পদ্মা সেতু চালুর তিন বছর পার হলেও এখনো সারচার্জ দিচ্ছেন মোবাইল ফোনের গ্রাহকরা। প্রতি ১০০ টাকা রিচার্জে নেয়া হয় ১ টাকা। ২০১৬ সালে চালু হয়ে এখন পর্যন্ত এই সারচার্জ বাবদ ৯ বছরে সরকার দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে। আসছে বাজেটে এটি তুলে নেয়ার আহ্বান মোবাইল অপারেটরদের। পাশাপাশি সিম করও প্রত্যাহার চান তারা।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে পদ্মা সেতু। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণ প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক তহবিল প্রত্যাহার করলে নিজস্ব অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া সরকার। সেতু নির্মাণে তহবিল সংগ্রহে মোবাইল সেবায় এক শতাংশ সারচার্জ বসানো হয় ২০১৬ সালের মার্চ থেকে।
মোবাইল অপারেটর সূত্র বলছে, এ পর্যন্ত ৯ বছরে প্রায় ২ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েছে তারা। যেখানে এক শতাংশ হারে সারচার্জের পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘১ শতাংশ যে সারচার্জ পদ্মাসেতুর জন্য কালেক্ট করা শুরু হয়েছিল, সেটা এখন চালু আছে।’
বর্তমানে মোবাইল গ্রাহকদের কাছ থেকে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ মিলে ৩৯ শতাংশ কর নিচ্ছে সরকার। সিম কর আছে ৩০০ টাকা। করের বোঝায় কমছে না ভয়েস কল কিংবা ইন্টারনেট খরচ।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বাসার একটি ব্রডব্যান্ড কানেকশনের জন্য যে টাকা দিতে হয়, মোবাইলে এক সপ্তাহের ইন্টারনেট প্যাকেজের জন্য সে টাকা দিতে হয়।
এর আগে যমুনা সেতু নির্মাণ তহবিলের জন্য বাস, ট্রেন ও সিনেমার টিকিটে সারচার্জ আরোপ করা হয়েছিল। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে যা তুলে নেয়া হয়। চলমান সারচার্জ তুলে দেয়া ও টেলিকমখাতের কর কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন মোবাইল অপারেটররা।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ‘১০০ টাকায় ট্যাক্স হিসেবে ৫৪ টাকা সঙ্গে সঙ্গে সরকারকে দিয়ে দিতে হচ্ছে। এ সেক্টরে একটু কনসিডার করা উচিত।’
গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অফিসার তানভীর মোহাম্মদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রজেক্ট এখন শেষ। ফলে এবার এ সারচার্জটা যদি তুলে নেয়া যায় তাহলে এ খাতে ভালো প্রভাব বয়ে আনবে।’
তবে করহার কমার কোনো আভাস মেলেনি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর কথায়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘এ খাতে কোনো ভর্তুকি দেয়া হবে না।’
বর্তমানে ১৯ কোটি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে দেশের চারটি মোবাইল অপারেটর।