News update
  • Dhaka’s air unhealthy for sensitive groups Saturday morning     |     
  • Surge in substandard products in BD targeting Eid market     |     
  • Elderly Rohingya killed, two hurt in stampede at iftar crowd     |     
  • Conflict, hunger, poverty impede children's early growth: Türk     |     
  • Dhaka’s air quality ‘unhealthy’ Friday morning     |     

হরতাল-অবরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাড়ছে আতঙ্ক

গ্রীণওয়াচ ডেক্স পরীক্ষা 2023-11-20, 8:05am

resize-350x230x0x0-image-248630-1700429676-3c05e636cbd0e2e7c01b3108ee892a2a1700445921.jpg




আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে চলছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি। সপ্তাহের পাঁচ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা চললেও কিছুদিন ধরে হরতাল-অবরোধের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হার ছিল খুবই কম।

রোববার থেকে শুরু হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল। এরপরেও যদি আবার নতুন করে হরতাল বা অবরোধের মতো কর্মসূচি আসে তাহলে ক্লাস পরীক্ষা আরও পিছিয়ে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।

হরতাল-অবরোধ চলাকালীন বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। ফলে সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহনসহ গণপরিবহণের সংখ্যা থাকে হাতে অনেক কম। এমন বাস্তবতায় স্কুল-কলেজের পরীক্ষা ও ক্লাস থাকায় ঝুঁকি নিয়ে তাদের ঘর থেকে বের হতে হয়। অনেক অভিভাবক ঝুঁকি নিয়ে তাদের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে চান না।

তাই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে জানানো হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী হরতাল কিংবা অবরোধে স্কুলে আসতে পারছে না, তাদের স্কুলে অনুপস্থিত দেখানো যাবে না। বরং ক্লাসে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করাতে নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।

হরতালে স্কুল-কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে উপস্থিত হতে হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না থাকলেও রুটিনমাফিক স্কুল-কলেজে আসা-যাওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে পুরোদমে শুরু হয়েছে ক্লাস। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষায় মোটামোটি উপস্থিতি থাকলেও ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেশ কম। যাদের বাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি, তারা যেতে পারছে। কিন্তু যাদের গণপরিবহণ বা ব্যক্তিগত যানবাহনে যেতে হয়, তাদের অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে যেতে চায় না। কিন্তু পরীক্ষা থাকায় অনেক অভিভাবক বাধ্য হচ্ছেন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে।

এদিকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করার সময়সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাধ্য হয়ে নির্ধারিত সময়ে ক্লাস ও পরীক্ষা শেষ করতে হচ্ছে। হরতাল-অবরোধের কারণে নির্ধারিত পরীক্ষাসূচি পরিবর্তন করে ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারও ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছে রাজধানীর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আবার অনেকেই নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী হরতালের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছে।

শিক্ষা বিভাগ বলছে, আগের নির্দেশনার আলোকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু রাখতে হবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে চলতি শিক্ষাবর্ষের সব কার্যক্রম শেষ করতে হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের।

অভিভাবকরা বলছেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা ক্রমেই বাড়ছে। হরতাল অবরোধে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে সন্তানদের ক্লাসে নিয়ে যেতে হচ্ছে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণ তাদের দু’চিন্তায় কাটাতে হচ্ছে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বেইলি রোড শাখার ক্লাস ওয়ানের এক ছাত্রীর মা কানিজ হুমায়রা বলেন, বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ক্লাস ওয়ানের একটি পরীক্ষা হয়েছে। আরেকটা হওয়ার কথা ছিল সোমবার (২০ নভেম্বর)। কিন্তু হরতালের কারণে সেই পরীক্ষা তিন দিন এগিয়ে নেয়া হয়েছে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর)। এতে তো বাচ্চাদের মানসিক প্রেসার পড়ে।

আরেক অভিভাবক আবেদা রহমান বলেন, বাচ্চাদের জন্য নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া যারা নতুন স্কুলে বাচ্চাদের ভর্তি করাতে চান, তারা অনলাইনসহ অফলাইনে স্কুলের খোঁজ খবর নিতে চান। হরতাল অবরোধ আমাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে, চিন্তার মধ্যে ফেলেছে। আমরা বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আতঙ্কে থাকি। মনের ভেতর ভয় কাজ করে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকাসহ দেশের সরকারি স্কুলগুলোয় হরতালেও পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। নটর ডেম কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ রাজধানীর বড় আরও কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও রুটিন মেনে রোববার-সোমবার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শুক্র ও শনিবার বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

হরতাল-অবরোধের কারণে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের বার্ষিক পরীক্ষা ও ক্লাস শুক্র-শনিবার বন্ধের দিনই অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এএনএম শামসুল আলম খান বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পান। পরীক্ষা গ্রহণে সমস্যার কারণে পরীক্ষাসূচি পরিবর্তন করে শুক্র ও শনিবার নেওয়া হচ্ছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ করতে হবে। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আতঙ্কের বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি বলেও জানান তিনি। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।