফের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, মাটির তৈরি ইটের তুলনায় ব্লক ইটে ভ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকায় পুষিয়ে উঠতে পারছেন না উদ্যোক্তারা।
সম্প্রতি সময় সংবাদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ সব তথ্য।
ফসলি জমির মাটি কেটে তৈরি হচ্ছে পোড়া মাটির ইট। আর এসব ইট তৈরির কারখানার কালো ধোঁয়ায় দূষণের পাশাপাশি ফুসফুসের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুসহ খেটে খাওয়া মানুষেরা। ফসলি জমি ও পরিবেশ রক্ষায় ২০১৯ সালে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি হলেও ভ্যাটসহ নানা জটিলতায় তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। ঢাকা বিভাগে অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে জেল জরিমানার পাশাপাশি উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও বেশিরভাগই ফের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, মাটির তৈরি ইটের তুলনায় ব্লক ইটে ভ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকায় পুষিয়ে উঠতে পারছেন না উদ্যোক্তারা।
ফসলি জমি আর জনবসতির পাশের ইটভাটা থেকে নির্গত হচ্ছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া। এসব ভাটার কাঁচামালও সংগ্রহ করা হচ্ছে আশপাশের ফসলি জমি নষ্ট করে। যে কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালীরা। আর ভুক্তভোগী কৃষকসহ শিশু-প্রবীণরা।
ঢাকা বিভাগে গত একবছরে ৬০৪টি ভাটা ধ্বংস করেছে পরিবেশ অধিদফতর। জরিমানা আদায় করা হয়েছে মালিকদের কাছে থেকে। স্থানীয়রা জানান, এসব ভাটার অধিকাংশই ফের উৎপাদন শুরু করেছে। চলতি বছরের মধ্যে পোড়া ইট তৈরিতে কৃষি জমির মাটির ব্যবহার কমাতে বিকল্প হিসেবে সরকারি ভবন নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কারে ব্লক ইট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে ২০১৯ সালে প্রজ্ঞাপন জারি করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবছর নির্দিষ্ট হারে ব্লকের ব্যবহার বাড়ানোর কথা।
খোদ পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক আব্দুল মোহালিব বলেন, এখনও সে নির্দেশনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। চলতি বছরের শেষের দিকে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহারে সফলতা মিলবে বলে আশাবাদি তিনি।
ব্লক ইট তৈরিতে মাটির পরিবর্তে বালু, কংক্রিট, পানি, সিমেন্ট আর ক্যামিকেল ব্যবহার হওয়ায় মাটির ইটের তুলনায় তা অনেক মজবুত হয়। পোড়ানোর প্রয়োজন না হওয়ায় এটি পরিবেশবান্ধবও। তবে, মাটির তৈরি ইটের তুলনায় ব্লক ইটে ভ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকায় পুষিয়ে উঠতে পারছেন না উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশ কংক্রিট ব্লক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সভাপতি লে. কর্নেল সাখাওয়াত হোসেন বলেন,
মানুষের মধ্যে ব্লক ইট সম্পর্কে একটা ভুল ধারনা রয়েছে যে, আমাদের বাড়িটা কেমন হবে এ ইটের মতো, তেমন কিছু পেয়েছি কিনা। এ ধারনাটা বৈজ্ঞানিকভাবে সারা পৃথিবীতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। পৃথিবীর বেশিরভাগ জায়গাতে পোড়া মাটির ইট ব্যবহার করে না। আমাদের ভ্যাট দিতে হচ্ছে এক টাকা ৮০ পয়সা। তার ভ্যাট দিতে হয় ৮ পয়সা। আমাদের ভ্যাট হয়ে যাচ্ছে ২৩গুণ বেশি। এ কারণে কোনো ইটভাটার মালিক ব্লক ইট তৈরিতে আসছেন না।
সারাদেশে ৫ শতাধিক পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট তৈরির কারখানা আছে, এর মধ্যে ঢাকায় আছে আড়াই শতাধিক।