মেট্রোরেল চালু রাখতে এতে যেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় তার সব ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে। রাজধানীর লোডশেডিংয়ে যেন মেট্রোরেল চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য জাতীয় গ্রিডের সব বিকল্পের সঙ্গে সংযোগ থাকবে এর বিদ্যুৎ ব্যবস্থার। বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ ছাড়াও থাকবে ব্যাটারির ব্যাকআপ।
প্রকল্প শেষ হলে উত্তরা টু মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রী ২১ কিলোমিটার পথ চলবে। এই পথ চলতে মোট বিদ্যুৎ খরচ হবে ৮০০ থেকে ১২০০ কিলোওয়াট।
এ ব্যাপারে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) এর একজন ব্যবস্থাপক জানান, আপতত অল্প সময়ের জন্য চললেও প্রকল্প শেষ হলে উভয় দিকে সাড়ে তিন মিনিট পরপর ২৪ সেট ট্রেন চলবে। এসব বৈদ্যুতিক ট্রেনে প্রতিদিন খরচ হবে ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
প্রথমধাপে উত্তরা থেকে আগাগাঁও পর্যন্ত চালু হলেও এটি সম্প্রসারণ হয়ে যাবে কমলাপুর পর্যন্ত। জাতীয় গ্রিড থেকে প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎ নেবে ডিএমটিসিএল। এজন্য তিনটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দেখার দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক শেখ খলিলুর রহমান জানান, ছয় কোচের এক সেট ট্রেন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে সক্ষমতা অনুযায়ী প্রায় বিদ্যুৎ খরচ হবে ৮০০ থেকে ১২০০ কিলোওয়া। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের কর ও ভ্যাটসহ মোট খরচ হবে সাড়ে তিন হাজার টাকা। তবে প্রথম অবস্থায় এখন কি পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে সে ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
তিনটি উপকেন্দ্র
মেট্রোরেলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে উত্তরা ও মতিঝিলে দুটি উপকেন্দ্র ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। উভয় কেন্দ্র থেকে মোট ১৩২ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
মতিঝিল উপকেন্দ্রে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) মানিকনগর গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে এবং উত্তরা উপকেন্দ্র পিজিসিবির টঙ্গী গ্রিড উপকেন্দ্র ও ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) উত্তরা গ্রিড উপকেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
তৃতীয় উপকেন্দ্রটি মিরপুর শেওড়াপাড়ায় স্থাপন করা হয়েছে। স্টেশন সংলগ্ন এ কেন্দ্রটি থেকে ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বঙ্গভবনের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য স্থাপিত বিশেষ এ উপকেন্দ্র থেকে এ সংযোগ দেওয়া হবে বলে জানান ব্যবস্থাপক শেখ খলিল।
গ্রিড বিপর্যয়েও ট্রেন থামবে না
মেট্রোরেল চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য জাতীয় গ্রিডের সব বিকল্পের সঙ্গে সংযোগ থাকবে এর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপক শেখ খলিলুর রহমান। এছাড়াও থাকবে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ ছাড়াও থাকবে ব্যাটারির ব্যাকআপ।
এ ব্যাপারে ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানান, প্রকল্পের সমীক্ষার সময়ই গ্রিড বন্ধের মত বিপর্যয়ের বিষয়গুলো মাথায় নিয়ে নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে।
একটি জেলা শহরের সমান বিদ্যুৎ লাগবে
মেট্রোরেলে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ লাগবে তাতে দেশের মাঝারি আকারের একটি জেলা শহর চালানো যাবে।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য মো. আমজাদ হোসেন বলেন, সাধারণ একটি জেলা শহরে গড়ে দৈনিক ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। সেই পরিমাণই লাগবে মেট্রোরেল চালাতে। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।