
বিএনপিবিরোধী শক্তিশালী জোট গঠনে তৎপর জামায়াতে ইসলামী। ধর্মভিত্তিক দল ছাড়াও এই জোটের শরিক হতে পারে মধ্যপন্থিরা। গুঞ্জন আছে এনসিপিকে জোটে ভেড়ানোরও। তবে জামায়াতের সভা-সমাবেশে যোগ দেয়াকে নির্বাচনী নয়, বরং সংস্কারেকন্দ্রিক জোট বলছে তরুণদের দলটি। প্রত্যাশিত জোট হলে নির্বাচনে ভালো ফলাফলের আশা জামায়াতের। আর বিএনপির অভিযোগ, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ নানা দাবি তুলে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে।
জুলাই সনদ, ঘোষণাপত্র আর বিচার নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার মধ্যেও দেশের রাজনীতিতে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। চলছে রাজনৈতিক মিত্র বাড়ানোর প্রতিযোগিতা। সভা-সেমিনার আর সমাবেশে শক্তি প্রদর্শনে জমজমাট রাজনীতির মাঠ।
বিএনপি এখনই নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার ইঙ্গিত না দিলেও সমমনা দল ও জোটগুলোকে আস্থায় রেখেছে। মিত্র অনেক দলের নির্বাচনী এলাকায় স্থানীয় বিএনপিকে চিঠিও দিয়েছে দলটি।
অন্যদিকে জামায়াত অনেকটা আটঘাট বেঁধেই নেমেছে। ইসলামী আন্দোলনসহ অন্যান্য ইসলামী দল এবং বেশকিছু মধ্যপন্থি দল নিয়ে জোটের চেষ্টায় দলটি। এরইমধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশে বিএনপিকে দেখা না গেলেও এনসিপি, গণঅধিকারসহ ইসলামী দলগুলোর সরব উপস্থিতির দেখা মিলেছে। রাজনীতির মাঠে চাউর হয়েছে, এসব দল মিলে হতে যাচ্ছে বিএনপিবিরোধী নির্বাচনী জোট।
তবে এটিকে নির্বাচনী জোট নয়, বরং সংস্কারকেন্দ্রিক জোট বলছে এনসিপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, জুলাই সনদ চূড়ান্ত হয়নি। এ কারণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি। নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট হবে কি হবে না সেটার এখনও মেরুকরণ হয়নি। তবে সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির বাইরে অধিকাংশ দল জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি এক প্যারালালে চলে আসছে।
ইসলামী দল ও সমমনাদের নিয়ে শক্তিশালী জোটের ব্যাপারে আশাবাদী জামায়াত। প্রত্যাশিত জোট হলে ভালো ফলাফলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী দলটি।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন,
আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচন করব। তবে এককভাবে জামায়াতে ইসলামী সমমনা দলগুলো নিয়ে সিট সমঝোতার মাধ্যমে এই নির্বাচন করবে। জামায়াত অবশ্যই এবার জনগণের আস্থা পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বিএনপিকে বাইরে রেখে এসব দলের সভা সমাবেশের দাবি দাওয়ার সমালোচনা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তার মতে, পিআরের মতো নানা দাবি তুলে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে।
টুকু আরও বলেন, এ ধরনের সরকার এসে কোনো দিন উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করেনি। তারা জাতীয় নির্বাচন করেছে। এই পিআর করে উনারা পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনরুত্থান করতে চাচ্ছে।তবে এখনই চূড়ান্ত জোটের সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, ইসলামিক দলগুলোর একটা জোট হতে পারে। এনসিপির সঙ্গে জামায়াতের জোট হতে পারে, নাও হতে পারে। কারণ সময় তো এখনও আছে। ক্রমাগত এই ট্রায়ালের মধ্য দিয়েই দেশের রাজনীতি যাবে।৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্তও জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সময়