News update
  • Indices tumble on both bourses amid broad-based sell-off     |     
  • BNP Names 237 Possible Candidates for Polls     |     
  • Bangladeshi leader of disabled people of world Dulal honoured     |     
  • Dengue: 5 more die, 1,147 hospitalised in 24hrs     |     
  • UN Report Warns Inequality Fuels Global Pandemic Vulnerability     |     

‘অল আয়েস অন রাফাহ’: বিশ্বজুড়ে যা প্রায় ৫০ মিলিয়ন লোক শেয়ার করছে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক মানবাধিকার 2024-05-31, 6:47pm

ggsgd-db68c62613c07a6b4fb68ef27672a8341717159710.jpg




বিরাট এলাকাজুড়ে উচ্ছেদ হওয়া ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের তাঁবু আর একটি স্লোগান যাতে লেখা “অল আয়েস অন রাফাহ” বা “সমস্ত চোখ এখন রাফাহ-তে”, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা তৈরি এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন হরহামেশাই চোখে পড়ছে।

বিবিসি অ্যারাবিক এই ছবির উৎস খুঁজে বের করে, যেটি মালয়েশিয়া থেকে পোস্ট হওয়ার পর দ্রুতই ৪৪ মিলিয়ন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী তা শেয়ার করে– যার মধ্যে আছে ভারত, পাকিস্তান ও পুয়ের্তো রিকোর অনেক তারকাও।

এই ছবি এবং স্লোগান ভাইরাল হয় যখন দক্ষিণ গাজার শহর রাফাহতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটা শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলা হয় এবং তাতে আগুন ধরে যায়।

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায় এতে অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছে। আরও শত শত মানুষ আহত, পুড়ে যাওয়া ও শরীরে বোমার আঘাতের চিকিৎসা নিচ্ছে।

বেশ কয়েকজন বিশ্ব নেতা, রাষ্ট্রপ্রধান ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এটিকে একটা “ট্রাজিক দুর্ঘটনা” বলে বর্ণনা করেছেন এবং জানান যে এটির বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি এই দৃশ্যকে “হৃদয়বিদারক” বলে অভিহিত করেন। কিন্তু একই সাথে ঘোষণা দেন এজন্য “তাদের পলিসিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।”

রাফাহ'র ক্যাম্পে এই হামলার পরপরই ছবিটি ভাইরাল হয় যা বিবিসি অ্যারাবিকের তথ্য অনুযায়ী প্রথমে মালয়েশিয়ার এক যুবক তার সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে।

“অল আয়েস অন রাফাহ” স্লোগানের শুরু যেভাবে

রাফাহ'র ক্যাম্পে ইসরায়েলের হামলার পর এই স্লোগানটি নেয়া হয় মূলত দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্নের একটি উক্তি থেকে।

গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন যে “অল আয়েস অন রাফাহ” বা আমাদের সবার চোখ এখন রাফাহ'র দিকে। তিনি এর মাধ্যমে রাফাহতে হামলার পরিকল্পনা করা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে একটা সতর্কতার বার্তা দেন।

পিপারকর্ন জেনেভায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনলাইনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন।

তিনি বলেন, তার শঙ্কা যদি ইসরায়েলি সেনারা ব্যাপক আকারে রাফাহতে অভিযান চালায় তাহলে একটা “অকল্পনীয় দুর্ভোগ” নেমে আসবে।

এরপর থেকেই পিপারকর্নের বলা ঐ কথাটা অন্য কর্মকর্তা ও অ্যাক্টিভিস্টরা বারবার ব্যবহার করে আসছিলেন রাফাহতে ইসরায়েলি অভিযানের বিরোধিতা করতে ও তাদের উদ্বেগ জানাতে।

ছবিটি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় এত ছড়ালো কেন?

“অল আয়েস অন রাফাহ”– এই স্লোগানটি ততদিনে ব্যানারে লিখে দেশে দেশে বড় বড় শহরগুলোতে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।

মালয়েশিয়া থেকে যে ছবিটি পোস্ট করা হয় সেখানে এই স্লোগানটিই নেয়া হয় যা গত ফেব্রুয়ারি থেকে প্রচার হয়ে আসছে।

যেসব তারকা যারা এই স্লোগানসহ ছবিটি ব্যবহার করেছেন তাদের মধ্যে আছেন পপ শিল্পী রিকি মার্টিন, তুরস্কের অভিনেত্রী তুবা বায়ুকুস্তান, ভারতীয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং সিরিয়ার অভিনেত্রী কিনদা আলুশও।

