দিনভর কাজের পর ক্লান্ত হয়ে বিছানায় যখন শুতে যান, সবচেয়ে আরামের ভঙ্গিটিই বেছে নেয় মানুষ। কেউ হাঁটু মুড়ে, বুকের কাছে পা তুলে, কেউ উপুড় হয়ে, কেউ আবার চিত হয়ে শুতে পছন্দ করেন। সেই সময়ে কারও খেয়াল থাকে না, ঠিক কোন ভঙ্গিতে শোয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু হার্টের রোগীদের তা খেয়াল রাখতেই হবে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুসারে, হৃদ্রোগীদের সব সময়ে ডান দিকে ফিরে শোয়া উচিত। একটা সময়ে মনে করা হতো হার্টের রোগ থাকলে বাঁ দিকে ফিরে ঘুমোনো ভাল। এতে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয় না। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, বাঁ দিকে ফিরে শুলে ইলেকট্রোকার্ডিয়োগ্রামের রিডিং ঠিক মতো আসে না। গবেষকেরা হার্টের রোগীদের উপর ভেক্টরকার্ডিয়োগ্রাফি নামে এক ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখেন, যাঁরা ডান দিকে ফিরে ঘুমোন তাঁদের হৃৎস্পন্দনের হার ঠিক থাকে, ইসিজি-র রিডিংও যথাযথ আসে। কিন্তু বাঁ দিকে ফিরে শুলে হার্টের পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণ ও হার্টের ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্তপ্রবাহে কিছু বদল আসে। ফলে ইসিজি-র রিপোর্ট ঠিকমতো আসে না। তা ছাড়া ডান দিকে ফিরে ঘুমোনো হার্টের রোগীদের জন্য নিরাপদ বলেও মনে করা হয়েছে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, যারা চিত হয়ে ঘুমোন, তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উপুড় হয়ে ঘুমোনোর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে মেরুদণ্ডে। পেটে চাপ দিয়ে শোয়ার ফলে শরীরের পুরো ওজনটাই পেটের উপর পড়ে। দীর্ঘ দিন এমন ভঙ্গিতে ঘুমোলে মেরুদণ্ডের ব্যথা ভোগাতে পারে। ঘাড়ের পেশিতেও টান পড়ে। তা ছাড়া হার্টের রোগীরা এই ভাবে দিনের পর দিন শুলে হার্টের পেশির কার্যক্ষমতাও কমে যেতে পারে।
হাতের তলায় নরম বালিশ নিয়ে শোয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। হার্টের রোগ থাকলে এই ভঙ্গিতে শোয়া একেবারেই অনুচিত। এতে স্নায়ুর উপর অত্যধিক চাপ পড়বে। দীর্ঘ ক্ষণ এই ভাবে শুলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হবে।সূত্র: আনন্দবাজার