চীনের কঠোর “শূন্য-কোভিড” নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসার কয়েকদিন পর, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দেশটির সরকার হয়ত শীঘ্রই আরও বড় এমন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে চলেছে, যেমনটি গত তিনবছরে গোটা শহর লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে চীনের স্টেট স্বাস্থ্য প্রশাসন রেকর্ড সংখ্যক স্থানীয় সংক্রমণের খবর জানিয়েছে: ৪৩,২১৮ জন। কেন্দ্রীয় সরকার শূন্য-কোভিড নিয়ন্ত্রণের প্রায় সব বিধিনিষেধ শিথিল করে ১০টি “নতুন পদক্ষেপের” ঘোষণা দেওয়ার মাত্র একদিন পরই সংক্রমণের এমন বিপুল সংখ্যার খবর পাওয়া গিয়েছে।
নতুন বিস্তৃত পদক্ষেপগুলো হালকা উপসর্গ বা উপসর্গহীন মানুষজন ও তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে থাকা ব্যক্তিদের নিজেদের বাসায় আইসোলেশনে থাকার অনুমতি দেয়। আগে এমন মানুষজনকে জোরপূর্বক সরকারী কোয়ারেন্টিন স্থাপনায় নিয়ে যাওয়া হত।
এছাড়াও, কর্মকর্তারা সম্পূর্ণ আবাসিক এলাকাকে “উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ” অঞ্চল হিসেবে আর আখ্যায়িত করতে পারবেন না। নার্সিং হোম, হাসপাতাল, কিন্ডারগার্টেন ও বিদ্যালয় এর মত তথাকথিত “বিশেষ স্থান” ব্যতীত, অন্যান্য আবদ্ধ জায়গায় প্রবেশের জন্য আর স্বাস্থ্যবিধি বা নেগেটিভ কোভিড পরীক্ষাও বাধ্যতামূলক নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোলাবোরেটিং সেন্টার অন ন্যাশনাল অ্যান্ড গ্লোবাল হেলথ ল’ এর পরিচালক, লরেন্স গস্টিন ভিওএ ম্যান্ডারিন-কে এক ইমেইল সাক্ষাৎকারে বলেন, “চীনের অপরিকল্পিত বহির্গমন কৌশলটি ব্যাপক হারে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর একটি ফর্মুলা, যা কিনা প্রতিকারযোগ্য।”
তিনি বলেন যে, তিন বছর ধরে শূন্য-কোভিড নীতিতে থাকার কারণে প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে এবং টিকার বুস্টার ডোজও পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োগ করা হয়নি। এইসব উপাদানের সঙ্গে রয়েছে ভাইরাসটির অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ওমিক্রণ ধরণটি যা কীনা, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ও মৃত্যুর হার দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে, বিশেষ করে বয়োঃবৃদ্ধ ও যাদের দুরারোগ্য ব্যাধি রয়েছে, তাদের মধ্যে।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে উহানে প্রথম রোগটি ছড়াতে আরম্ভ করার সময় থেকেই চীনের শূন্য-কোভিড নীতিটি কোভিডের বিরুদ্ধে দেশটির নেতা শি জিনপিং এর প্রধান প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।