কার্লোস আলকারাজ। প্রথমবারের মতো উইম্বলডনের চ্যাম্পিয়ন স্প্যানিশ তরুণ তুর্কি। ২০১৩ সালের পর অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সেন্টার কোর্টে যিনি হারেননি, সেই জোকোভিচকে হারিয়ে উইম্বলডনের ট্রফি হাতে তুললেন টেনিসের ভবিষ্যৎ আলকারাজ। ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিট লড়াই শেষে স্বপ্ন জয়ের পথে হাটেন আলকারাজ।
জোকোভিচকে আলকারাজ হারিয়েছেন ১-৬, ৭-৬ (৮/৬), ৬-১, ৩-৬, ৬-৪ গেমে। ২০২১ সালে প্রথমবার গ্র্যান্ড স্লামের মূল পর্বে খেলেছিলেন আলকারাজ। এটি তার দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা। গত বছর ইউএস ওপেনে ক্যাসপার রুদকে হারিয়ে জিতেছেন প্রথমটি।
রোলাঁ গারোতে ফ্রেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালে গত মাসে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন আলকারাজ। প্রথম দুটি সেটে দুর্দান্ত লড়াই উপহার দেওয়ার পর ক্র্যাম্প হয় তাঁর। আলকারাজ পরে নিজেই বলেছিলেন, তাঁর শরীরে জোকোভিচকে নিয়ে বেশি ভাবার প্রভাব পড়েছিল।
এবার দেখিয়েছেন প্রস্তুতিটা নিয়েছেন সঠিকভাবে। আলকারাজ প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন শারীর ও মন দুটোতেই।সেটির প্রমাণই পাওয়া গেল আজকের ফাইনালে।
আলকারাজকে দেখে মনে হচ্ছিল, গত মাসের ফ্রেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালের শেষ দুই সেটের ধারাবাহিকতা টানছেন প্রথম সেটে। তবে সবকিছু বদলে দিলেন দ্বিতীয় সেটে। দ্বিতীয় সেটটা আলকারাজ টাইব্রেকারে জিতলেন ৮-৬ পয়েন্টে।
৬-১ স্কোরটা দেখে বলা যায়, তৃতীয় সেটে পাত্তাই পাননি জোকোভিচ। কিন্তু স্কোরবোর্ড সবসময় পুরোপুরি সত্যি বলে না, সেটির বড় প্রমাণ এই সেট। আলকারাজ এগিয়ে গেলেন ৩-১ গেমে। এরপর পঞ্চম গেমটায় আসল নাটকীয়তা। জোকোভিচ এগিয়ে গেলেন ৪০-১৫-তে।
আর ২৬ মিনিটে শেষ হল গেম! আলকারাজ ৪০-৪০ করার পর, জোকোভিচ-আলকারাজ অ্যাডভান্টেজ পান তো, পর মুহূর্তেই ডিউস, এভাবেই যেন অনন্তকাল ধরে চলছিল সেই গেম। শেষ পর্যন্ত ওই গেমটা জয়ের পর তৃতীয় সেটটা নিজের করে নেন আলকারাজ।
তবে পরের সেটটা জিতে জোকোভিচ ম্যাচে ফেরেন। তিনিই ফেবারিট, এমন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর অন্যরকম আরো একটি গল্প লেখার চেষ্টায় ছিলেন জোকোভিচ। কিন্তু আজ আর তা পারেননি আলকারাজের ভাষায় ‘দানব’ জোকোভিচ। শেষ সেটে চটে গেলন চরমভাবে। মেজাজ হারিয়ে ভাঙলেন র্যাকেটও।
এবারের উইম্বলডনটা ছেলে-মেয়ে মিলিয়েই সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের মার্গারেট কোর্টের রেকর্ড করার সুযোগ ছিল জোকোভিচের। ৩৬ বছর বয়সী সার্বিয়ানের সবচেয়ে বেশি সুযোগ ছিল উইম্বলডন পুরুষ একক জয়ে রজার ফেদেরারের রেকর্ডে ভাগ বসানোর।
কিন্তু তা আর হয়নি। হতে দেননি ২০ বছর বয়সী এক তরুণ। যাঁর হাতেই উত্তরাধিকার জোকোভিচ-ফেদেরার–নাদালদের। সেই তরুণ উইম্বলডনের রাজা আলকারাজ।
সেই তরুণ, যাঁর হাতেই উত্তরাধিকার জোকোভিচ-ফেদেরার–নাদালদের। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।