News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

শিশুদের প্রতি নবিজির (সা.) ভালোবাসা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ধর্মবিশ্বাস 2024-09-16, 8:34am

img_20240916_083528-e3f1f8c889d715cd2793a81ed9931c361726454154.jpg




প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময়ে পৃথিবীতে আগমন করেন। তার আগমনে তৎকালীন সমাজ থেকে দূর হয়েছিল সকল পাপাচার, অন্ধকার এবং কুসংস্কার। রাসুল (সা.) শিশু-কিশোরদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। যেকোনো শিশুকে তিনি নিজের সন্তানের ন্যায় আদর-সোহাগ করতেন। শিশুদের কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন না করে তাদের সঙ্গে সব সময় ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

রাসুল (সা.) যখন নামাজে সেজদা যেতেন নাতি হাসান-হোসেন তার পিঠে চড়ে বসতেন। যতক্ষণ তারা পিঠ থেকে না নামতে ততক্ষণ সেজদা থেকে উঠতেন না তিনি। এমনকি মেয়ে ফাতেমার ঘরে (রাসুল সা.) গেলে হাসান-হোসেন নবিজির পীঠে চড়ে ঘোড়া ঘোড়া খেলতে আবদার করলে সানন্দে তাদের পীঠে চড়িয়ে আবদার রক্ষা করতেন।

এক যুদ্ধে কয়েকজন শিশু মারা যায়। তারা ছিল শত্রুপক্ষের। এ খবর এসে পৌঁছলে রাসুল (সা.)-এর প্রাণ কেঁদে ওঠে। তিনি খুবই আফসোস এবং দুঃখ করতে থাকেন। এ অবস্থা দেখে একজন বললেন, ‘হে আল্লাহর নবি। আপনি যাদের জন্য এত মর্মবেদনা ভোগ করছেন তারা অমুসলিমদের সন্তান।

রাসুল (সা.) তার কথায় অসন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, ‘এখন থেকে সাবধান হও। কখনও শিশুদের হত্যা করবে না। প্রতিটি শিশুই নিষ্পাপ ফুলের মতো।’

একদিন নবি (সা.) নাতি হাসানকে চুমু খাচ্ছিলেন তা দেখে আকবা বিন হারেস নামে এক সাহাবি নবিজিকে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ আপনি শিশুদের দেখে এত আনন্দিত হন এবং আদর স্নেহ করেন তারাও আপনার আদরে আপ্লুত হয়। আমার তো অনেক সন্তান কিন্তু তাদের আপনার মতো স্নেহ করতে পারি না। তখন নবিজি বলেন, তোমার হৃদয়ে স্নেহ মমতা না থাকলে আমার কী করার আছে?

একদিন এক শিশুকে তিনি জড়িয়ে ধরে বললেন, এই শিশুরাই তো আল্লাহর বাগানের ফুল। তিনি কখনও শিশুকে বিকৃত নামে ডাকতেন না। তিনি তাদের সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখতেন এবং মিষ্টি স্বরে সে নাম ধরে ডাকতেন। নবিজি শিশুদের যেমন আদর করতেন, তেমনি আবার তাদের সঙ্গে রসিকতাও করতেন। একবার সাহাবি আনাস-এর ছোট এক ভাইয়ের একটি পাখি মারা যায়। এতে তার মন খারাপ হয়। নবিজি তখন তাকে আদর করে কাছে ডেকে নিলেন।

তিনি বললেন ‘ইয়া আবা উমায়েরু/ মা কা আলান নুগায়রু? হে আবু উমায়ের, তোমার পাখির ছানাটির কী হল? তখন নবিজির মুখে ছন্দ ও সুর শুনে হেসে ফেলল।

নবির কাছে শিশুদের কোনো জাত-পাত মুসলিম-অমুসলিম কোনো বিভেদ ছিল না। সব শিশুর প্রতি তার সমান স্নেহবোধ ছিল। নবিজি বলেন ‘যে শিশুদের স্নেহ করে না আর বড়দের সম্মান করে না সে আমার উম্মত নয়’। তিনি বলেন ‘যে শিশুদের প্রতি দয়া করে না, তাকেও দয়া করা হয় না।’

দশ বছরের বালক জায়েদ ইবনুল হারেসাকে পালকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করে নিজ পরিবারভুক্ত করে রাখেন নবি (সা.)। একদা যায়েদকে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে লাকড়ি করার কুড়াল জাতীয় কিছু আনার জন্য পাঠিয়ে তিনি অপেক্ষা করছেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পার হলে যায়েদ ফিরছে না দেখে তিনি নিজেই সেখানে গিয়ে দেখেন যায়েদ সমবয়সীদের খেলা দেখছে আর মজা করছে। তিনি মুচকি হেসে যায়েদকে খেলা দেখতে সম্মতি দিয়ে নিজেই কুড়াল নিয়ে আসেন।

পিতা যখন জানতে পারেন যায়েদ মক্কায় নবিজির পরিবারভুক্ত হয়ে আছেন, তখন তিনি মক্কা এসে তাকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে আসেন। নবিজি তার পিতার আবদার শুনে বলেন, আমার অধীনে আসার পরই যায়েদকে মুক্ত করে পালকপুত্র হিসেবে পরিবারভুক্ত করেছি। সে যদি আপনার সঙ্গে স্বেচ্ছায় চলে যেতে চায় আমার কোনো আপত্তি নেই। এ কথা শোনার পর যায়েদ কান্না শুরু করে বাবাকে বলে আব্বু আপনি চলে যান। মাকে গিয়ে আমার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলবেন আমি ভালো আছি। জন্মদাতা হিসেবে আমাকে নিয়ে যাওয়ার অধিকার আছে কিন্তু আমি নবিজির পরিবারে যে স্নেহমমতায় আছি তা ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছে না।

মদিনায় এক ঈদের দিন নবি দেখেন পথে একটি শিশু কাঁদছে। কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন সে পিতৃহীন বালক। সংসারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। তাই তার মা তাকে নতুন কাপড় দিতে পারছে না অথচ তার সমবয়সীরা রঙবেরঙের জামা-কাপড়ে সজ্জিত হয়ে ঈদগাহে যাচ্ছে। এজন্য মন খারাপ করে কান্না করছে। পরে নবিজি (সা.) তার মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে ঈদগাহে যাওয়া বাদ দিয়ে ঘরে ফিরে আয়েশাকে ডেকে বলেন, এ এতিম বালককে তোমার সন্তান হিসেবে গ্রহণ কর এবং নতুন জামাকাপড় পরিয়ে দাও। আমি তাকে নিয়ে ঈদগাহে যাব। সে যেন মনে না করে পিতা না থাকায় ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আরটিভি নিউজ।