ইসরাইলি বাহিনী যেকোনো সময় হামাস-শাসিত অঞ্চলে আগ্রাসন চালাতে পারে- এমন সতর্কতার মধ্যে ইসরাইল রাতভর গাজা উপত্যকায় আরো বিমান হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার ইসরাইল বলেছে, তারা উত্তরাঞ্চলীয় শহর কিরিয়াত শমোনা খালি করার পরিকল্পনা করছে। আর, যাদের সরিয়ে নেয়া হবে, তাদেরকে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালত গেস্ট হাউজে রাখা হবে। কিরিয়াত শমোনা হলো লেবানন লাগোয়া ইসরাইল সীমান্তের কাছে অবস্থিত শহর। সেখানে ফিলিস্তিনি জঙ্গিরা বারবার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
গাজায় হাসপাতালে হামলায় মৃতের সংখ্যা কমে এখন ১০০-৩০০ এর মধ্যে বলে জানা গেছে। গাজায় স্থল আক্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকতে সেনা সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
জেরুজালেমে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগকে বলেছেন, ব্রিটেন ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের পাশে আছে। ঋষি সুনাক গাজার বাসিন্দাদের সহায়তা প্রদানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, “হামাস-এর কৃতকর্মের শিকার হয়েছে ফিলিস্তিনিরা।”
১,৪০০-র বেশি ইসরাইলি এবং ৩,৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট দেশটির কয়েক হাজার স্থল সেনাকে গাজা উপত্যকায় আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন।
৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর, সীমান্তে ৩ লাখ বা এর বেশি সেনা সমাবেশ করেছে ইসরাইল। ওই হামলায় নিহত হয় ১৪০০ মানষ; এদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
গ্যালান্টের বক্তব্যের পরপর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সীমান্তের কাছে সেনাদের সাথে নিজের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। এতে তিনি বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।
ইসরাইল সফরকালে বাইডেন মিশর-নিয়ন্ত্রিত রাফাহ সীমান্ত পথ দিয়ে গাজায় সহায়তা পাঠানোর অনুমতি দেয়ার জন্য ইসরাইল এবং মিশরের মধ্যে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন। চুক্তির আওতায়, জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর অধীনে ২০ ট্রাক ত্রাণ-সামগ্রী গ্রহণ এবং পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হবে। প্রথম চালান নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর পর, সেখানে যাওয়ার জন্য কয়েক ডজন ট্রাক অপেক্ষমান রয়েছে।
বাইডেন সতর্ক করেছেন যে হামাস যদি ত্রান-বহর আটকে দেয় বা দখল করে নেয় তবে “তারা শেষ হয়ে যাবে।”
বাইডেন তার সফরের সময় ফিলিস্তিনিদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ১০ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা করেন।
হামাসকে লেবানন-ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সাহায্য করলে এবং ইসরাইলের সাথে সংঘাত শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলে, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইলের সেনাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যোগ দেবে; গণমাধ্যমের এমন খবর নাকচ করে দিয়েছেন বাইডেন।
গাজার বিস্ফোরণের জন্য কে দায়ী; এ বিষয়ে বাইডেন ইসরাইলের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। ওই বিস্ফোরণে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে; আর, এর ফলে, ওই অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়।
বাইডেন বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি, তার ওপর ভিত্তি করে মনে হচ্ছে, গাজায় অবস্থানরত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বারা ভুল করে ছোঁড়া রকেটের ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।”
ইসরাইল বলেছে, রকেটটি ছুঁড়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ। তবে, জঙ্গি গোষ্ঠীটি এই দায় অস্বীকার করেছে।
বাইডেন ইসরাইলকে তাদের আত্মরক্ষার জন্য যা প্রয়োজন, তা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে, তিনি ইসরাইলকে প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষেত্রে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।
হাসপাতালে বিস্ফোরণের ঘটনা, লেবানন,ইরান,তিউনিসিয়া এবং তুরস্কসহ মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সেখানে বিক্ষোভকারীরা বিস্ফোরণের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।