News update
  • Bangladesh Faces $1.25 Billion Export Loss from US Tariffs     |     
  • Israel Expands Gaza Assault as UN Warns of ‘Genocide’     |     
  • World Ozone Day Highlights Progress and Future Action     |     
  • DG Health Services gives 12 directives to treat dengue cases     |     
  • Stock market shows recovery as investors back: DSE chairman     |     

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: শেষ মুহূর্তে শরীরে আগুন ধরে যায় মাহরিন-মাসুকার গায়ে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক শিক্ষকতা 2025-07-25, 6:47pm

8a06b0302b18b0358c96c8c2c5a65b6c2f2947da86eb258f-1-72adb8583d4ab037ea2c6d351054e4f71753447628.jpg




বলা হয়- শিক্ষকতা মহান পেশা। আর তিনি যদি হন একজন নারী, তবে মিলবে মায়ের মমতা। এসব কিছুই জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেলেন মাইলস্টোন স্কুলের দুই শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী এবং মাসুকা বেগম নিপু।

২১ জুলাই মধ্য দুপুর। দিনের পড়ার পাঠ চুকিয়ে তখন প্রস্তুতি শেষ ঘণ্টা বাজার। এমন সময় আছড়ে পড়ল বিমান, আঘাত হানল স্কুল ভবনে। ঠিক ওই মুহূর্তে ভেতরে ছিল বাবা-মার আদরের সোনামণি শিশু শিক্ষার্থীরা।

সবাই যখন জীবন বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছেন, কেই আবার ব্যস্ত ফোনের ক্যামেরায় সেই ভয়াবহ মুহূর্ত ধরে রাখতে। তখন মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর গতি ঠিক উল্টো দিকে। ক্লাস থ্রির স্কাই, স্কাউটসহ বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যখন আগুন থেকে বাঁচার আকুতি করছে, তখনই মায়ের মত এগিয়ে আসেন মাহরিন।

বিভীষিকাময় সে সময় শিক্ষার্থীদের তিনি বলেছিলেন, ‘‘দৌড়াও। ভয় নেই। আমি আছি।’’

এরই মধ্যে মহরিনের শরীরে প্রায় সব অংশ পুড়তে থাকলেও দমে থাকেনি তিনি। ৮০ শতাংশ পোড়া শরীর নিয়ে একের পর এক শিক্ষার্থীকে বের করেন প্রাথমিকের ইংলিশ ভার্সন ভবন থেকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে এমন করেই তিনি সেদিন বাঁচিয়েছিলেন অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে।

যে বাবা-মা জন্ম দিয়েছিলেন এমন রত্ন, সেই বাবা মায়ের কবরের পাশেই নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার বগুলাগাড়ী গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হন শিক্ষিকা মাহরিন। বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ২ সন্তানের জননী মাহরিন মৃত্যুর আগে তার জীবন সঙ্গীকে বলেছিলেন, ‌‌‘‘ওরা আমান সন্তানের মত, কিভাবে ছেড়ে আসি!’’

মাহরিনের স্বামী মনসুর হেলাল সময় সংবাদকে বলেন, ‘‘বাচ্চারা বলছে, এই মিস (শিক্ষিকা) না থাকলে আমরা বাঁচতাম না। তিনি নিজে পুড়ে আমাদের বাঁচিয়েছেন।’

আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ‘তুমি তো বাঁচার সুযোগ পেয়েছিলে, তাহলে এই কাজটা কেন করলে?’ সে বলে, ‘এই বাচ্চাগুলোও তো আমার বাচ্চা।’ আমি বলেছিলাম, ‘তোমারও তো দুইটা বাচ্চা আছে, আমি আছি- একটু চিন্তা করলে না?’ সে বলে, ‘দেখ, তারাও আমার বাচ্চা।'

কথাগুলো বলার সময় বেদনা, শ্রদ্ধা আর গর্বে মনসুরের কণ্ঠ বার বার কেপে উঠছিলো।

মর্মান্তিক ওই ঘটনায় জীবন দেয়া আরেক শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপু। ১৫ বছর আগে মাকে হারিয়ে আপন করেছিলেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের। সেদিন তিনিও ছিলেন হায়দার আলী ভবনে। কমলমতি শিক্ষার্থীদের আকুতি উপেক্ষা না করে মানবতায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন এ মহান শিক্ষিকা। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও নিরাপদে আশ্রয়ে পাঠান শিক্ষার্থীদের। রক্তের না হোক, শিক্ষার্থীদের সাথে তার সম্পর্ক ছিল আত্মার। শরীরে আগুন ধরলেও শেষ সময় পর্যন্ত লড়ে যান প্রাণপণে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মাসুকা বেগম নিপুর মরদেহ তার বোনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে দাফন করা হয়।

শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষিকা মাহরিন এবং মাসুকারা মরে না। তারা ফিরে আসে বার বার। মানবতার জন্য, কল্যাণের স্বার্থে।