News update
  • 2025: Resilient Economies, Smart Development, and More Jobs      |     
  • Dhaka rejects India's statement on incident at BD HC residence, New Delhi      |     
  • Stocks end lower; trading falls at DSE, improves at CSE     |     
  • No need to be kind to election disruptors: EC to law enforcers     |     
  • No Media Faced Arson Attacks in 53 Years: Mahfuz Anam     |     

রাষ্ট্র সংস্কার করে স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে সে ব্যবস্থা করুন

নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষণা করে অনিশ্চয়তা দূর করুন- পীর সাহেব চরমোনাই

রাজনীতি 2024-11-16, 10:34pm

islami-andolan-bangladesh-amir-syed-mufti-muhammad-rezaul-karim-addressing-a-news-conference-in-dhaka-on-saturday-4912cf8c0ecbc16676a675914f4758e51731774887.jpg

Islami Andolan Bangladesh Amir Syed Mufti Muhammad Rezaul Karim addressing a news conference in Dhaka on Saturday



জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী এক বা দেড় বছরের মধ্যে আয়োজন করতে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, এই যৌক্তিক সময়ের মেয়াদ এক বা দেড় বছরের বেশি হওয়া উচিত নয়। তাদের সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপের বিষয়ে বলা উচিত। কারণ সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে, তাই পরিষ্কার করা জরুরি।

আজ শনিবার দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের একশত দিনের কার্যক্রম ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পীল সাহেব চরমোনাই লিখিত বক্তব্য রাখছিলেন। দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য  প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক  কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, অ্যাডভোকেট বরকত উল্লাহ লতিফ, মাওলানা নুরুল করীম আকরাম।

অন্তর্র্বতী সরকারকে নির্বাচনি পরিকল্পনা ঘোষণার দাবি জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, ‘অনিশ্চয়তা ও শুন্যতা নানা ধরণের জটিলতা ও অপলাপের জন্ম দেয়। তা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সুষ্ঠু ও অবাধ পরিস্থিতি তৈরিতে করণীয় নির্ধারণ, তার জন্য সময়সীমা ঠিক করে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ঘোষণা করা হলে সবার জন্য কাজ করা সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চরম বিতর্কিত উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে জনগণ মেনে নেয়নি। ফারুকীকে দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদ থেকে প্রত্যাহার করা হোক, তা দেশবাসী প্রত্যাশা করে।’

সংস্কার কার্যক্রম গতিশীল ও গণসম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো রাষ্ট্র সংস্কার করা; যাতে করে আর কখনো কোনো স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে। সেজন্য সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। এখন এই কমিশনগুলোকে গতিশীল করুন। রাজনৈতিক দল, উলামা শ্রেণি এবং বিভিন্ন পেশা ও স্তরের জনমানুষকে সম্পৃক্ত করুন। ইতোমধ্যেই মানুষের মধ্যে কানাঘুষা তৈরি হয়েছে। এই কানাঘুষা সংস্কারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’ দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ তাদের খাদ্যের নিশ্চয়তা চায়, জীবনের নিরাপত্তা চায়। স্বৈরাচারের পতনের পরে মানুষ ভালো কিছু আশা করেছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কোন কোন ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে। এটা মানুষকে হতাশ করেছে। সেজন্য বলবো, যে কোনো মূল্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন। শক্তহাতে সিন্ডিকেট ভেঙে দিন। মনে রাখবেন এই দ্রব্যমূল্যই আপনাদের প্রতি জনসমর্থন কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।’

চরমোনাই পীর বলেন, ‘পতিত হাসিনা সরকার জাতির সঙ্গে যা করেছে তার বিচার না হলে মানবতার সঙ্গে অপরাধ করা হবে। কিন্তু এই বিষয়ে তেমন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আপনাদের সরকার গঠন হওয়ার পরও ফ্যাসিস্ট রিজিমের মন্ত্রী, এমপি, দালাল পাবলিক সার্ভেন্ট, এলাকার নেতা, পাতি নেতা, মাস্তানদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ পেয়েছে। অনেকে দেশেই আত্মগোপনে থেকে জনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কেন তাদের পালানোর সুযোগ দেওয়া হলো? কেন দেশে থাকা অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে না? বিচারে কোনো অবহেলা বা আপোষ দেশবাসী কোনোদিন ক্ষমা করবে না।’ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে এই পদ্ধতির দাবি জানিয়ে আসছি। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এর পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন। কিন্তু  বিএনপি এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছে। তাদেরকে বলব, ক্ষমতার কেন্দ্রীভবনই স্বৈরাচার জন্ম দেয়। ক্ষমতা যাতে কোনো একক দলের হাতে একীভূত না হয় সেজন্যই পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা যেমন রাজনৈতিকভাবে স্বৈরাচারবিরোধী তেমনি মানসিক ও পদ্ধতিগতভাবেও স্বৈরতন্ত্রবিরোধী। তাই যদি হয়, তাহলে আপনারাও পিআর পদ্ধতির প্রতি সমর্থন জানাবেন বলে আশা করছি।’

ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘স্বৈরাচারের পতনের পর সবারই প্রত্যাশা ছিল, আর যাই হোক আগামীতে যেন আর কোনো স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে সেই বন্দোবস্ত নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, বিএনপি সংস্কারের চেয়ে নির্বাচনকে বেশি প্রধান্য দিচ্ছেন এবং নির্বাচনকেই মূখ্য করে তুলছে। এমনকী সংস্কার কার্যক্রমের বৈধতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলছে।’ বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবে এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া তিনি বলেন, ‘তারাই আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাচ্ছেন, সেই নিশ্চয়তা তারা কোথায় পেলেন? আবার তারা ক্ষমতায় গেলেও জনতার কাঙ্খিত সংস্কার করবেন তার নিশ্চয়তা কি? সেজন্যই আমরা আগে সংস্কার, স্বৈরাচারের উত্থানরোধে সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন তারপরে নির্বাচন আয়োজনের আলাপ তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিপ্লবে অংশ নেওয়া সব রাজনৈতিক দল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সমন্বয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করারও আহ্বান জানান চরমোনাই পীর।