News update
  • Dhaka’s air ‘unhealthy for sensitive groups’ Wednesday morning     |     
  • US proposes that the UN authorize a Gaza stabilization force for 2 years     |     
  • Democrat Zohran Mamdani is elected New York City mayor     |     
  • Martyr Mugdha's brother Snigdha steps into politics with BNP     |     
  • FAO Warns of ‘Silent Crisis’ as Land Loss Threatens Billions     |     

মস্তিষ্কে চিপ বসিয়ে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 2024-04-04, 9:23am

img_20240404_095228-547053d5752d58d2fae45a022d056c921712202799.png




ইলন মাস্ক কি সবে টেলিপ্যাথি সম্ভব করেছেন? টেলিপ্যাথি নামের এক ওয়্যারলেস চিপ সফলভাবে এক মানুষের মস্তিষ্কে বসানো হয়েছে৷ মার্কিন কোটিপতি মাস্ক কমপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এমনটাই ঘোষণা করেছেন৷

মোটকথা মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটার সংযুক্ত করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য৷ সে ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা শুধু চিন্তার মাধ্যমে ডিজিটাল পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন৷

শুনতে খুবই ভবিষ্যতধর্মী হলেও বাস্তবে সেটা সত্যি কতটা যুগান্তকারী? তথাকথিত বিসিআই নামের ডিভাইসগুলি মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পরিমাপ করে সেই সংকেত  ডিজিটাল কমান্ডে রূপান্তরিত করতে পারে৷

এমন ডিভাইস ব্যবহার করলে নীতিগতভাবে কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে একেবারে নতুন ও বিরামহীন উপায়ে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়৷ মাস্কের ভাষায় ‘টেলিপ্যাথি' ফোন বা কম্পিউটারের উপর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব করবে৷ শুধু চিন্তাশক্তির বলে সেগুলির মাধ্যমে প্রায় যে কোনো ডিভাইস চালনা করা যাবে৷

শুনে মনে কৌতূহল জাগছে? কিন্তু এর এক বড় ঘাটতিও রয়েছে৷ কারণ মাস্কের চিপ মস্তিষ্কে ইমপ্লান্ট করতে হবে৷ এক রোবট সেই অপারেশন করবে৷ মানুষের চুলের থেকে বেশি চিকন ৬৪টি নমনীয় সুতা চিপ থেকে মস্তিষ্কে যোগাযোগ স্থাপন করবে৷

রোগগ্রস্ত বা প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য এমন অস্ত্রোপচার হয়তো উপকারও বয়ে আনতে পারে৷ যেমন কারো মৃগি রোগ থাকলে বিসিআই আগে থেকেই সম্ভাব্য খিঁচুনি শনাক্ত করে সেটি এড়িয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে৷

মাস্ক নিজেই অন্যান্য সম্ভাবনার উল্লেখ করেছেন৷ তাঁর বার্তা অনুযায়ী ‘যারা নিজেদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহার করতে পারেন না, তাঁরাই প্রাথমিক ব্যবহারকারী হবেন'৷

ভেবে দেখুন, স্টিফেন হকিং যদি স্পিড টাইপিস্ট বা নিলামকারীর তুলনায় দ্রুত ভাবের আদানপ্রদান করতে পারতেন, তাহলে কী হতো? তিনি খুব সম্ভবত সেই প্রযুক্তি পছন্দ করতেন এবং সেটা থেকে উপকারও পেতেন৷

চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে বিসিআই-এর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷ স্টিফেন হকিং এএলএস নামের দূরারোগ্য মোটর নিউরন রোগে ভুগছিলেন৷ এই রোগ হলে স্নায়ুর কোষগুলির ক্ষয় হতে থাকে৷ রোগীরা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন৷

বিসিআই হয়তো হকিং-কে চিন্তার মাধ্যমে টেক্সট টাইপ করার ক্ষমতা দিতে পারতো৷ কিন্তু নিউরালিংক সে রকম কিছু উদ্ভাবন করে নি৷ তবে অন্যান্য কিছু কোম্পানি মানুষের উপর সফলভাবে পরীক্ষা চালিয়েছে৷ যেমন সিনক্রোন নামে অস্ট্রেলিয়ার স্টার্ট-আপ কোম্পানি এ ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে৷

অন্যান্য গবেষকরা এমনকি ব্রেন ইমপ্লান্ট ও পেশির মধ্যে নতুন সংযোগ গড়ে তুলছেন৷ ২০২৩ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের নিউরোরিস্টোর নামের কোম্পানি এমন এক ব্যক্তিকে আবার হাঁটার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে, যিনি দুর্ঘটনার কারণে পঙ্গু হয়ে পড়েছিলেন৷

নিউরালিংক মডেলের তুলনায় এই দুই দৃষ্টান্তের একটা বড় সুবিধা রয়েছে৷ সেগুলিও রোগীর মাথায় ইমপ্লান্ট করতে হলেও সেই অপারেশন অনেক কম জটিল৷ তা সত্ত্বেও মাস্কের নিউরালিংক-কে ঘিরে কেন এত আলোড়ন চলছে?

সত্যি কথা বলতে গেলে উল্লিখিত কোম্পানিগুলির মধ্যে কোনোটিই বিসিআই উদ্ভাবন করে নি৷ সেই ১৯৯৮ সালেই মস্তিষ্কে প্রথম চিপ বসানো হয়েছিল৷ কিন্তু এখনো পর্যন্ত মাস্কের মতো কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি সেই প্রযুক্তির উন্নতির জন্য চাপ দেন নি৷ এমনকি জনসংযোগের ইভেন্টকেও তিনি প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালানোর মঞ্চে পরিণত করতে দ্বিধা করেন নি৷

২০২০ সালে মাস্ক বিশ্বের সঙ্গে ‘গ্যারট্রুড' নামের এক শুকরের পরিচয় করিয়ে দেন, যেটির মধ্যে নিউরালিংক চিপ বসানো হয়েছে৷ ২০২১ সালে তিনি ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘পেজার' নামের এক বানরকে তুলে ধরেছিলেন, যে চিপ ইমপ্লান্টের মাধ্যমে ‘পং' নামের ভিডিও গেম খেলতে পারে৷

সে সব ছাড়াও ইলন মাস্ক সেই প্রযুক্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে বেশ কিছু বড়সড় পূর্বাভাস দিয়েছিলেন৷ যেমন ২০২০ সালে নিউরালিংকের এক ইভেন্টে তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্মৃতি ধরে রেখে রিপ্লে করতে পারি৷ ভবিষ্যৎ বেশ অদ্ভুত হতে চলেছে৷

মনে হচ্ছে, মাস্ক আমাদের ব্রেন হ্যাক করতে বদ্ধপরিকর৷ তাঁর বিশ্বাস, বিসিআই মানুষের মধ্যে উন্নতি আনতে পারে৷ সেই উন্নতি শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে না৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, আপনি কি মাস্কের কোনো কোম্পানির হাতে নিজের মস্তিষ্ক তুলে দিতে প্রস্তুত? ভেবে দেখুন, আপনার চিন্তাভাবনার জগতে উঁকি মেরে কত সংবেদনশীল তথ্য রেকর্ড করা হতে পারে! সূত্র ডয়চে ভেলে বাংলা ।