News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

ইরানে কাসেম সোলাইমানির সমাধির কাছে বিস্ফোরণ, নিহত কমপক্ষে ৯৫

গ্রীণওয়াচ ডেক্স সংঘাত 2024-01-04, 4:16pm

d11feb00-aab0-11ee-92d7-154d86fc1907-31990bd1ba36f3b721fb8de71615b7ea1704363393.jpg




ইরানের জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার চতুর্থ বার্ষিকীতে তার সমাধির কাছে দুটি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৯৫ জন নিহত হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম নিশ্চিত করেছে।

কেরমান শহরে সাহেব আল জামান মসজিদের কাছে একটি মিছিলে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বহু মানুষ আহত হয়েছে।

ভিডিওগুলোতে দেখা যায় রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে আছে এবং অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যাচ্ছে ঘটনাস্থলে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই ‘সন্ত্রাসী হামলা’র সমুচিত জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

দেশটির গত ৪২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই বিস্ফোরণের ঘটনার দায় তাৎক্ষনিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি।

নিহতের সংখ্যা প্রথমে ১০৩ জন বলে জানানো হয়েছিলো। পরে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছি কয়েকটি নাম ভুলক্রমে দুবার নিবন্ধিত হয়েছে।

এ ঘটনার জন্য আরব বিচ্ছিন্নতাবাদী কিংবা ইসলামিক স্টেট বা আইএস এর মতো সুন্নি জিহাদি গ্রুপগুলোকে সন্দেহ করা হতে পারে। দেশটিতে এসব গোষ্ঠী গত কয়েক বছরে বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কয়েকটি হামলা করেছিলো।

চার বছর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারির শুরুতে ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী সেনা অধিনায়ক কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়।

ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হবার আগে মি. সোলাইমানিকে ইরানে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার পরই অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

সর্বশেষ বুধবারের হামলা এমন সময় হলো যখন ইরান সমর্থিত ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের একজন নেতাকে লেবাননে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় হত্যার পর ওই অঞ্চল জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

যেভাবে হামলা

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টিভিতে যে ফুটেজ দেখানো হচ্ছে বিস্ফোরণ যখন হয় তখন মিছিলকারীরা কাসেম সোলাইমানিকে নিয়ে তৈরি করা ব্যানার বহন করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

এরপর লোকজনের চিৎকার শোনা যায়। একটি বিস্ফোরণের পর লোকজনকে ভয়ে ও আতংকে ছুটোছুটি করতে দেখা যায়।

কেরমান শহরের পূর্বাঞ্চলে সাহেব আল জামান মসজিদের কাছে কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় প্রথম বোমাটি বিস্ফোরিত হয় স্থানীয় সময় বেলা তিনটার দিকে।

এরপর পনের মিনিট পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এক কিলোমিটার দূর থেকে।

কেরমান প্রদেশের গভর্নর রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়াকে বলেছেন দুটি বিস্ফোরণই সিকিউরিটি চেকপয়েন্টগুলোর বাইরে হয়েছে এবং এগুলো বোমা ছিলো বলেই কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয়েছেন।

তবে এসব বোমা দূর নিয়ন্ত্রিত ছিলো নাকি আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা ঘটিয়েছে সেটি এখনো পরিষ্কার নয় বলে জানান তিনি।

ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সহযোগী কট্টরপন্থী সংবাদ সংস্থা তাসনিম সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘দুটি ব্যাগে করে আনা বোমা’ কার্যত ‘রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটানো’ হয়েছে।

“আমরা কবরস্থানের দিকে যাচ্ছিলাম। এমন সময় একটি গাড়ি এসে হুট করে আমাদের পেছনে দাঁড়ায় এবং ময়লার বাক্সে করে আনা বোমা বিস্ফোরিত হয়,”একজন প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে ইসনা বার্তা সংস্থা।

“আমরা শুধু বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি আর লোকজনকে পড়ে যেতে দেখেছি”।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রী বাহরাম ইউনোল্লাহি বলেছেন, ৯৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও ২১১ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জনের অবস্থা গুরুতর।

ইরান রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, নিহতদের মধ্যে একজন স্বাস্থ্যকর্মীও আছেন যিনি প্রথম বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ ভাহিদ বলেছেন, দ্বিতীয় বিস্ফোরণেই বেশিরভাগ মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে।

একই সঙ্গে হামলার সঙ্গে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার সন্ধ্যায় আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এক বিবৃতিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেন।

“শয়তান ও ইরানের শত্রুরা আরও একটি দুর্যোগের জন্ম দিয়েছে এবং কেরমানে অনেক মানুষকে শহীদ করেছে,” বিবৃতিতে বলেন তিনি।

“যাদের হাতে নিষ্পাপ মানুষগুলোর রক্ত লেগে আছে বা যেসব খারাপ মানুষগুলো এ নিষ্ঠুরতার জন্য দায়ী তাদের শিগগিরই যথাযথ শাস্তি দেয়া হবে। তাদের জানা উচিত এই দুর্যোগ আল্লাহর ইচ্ছায় সমুচিত জবাবে পরিণত হবে,” বলেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ‘ইরান বিদ্বেষী অপরাধী এবং সন্ত্রাস ও অন্ধকারের ভৃত্যদের পরিচালিত বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা’কে কাপুরোষচিত বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ইরানে সাবেক ব্রিটিশ দূত রব ম্যাকাইর বিবিসিকে বলেছেন, কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা পরিষ্কার নয়।

“সেখানে অনেক বিরোধী গোষ্ঠী আছে যাদের এসব ঘটানোর সামর্থ্য আছে। আমার মনে হয় না এটা সরকার বিরোধী কোন হামলা, কিন্তু এটা উত্তেজনা বাড়িয়ে দেবে।”

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি শোকাহত পরিবার, ইরানের জনগণ ও সরকারের প্রতি তার সমবেদনা জানিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন হামলার নিন্দা করে ইরানের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে।

লেবাননের হিজবুল্লাহ আন্দোলনের নেতা বলেছেন ‘সোলাইমানির পথ অনুসরণ করে একই রাস্তায় ও একই কারণে এই মানুষেরা শহীদ হলো’।

রিভলিউশনারি গার্ডের বিদেশের মাটিতে অভিযান পরিচালনার শাখা দ্য কুদস ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে সোলাইমানিকে পুরো অঞ্চল জুড়ে ইরানী নীতির স্থপতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ২০২০ সালে ড্রোন হামলার মাধ্যমে মি. সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়।

মি. ট্রাম্প সোলাইমানিকে ‘বিশ্বের যে কোন প্রান্তের জন্য শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে’ উল্লেখ করে বলেছিলেন, তার বাহিনী দুই দশক ধরে শত শত আমেরিকান বেসামরিক নাগরিক ও কর্মকর্তাদের হত্যার জন্য দায়ী।

ইরান সরকার ওই ঘটনাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ উল্লেখ করে এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে এবং মি. ট্রাম্প কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করে। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা