News update
  • US Faces Pressure as UN Votes on Gaza Ceasefire     |     
  • Prof Yunus includes 4 political leaders in UNGA tour del     |     
  • Tarique calls for vigilance to prevent troubles during Puja     |     
  • Parties divided on constitution order move over July Charter     |     
  • Khulna’s ‘white gold’ shrimp eyes Tk 22,600cr export goal     |     

সিলেট ও সুনামগঞ্জে ১১ উপজেলায় ফের বন্যা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2022-06-16, 7:56am




অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জে আবারও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দুই শহর এবং অন্তত পাঁচ উপজেলা সদরে পানি ঢুকেছে। নিমজ্জিত হয়েছে বেশ কয়েকটি উপজেলা সংযোগ সড়ক। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিলেট শহর, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, সিলেট সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। এছাড়াও সদর, তাহিরপুর ও বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তাহিরপুর ও ছাতক উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

গত মে মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এতে অন্তত ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। ১০ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সিলেট শহরের শতাধিক পাড়ামহল্লায় পানি প্রবেশ করে। অভিজাত এলাকা উপশহরসহ বেশকিছু এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। এক সপ্তাহ স্থায়ী এই বন্যায় জেলার সড়ক, মৎস, পোল্ট্রি, কৃষিসহ বিভিন্ন সেক্টরে ৮৫২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানায় জেলা প্রশাসন। পাঁচজনের প্রাণহানিও ঘটে। সুনামগঞ্জে ক্ষয়ক্ষতি অন্তত তিনশ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে,  মঙ্গলবার বিকেলে তিন ঘণ্টার ব্যবধানে কানাইঘাটে সুরমার পানি তিন ফুট ৮ ইঞ্চি বাড়ে। তখন বিপৎসীমা অতিক্রম করে পানি ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত একই পয়েন্টে পানি আরও ৭৯ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৫৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এখন বিপৎসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

একইভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমার সিলেট পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বেলা দুইটা থেকে নগরের বিভিন্ন সড়ক, পাড়া-মহল্লায় পানি প্রবেশ করেছে। সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ৩২ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুশিয়ারা নদীতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। একটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। অন্যসব পয়েন্টে কাছাকাছি অবস্থান করছে। অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার নিচে, শেওলা পয়েন্টে ১০১ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ৯৪ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। তবে, ফেঞ্চুগঞ্জে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অমলশিদ ও শেওলায় যথাক্রমে পানি বেড়েছে ৬৬ ও ৩৬ সেন্টিমিটার।

ঢলের কারণে সীমান্ত নদীগুলোতে পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। সারি নদীতে ২৪ ঘণ্টায় ১৯২ সেন্টিমিটার, লোভা নদীতে ১২৭ সেন্টিমিটার ও ধলাই নদীর ইসলামপুরে ১০৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।

পাউবো আরও জানায়, গতকাল ও আজ সিলেটে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের জাফলংয়ে ২৩৮ মিলিমিটার, লালাখালে ২২৫ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জের লাউড়েরগড়ে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও শেওলায় ৯০, কানাইঘাটে ৬০ ও জকিগঞ্জে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় ও আসামে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৮১২ ও আসামের ধুব্রিতে ১৭০, মেঘালয়ের শিলংয়ে ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টির কারণে ২৪ ঘণ্টায় সুরমা-কুশিয়ারাসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদনদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকবে। এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। দুর্গত মানুষের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুই উপজেলার মানুষ বেশি কষ্টে আছেন। আমরা তাদেরকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। অন্যান্য উপজেলায় মানবিক সহায়তা পাঠানো হচ্ছে। তথ্য সূত্র বাসস।