News update
  • ‘With Science, We Can Feed the World of 9.7 Billion by 2050′     |     
  • WHO warns of severe disruptions to health services for funding cuts     |     
  • ICJ hears Sudan’s case accusing UAE of ‘complicity in genocide’     |     
  • Bombardment, deprivation and displacement continue in Gaza     |     
  • Aged and Alone: The hidden pains in old age homes     |     

গরমে বাড়ছে জ্বর-ডায়রিয়া, অসুস্থদের অধিকাংশই শিশু

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রোগবালাই 2024-04-16, 4:29pm

grurturu-4bad1c77aa1666a57f44412311f5590e1713263487.jpg




রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ। প্রখর রোদের পাশাপাশি ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি মিলেছে না কোথাও। অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। তবে ঈদের ছুটিতে চিকিৎসক কম থাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। এ সময়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের অধিকাংশই শিশু।

সোমবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রসহ (আইসিডিডিআর,বি) বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি।

চিকিৎসকরা বলছেন, কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। অনিরাপদ পানি ও খাবার গ্রহণের কারণে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে দেখা গেছে, অনেকে এসেছে জ্বর, সর্দি, হাঁচি-কাশি নিয়ে।

আইসিডিডিআর,বি সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ সময়ে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি থাকে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ পর্যন্ত। তবে বর্তমানে হাসপাতালটিতে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।

হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম বলেন, ঢাকার চেয়ে বরিশাল, পটুয়াখালী, জয়পুরহাট, ফরিদপুরে ডায়রিয়া আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। রমজানে রাস্তার পাশে কেনা খাবার খাওয়া এবং অনিরাপদ পানি পান করায় হয়তো ডায়রিয়া বেড়েছে।

জানা গেছে, রোববার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত একটা থেকে সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে আড়াইশো জনের মতো ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এর আগে গত রোববার ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৩৪ জন, শনিবার ৫২৫, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রোগী ভর্তি হয়েছিল ৫৯৫ জন।

হাসপাতালে সন্তানের চিকিৎসা নিতে আসা শিশু সায়মার মা বলেন, শুরুতে মেয়ের ডায়রিয়া দেখা দেয়। সঙ্গে শুরু হয় জ্বর এবং প্রচণ্ড বমি। ১৫ দিন আগে যখন ডায়রিয়া দেখা দেয়, তখন থেকেই তার জ্বর। তবে মাঝখানে জ্বর ছাড়ে, আবার আসে। এরকম কয়েকদিন হয়েছে। প্রথমে ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয়েছে। এরপর স্থানীয় বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসক দেখিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। সবশেষে যখন দেখছি তার অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না, বরং দিন দিন খারাপ হচ্ছে, তখনই আত্মীয় স্বজনদের পরামর্শে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।

তিনি বলেন, গতকালের তুলনায় আজকে অবস্থা কিছুটা ভালো। ডাক্তার বলেছেন অন্তত ৭ থেকে ১০ দিন এখানে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে।

এরকম শতাধিক শিশু ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে যে পরিমাণ রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি আছেন, ঈদের ছুটি শেষে ঘরমুখো সব মানুষ রাজধানীতে ফিরলে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি।

আইসিডিডিআর,বির অ্যাসিস্ট্যান্ট সাইন্টিস্ট (নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস ডিভিশন) ডা. সারিকা নুজহাত বলেন, এখনো আমাদের হাসপাতালে রোগীর পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে আছে। কিছুদিন যাবত কেবল গরম পড়েছে, আবার ঈদের ছুটিটাও এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। হয়তো আগামী ১/২ সপ্তাহের মধ্যেই রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, যেহেতু গরমটা বেশি, স্বাভাবিকভাবে মানুষ বেশি তৃষ্ণার্ত ও পিপাসার্ত থাকে। আমাদের পরামর্শ হলো যেসব ছোট বাচ্চা বুকের দুধ খায়, তাদের অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এটি বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাছাড়া বাইরের খাবারদাবারে বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার খুবই কম হয়, যার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বড়দের মধ্যে যারা বাইরে কাজ করেন তাদের বেশিরভাগই গরমে পিপাসা মেটাতে বাইরের বিভিন্ন শরবত ও খোলা পানি পান করেন। তাদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো, বাইরের এসব খোলা পানীয় শরবত কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। বাইরে কাজ করতে হলে অবশ্যই বাসা থেকে বিশুদ্ধ পানি বোতলে করে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।

সারিকা নুজহাত আরও বলেন, এখন যেহেতু গরমের সিজন, বাসায় খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। এক্ষেত্রে খাবার সংরক্ষণের দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে। এই গরম নষ্ট, পচা-বাঁশি খাবার কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। এমনকি বাইরের খোলা খাবার পরিহার করতে হবে।

এদিকে ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে লম্বা লাইন। সেখানে নেই বসার ব্যবস্থা। গরমে অসুস্থ শিশুদের নিয়ে বিপাকে অভিভাবকরা। কারও কারও সেবা নিতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে।

শরীয়তপুরের বাসিন্দা আব্দুর কাদের জানান, তার তিন বছর বয়সী সন্তান জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে দু’দিন আগে। তাকে জাজিরা সদর হাসপাতাল নিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশু চিকিৎসক ছুটিতে। তাই বাধ্য হয়ে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। এখানেও সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।  তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।