News update
  • AC Tabassum Urmi sacked over anti- govt Facebook posts     |     
  • Bangladeshi killed in BSF firing at Chuadanga border      |     
  • Rains Fuel Disasters in 83pc of Brazilian Cities: Report     |     
  • Hamas ready and serious to reach an accord if it ends war     |     
  • Paradise lost: Cox’s Bazar tourists shocked by wastes at sea     |     

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সিলেট ও সুনামগঞ্জ, অন্ধকারে ১৫ লাখ পরিবার

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিদ্যুৎ 2022-06-18, 8:24pm

image-46720-1655543900-eac7f4c958f54c0efbf49c3a3ca852241655562256.jpg




সিলেটে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রে বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আজ শনিবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বিষয়টি বাসস’কে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ‘পানি উঠে যাওয়ায় আপাতত সাব স্টেশনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি পানি সেচে দ্রততম সময়ের মধ্যে এটি আবার চালু করতে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই সাব স্টেশনে পানি উঠতে শুরু করে। শুক্রবার দুপুর থেকে এই কেন্দ্র সচল রাখতে যৌথভাবে কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশন। তারা চার পাশে বাঁধ নির্মাণ করেন। তবে পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় বন্ধ করে দিতে হলো উপকেন্দ্রটি।

এদিকে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় তিন লাখ পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। 

বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, সিলেট বিভাগের চার জেলায় পিডিবি’র প্রায় সাড়ে চার লাখ গ্রাহক আছেন। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জেনারেল ম্যানেজার দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী জানিয়েছেন, সমিতির সিলেট-১-এর অধীনে ৪ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার রায় জানিয়েছেন, সিলেট-২-এর অধীনে ২ লাখ ১২ হাজার গ্রাহক রয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, ‘অনেক এলাকায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন তলিয়ে গেছে। সাবস্টেশন ডুবে গেছে। কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের ভেতর বন্যার পানি ঢুকেছে। ভেতরে পানি ঢুকে যাওয়ায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে।’ বিদ্যুৎহীন এলাকায় মোমবাতি ও কেরোসিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় বেড়ে গেছে দামও।

পাহাড়ি ঢল আর অতি বৃষ্টিতে নদ-নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যার বিস্তৃতি আরও বেড়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী বলেন, বিগত ৩০ বছরে এমন বন্যা সিলেটে দেখিনি।’

পানি বন্দি মানুষের মধ্যে হাহাকার ও আর্তনাদ চলছে। আশ্রয়ের খোঁজে পানি-¯্রােত ভেঙে ছুটছে মানুষ। সবচেয়ে বিপদে আছেন শিশু ও বয়স্করা। আটকে পড়াদের উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে। যেখানেই শুকনো ও উচু জায়গা পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ।

সিলেটের সবকটি উপজেলা ও শহর, সুনামগঞ্জের উপজেলা উপজেলা ও পৌরশহর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক ও সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবু রহমান মহাসড়ক। দুই জেলায় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। 

সিলেটের নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার দিনগত রাতে সিলেটে বৃষ্টি কিছুটা কম ছিল। এতে পানি এক-দুই ইঞ্চি কমেছে সকাল ৯টা পর্যন্ত। এররপর থেকে সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে, বন্যার পাশাপাশি নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানির নিচে রয়েছে সবগুলো রাস্তাঘাট। বন্যা নদনদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। সিলেটে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে, সিলেটে বন্যা দুর্গত এলাকায় পানিবন্দি লোকজনকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী তৎপর রয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে সেনাবাহিনীর ১০ প্লাটুন, ৬টি মেডিকেল টিম, আজ শনিবার সকাল থেকে নৌবাহিনীর ৩৫ সদস্যের দুটি টিমে ভাগ হয়ে কাজ শুরু করেছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উদ্ধার কাজে নৌবাহিনী সদস্যরা নিজস্ব ক্রুজ ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন। বিকেলের মধ্যে ৬০ জনের আরেকটি দল আরও ক্রুজ ও হেলিকপ্টারসহ উদ্ধার কাজে যুক্ত হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নৌবাহিনীর ৩৫ সদস্যের একটি দল শুক্রবার রাতে সিলেট এসে পৌঁছায়। শনিবার সকাল থেকে ৩৫ সদস্যের দল কোস্টগার্ডের ১টি ক্রুজ ও বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে।

সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে একটি টিম সকাল থেকে কাজ শুরু করে। আরেকটি টিম কোম্পানিগঞ্জে কাজ শুরু করেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানায়, বিকেলে নৌবাহিনীর আরও ৬০ সদস্যের একটি দল সিলেট এসে পৌঁছাবে। আরও দুটি ক্রুজ উদ্ধার কাজে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে একটি সিলেটে ও অন্যটি সুনামগঞ্জে উদ্ধার কাজে যুক্ত হবে।

সিলেট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা জানিয়েছে, ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭ হাজার ৯০০ বস্তা শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও ৮ হাজার প্যাকেট খাবার ও ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তথ্য সূত্র বাসস।