News update
  • UN Calls for Calm in Bangladesh After Protest Leader’s Killing     |     
  • DMP issues 7 traffic directives for Osman Hadi’s Janaza     |     
  • Vested quarter fuelling chaos to impose new fascism: Fakhrul     |     
  • Hadi’s namaz-e-janaza at 2:30pm Saturday     |     
  • Jashore’s Gadkhali blooms with hope; flowers may fetch Tk4 bn      |     

বিদেশি গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে চীনের অর্ধ-বার্ষিক অর্থনীতি

ওয়াং হাইমান ঊর্মি বানিজ্য 2022-07-29, 6:42pm




সব ধরনের ধাক্কা সত্ত্বেও, সম্প্রতি প্রকাশিত চীনের অর্থনীতির অর্ধ-বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অনেক ইতিবাচক সংকেত দিয়েছে: উত্পাদন ও সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে; ভোগের পরিমাণ বাড়ছে; পণ্যের দাম সামষ্টিকভাবে যুক্তিসঙ্গত সীমার মধ্যে স্থিতিশীল থাকছে; বৈদেশিক বাণিজ্যের আমদানি ও রফতানিতে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে; এবং  বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রবণতাও অব্যাহত আছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে চীনের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্রতিকূলতার মুখে চীনা অর্থনীতির স্থিতিশীল উন্নয়নের দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এসব মিডিয়া মনে করে, চীন এখনও বিশ্বের অন্যতম নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি।  

ইউএস কনজিউমার নিউজ অ্যান্ড বিজনেস চ্যানেল (সিএনবিসি) ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব ঝেড়ে ফেলে চীনের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চীনের ভোগ্যপণ্যের মোট খুচরা বিক্রয়ের পরিমাণ গত জুন মাসে ৩.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগের মাসে  হ্রাস পেয়েছিল। এ বছরের প্রথমার্ধে চীনের স্থায়ী-সম্পদে বিনিয়োগও প্রত্যাশিত লক্ষ্য ছাড়িয়েছে। 

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য-উপাত্ত ‘কঠিন জয়’ অর্জনের প্রতীক। একই সময়ে, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর মুখপাত্র ফু লিংহুইকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনের অর্থনৈতিক সূচকের নিম্নগামী প্রবণতা বন্ধ হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব ‘স্বল্পমেয়াদী’ এবং চীনের মুদ্রাস্ফীতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের তুলনায়  অনেক কম।

‘স্প্যানিশ ইকোনমিস্ট’ ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রত্যাশিত লক্ষ্যের চেয়ে ভালো। জটিল ও গুরুতর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির   পটভূমিতে, চীন ইতোমধ্যেই বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থলে’ পরিণত হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়, গত মে থেকে চীনা স্টক ১৫ শতাংশ বেড়েছে, তবে মার্কিন এস অ্যান্ড পি ৫০০ ইনডেক্স প্রায় ৪ শতাংশ কমেছে। একই সঙ্গে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন ভিন্ন আর্থিক নীতি থাকা সত্ত্বেও, রেনমিনপি মার্কিন ডলারের তুলনায় স্থিতিশীল রয়েছে। পরিস্থিতি থেকে দেখা যায়, অন্তত এখন পর্যন্ত, চীন এমন একটি আর্থিক ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ হয়ে উঠেছে, যখন বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল মারাত্মক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। 

রিপোর্টে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মহামারীর কারণে চীনের অর্থনীতি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে, পরিস্থিতি সামলাতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হয়েছে। একই সঙ্গে, মহামারী প্রতিরোধে নেওয়া বিভিন্ন ব্যবস্থাও ধীরে ধীরে শিথিল হতে শুরু করেছে। আপাতত, প্রায় সকল অর্থনৈতিক সূচকেই ‘এশিয়ান জায়ান্ট’ প্রত্যাশিত লক্ষ্যের চেয়ে এগিয়ে আছে। 

প্রতিবেদনে বিশ্লেষকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, চীন পশ্চিমা অর্থনীতির জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।  কারণ, এটি একটি সম্পূর্ণ কার্যকরী উত্পাদন ও ভোগের কেন্দ্র। যখন পশ্চিমারা ব্যয় কমিয়ে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে, সেখানে চীনে অনেকেই ব্যয় করতে ইচ্ছুক। ফলে, চীন বিশ্বব্যাপী মন্দার ‘মরুভূমির’ মধ্যে একটি ‘অর্থনৈতিক মরুদ্যান’ হয়ে উঠতে পারে এবং এর বাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি স্থিতিশীল ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ হিসাবে বিরাজ করতে পারে।

সিএনএন জানিয়েছে, স্থাপত্য ও সেবা শিল্পসহ  চীনের অ-উত্পাদনকারী পিএমআই গত মে মাসের ৪৭.৮ শতাংশ  থেকে বেড়ে গত জুন মাসে দাঁড়ায় ৫৪.৭ শতাংশে। এ সব থেকে বোঝা যায় যে, চীনা অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের লক্ষণ স্পষ্ট। 

ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুসারে, একটি বাণিজ্য-শক্তি হিসাবে চীনের অবস্থা দুর্বল হয়নি। গত জুন মাসে চীনের রপ্তানি-বাণিজ্যের বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত ছিল। বস্তুত, জানুয়ারির পর থেকে বৃদ্ধি হার দ্রুতগতিতে বেড়েছে। চীনের বাণিজ্য-উদ্বৃত্ত ৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

 (ওয়াং হাইমান ঊর্মি, সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং, চীন।)