News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি যাচাই-বাছাই করছে বাংলাদেশ : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিদ্যুৎ 2024-09-12, 6:40pm

indian-express-1957a4c62014cf17f76c7067c5932cf01726144815.jpg




ড.মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তিটি যাচাই-বাছাই করছে। ২০১৭ সালে তৎকালীন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার আদানি গ্রুপের সঙ্গে তাদের ঝাড়খন্ড ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি করে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়।

 ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার চুক্তির শর্তাবলি এবং বিদ্যুতের জন্য যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা ন্যায্য কি না সেটি মূলত খতিয়ে দেখতে চায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তর্বর্তী সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আদানি গ্রুপের মতো ভারতীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে করা চুক্তি যাচাই-বাছাই করা হবে। তাদের সঙ্গে কী ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে? কী শর্তাবলি দেওয়া হয়েছে? দেশের আইন না মেনে বিদেশি কোম্পানি থাকতে পারে না।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তাই সেসব তদন্ত হবে; এটি ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করা হবে না। তারা এখানে (বাংলাদেশ) যা যা করছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। এজন্য বাংলাদেশকে কত মূল্য দিতে হচ্ছে, সেটা কি ন্যায়সঙ্গত? এসব প্রশ্ন উঠে আসবে।’

২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের ঝাড়খণ্ড ইউনিটের (এপিজেএল) সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২৫ বছরের জন্য ১৪৯৬ মেগাওয়াট (নেট) বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায় এজেপিএলের গোড্ডা প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত শতভাগ বিদ্যুৎ কিনে নেবে বাংলাদেশ। সম্পূর্ণ আমদানি করা কয়লায় পরিচালিত এই ইউনিটকে ২০১৯ সালের মার্চ ভারত সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে।

২০২৩ সালের এপ্রিল-জুনে গোড্ডা প্ল্যান্ট সম্পূর্ণরূপে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের বেস লোডের ৭ থেকে ১০ শতাংশ সরবরাহ করে।

২০২৩-২৪ সালে এটি বাংলাদেশে প্রায় সাত হাজার ৫০৮ মিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ রপ্তানি করেছে, যা ভারতের রপ্তানি করা বিদ্যুতের প্রায় ৬৩ শতাংশ। দেশটি মোট ১১ হাজার ৯৩৪ মিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ রপ্তানি করে। বাংলাদেশে ভারতের বিদ্যুৎ রপ্তানি মূল্যের হিসাবে ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, যা এদেশে ভারতের মোট রপ্তানির প্রায় ১০ শতাংশ।

যোগাযোগ করা হলে আদানি পাওয়ারের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার আমাদের চুক্তিটি পর্যালোচনা করছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। সত্যিকারের অংশীদারিত্বের মূল্যবোধ থেকে তাদের কাছে বিপুল পাওনা থাকা সত্ত্বেও আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের কাছে আমাদের পাওনা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য অনুরোধ করেছি। কারণ, এটি আমাদের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।’

সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস গত ৯ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেদনে জানায়, আদানি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করেছে, দেশটির বকেয়া ৫০ কোটি ডলারের বেশি, যা বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রক্রিয়াকে ‘অস্থির’ করে তুলছে।

জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের মোট ৩৭০ কোটি ডলারের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আদানিকে তাদের পাওনা ৮০ কোটি ডয়ারের মধ্যে ৪৯ কোটি ২০ লাখ ডলার দিতে দেরি হয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ এর জুলাই-জুনে ভারতীয় কোম্পানিগুলো থেকে বাংলাদেশের আমদানি করা বিদ্যুতের গড় খরচ দাঁড়িয়েছে প্রতি ইউনিটে ৮ টাকা ৭৭ পয়সা। যদিও এটি কোম্পানি অনুযায়ী বিভিন্ন হয়। এনভিভিএল লিমিটেডের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট ছিল ৪.২২-৮.৪৫ বাংলাদেশি টাকা; পিটিসি ইন্ডিয়া লিমিটেডের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট ৯.০৫ বাংলাদেশি টাকা; সেমক্রপ এনার্জি ইন্ডিয়া থেকে ৯.৯৯৫ টাকায় প্রতি ইউনিট এবং আদানির এপিজেএল থেকে কিনতে প্রতি ইউনিটে ১৪.০২ টাকা খরচ পড়ে।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ওই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে একটি স্থিতিশীল ও  নিরপেক্ষ সম্পর্ক রাখতে চাই।’

‘কিন্তু শেখ হাসিনাকে (ভারতে) আশ্রয় দেওয়াটা একটা সমস্যা…। প্রথমে আমরা দেখেছি, তিনি সেখানে কিছু সময়ের জন্য ছিলেন এবং এখন তাকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কার্যকলাপ করার জন্য জায়গা দেওয়া হচ্ছে’, বলেন ওই কর্মকর্তা।

ড. ইউনূস দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কাজ করছেন, সে বিষয়ে ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘হাসিনা প্রশাসনকে নষ্ট করে ফেলেছেন, আর্থিক খাত ধ্বংস করে গেছেন, দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে, পিয়ন পর্যায়ের লোকও কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’

‘আমাদের প্রথমে রাষ্ট্রযন্ত্র চালু করতে হবে, এটিকে কাজ করতে হবে এবং তারপরে এগিয়ে যেতে হবে’, বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের ওই কর্মকর্তা। এনটিভি নিউজ।