ই-মার্কেটিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) কনসালট্যান্ট মাহের নামারি বিবিসি অ্যারাবিককে বলেন, যে কারণে তিনি প্রথম দেখাতেই এটাকে এআই দ্বারা চিত্রিত ছবি হিসেবে বুঝতে পারেন সেটা হলো ছবিটা দেখতে ঠিক বাস্তবসম্মত নয়। এই ছবিতে রাফার কোনো আসল জায়গা দেখানো হয়নি।

ছবিটিতে একটা বিরাট মরুভূমি, অনেকগুলো তাবু টাঙানো একটা বড় শিবির, সেই সাথে ঐ লেখাটা “অল আয়েস অন রাফাহ”।

নামারি জানান, এটি যখন ব্যাপক আকারে শেয়ার হতে থাকে তখন ইন্সটাগ্রামের একটা ফিচার “অ্যাড ইয়োরস” এতে ব্যবহার করা হয়।

ফলে মাত্র দুটি ক্লিকেই ব্যবহারকারীরা এতে অংশ নিতে পারে, যা এই প্রচারণায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষকে খুব সহজে যুক্ত করে নেয়।

কিন্তু নামারি মনে করিয়ে দেন ঘটনাটা এতটাই হৃদয়বিদারক যার ফলে অনলাইনে এর সহজলভ্যতা ছবিটিকে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

তিনি এর আগে অন্যান্য বিষয়ে অতীতের অনেক প্রচারণার তুলনা করে বলেন সেগুলো এতোটা সফল হয়নি; তার ভাষায় “রাফাহতে রোববারের হামলা বিশ্বজুড়ে মানুষকে দুঃখভারাক্রান্ত করেছে।”

নামারা বলেন, আরেকটা কারণেও এই ছবিটি এত বেশি ছড়িয়েছে, আর সেটি হলো ছবিটিতে কোনো রক্ত, সত্যিকার মানুষ, কোনো নাম বা মর্মান্তিক কোনো দৃশ্য নেই, ইন্সটাগ্রামের নিয়ম অনুযায়ী তাহলে এটা নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়তো।

নামারি জানান, ফিচারটি চালুর পর থেকে সাধারণত ট্যুরিজম ও ট্রাভেলের ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়ে আসছিল, যেখানে কেউ একজন কোনো একটা জায়গায় ঘুরতে গিয়ে ছবি দিলো এবং একই সাথে ব্যবহারকারীদেরও বলে যে তাদের অ্যাকাউন্টেও এই ছবিটি দিতে।

তিনি যোগ করেন এছাড়া এই ফিচারটি কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রচারণায় ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি সাম্প্রতিক কোনো ইস্যুতে মানুষের মতামত নেয়ার জন্যও ব্যবহৃত হয়।

“বেশিরভাগ সময় কেউ যখন এই ফিচারটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে চায় তার উদ্দেশ্য থাকে বড় আকারে রাজনৈতিক প্রচারণা চালানো, কারণ এটার জনপ্রিয়তা আছে।”

আগেও যেসব প্রচারণা হয়েছে

রাফাহ নিয়ে এই প্রচারণাটি অবশ্য সামাজিক মাধ্যমে কোনো বিষয়ে একতা প্রকাশের প্রথম উদাহরণ নয়।

বর্ণবাদ, বৈষম্য এবং কৃষ্ণাঙ্গদের নানা ক্ষেত্রে যে অসমতার শিকার হতে হয় তার বিরুদ্ধে ২০২০ ও ২০২১ সাল জুড়ে “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার” এই কথা এবং হ্যাশট্যাগ ব্যবহৃত হয়

এটার শুরুটা হয় যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে একজনের মারা যাওয়ার মধ্য দিয়ে, যা পরে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে।

সুদানে সামরিক বাহিনীর দলাদলিতে শত শত লোক মারা গেলে এবং আরও হাজারো লোক শহর ও দেশ থেকে বিতাড়িত হলে সামাজিক মাধ্যমে একটা প্রচারণা শুরু হয়।

আর দেশটিতে হওয়া নানান প্রচারণার মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো “ব্লু ফর সুদান” ক্যাম্পেইন।

রাজধানী খার্তুমে চলা বিক্ষোভে সংহতি জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যক্তিগত ছবির জায়গায় হ্যাশট্যাগ ব্লু ফর সুদান ব্যবহার করে।

এই কথাটি পরবর্তীতে সাধারণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দাবির স্লোগান হয়ে পড়ে।

২০২৩ সালে মরক্কোর শহর মারাক্কেশে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজারো লোক মারা গেলে বিশ্বজুড়ে তারকারা এতে সহমর্মিতা জানিয়ে পোস্ট দিতে থাকে।

তাদেরকে ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে ছবি আপলোডের মাধ্যমে সমবেদনা প্রকাশ, সাহায্য সংগ্রহ এবং একই সাথে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে দেখা যায়। বিবিসি বাংলা