News update
  • Aid blockade into second month: Misery deepens for Gazans     |     
  • UN peacekeeping challenged as conflicts and ceasefires grow more complex     |     
  • IG of Police warns against vandalism, orders arrest     |     
  • NBR to chase TIN holders who fail to submit tax returns     |     
  • ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)-এর পরিচালনা পরিষদের ১৭তম সভা অনুষ্ঠিত     |     

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সীমান্তরক্ষীর সংখ্যা বেড়ে ৫৮

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংঘাত 2024-02-04, 11:53pm

iudaoi-d1ecf4ee923a90892c78d983df07c4be1707069185.jpg




বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এখনও পর্যন্ত ৫৮ জন সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। তারা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পালিয়ে এসেছেন।

বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ বা বিজিবি'র সদর দপ্তরের কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, রবিবার রাত পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৫৮জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

তাদের অস্ত্র ও গুলি বিজিবির কাছে জমা রাখা আছে। রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির পরিমাণ কিছুটা কমেছে বলে নিশ্চিত করেছে বিজিবি।

ঘুমধুম সীমান্তে বিজিবি ৩৪ ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল আশরোকি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যারা আসছে তারা মূলত মিয়ানমারের সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্য। তাদেরকে আমরা কর্ডন করেছি।"

"তাদেরকে ডিসআর্ম করেছি। অস্ত্র আলাদা করেছি এবং তাদেরকে আমরা নিরাপদ স্থানে রেখেছি।"

তাদের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক প্রচলিত বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান মি. চৌধুরী।

রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে বলেন, "তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দিবো আমরা। এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।"

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধ জোরালো করেছে আরাকান আর্মিসহ কয়েকটি গোষ্ঠী। তারা সম্মিলিতভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এর মধ্যেই কোনও কোনও সীমান্ত শহর দখল করে নিয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বিবিসি বাংলাকে বলেন, “এরই মধ্যে আজ তুমব্রুতে একজন আহত হয়েছেন। সেখানে পাঁচটি প্রাথমিক স্কুল ও একটি মাদ্রাসা বন্ধ রাখা হয়েছে।”

মিয়ানমারের সংঘর্ষের গুলি এসে পড়েছিলো বাংলাদেশের এই চাকমা পল্লীতে

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সকাল থেকেই খারাপ অবস্থা। সীমান্তের ওইপাশ থেকে গোলাগুলির শব্দ আসছে।

শনিবার গুলির আঘাতে বান্দরবানের একটি সিএনজিতেও গুলি লাগে। তুমব্রুতে একজন আহত হয়েছে এবং বাইশফাঁড়ি সীমান্তের কাছে একজনের বাড়িতে গোলা পড়েছে।

মিয়ানমারের ভেতরে গত কয়েক সপ্তাহ যাবত চলা সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় আগেই সতর্কতা বাড়িয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশে কক্সবাজারের টেকনাফ এবং বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় গত সপ্তাহ থেকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোলাগুলি ও মর্টার শেল ছোঁড়ার শব্দ শুনছেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।

সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের কয়েকটি বাড়িতে গুলি এসে পড়েছে বলেও জানাচ্ছেন তারা।

মিয়ানমারে যেখানে এসব সংঘাত চলছে, তা বাংলাদেশের সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায় তুমব্রু ও টেকনাফ সীমান্তে এরই মধ্যে সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছে কক্সবাজার এবং বান্দরবানের জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গত অক্টোবরে আরাকান আর্মি সামরিক বাহিনী বিরোধী সশস্ত্র জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অংশ হিসেবে ব্যাপকতর লড়াইয়ে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেয়। তারা ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম্যে চাপে থাকা সেনাবাহিনীর ওপর সিরিজ আক্রমণ শুরু করে।

এরপর গত ১১ সপ্তাহে চীনের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন অংশে জোটের হাতে পর্যুদস্ত হয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

সর্বশেষ গত শনিবার দেশের আারেকপ্রান্তে ভারত-ঘেঁষা পালেতোয়া শহরের মিওয়া ঘাঁটির শেষ সেনাচৌকিটি দখলে নেয় আরাকান আর্মি। ২০২০ সালে একবার এই ঘাঁটিই ৪২ দিনের টানা লড়াইয়ের পর দখল করতে ব্যর্থ হয় তারা।

ইতিমধ্যে এসব এলাকা থেকে কয়েকশত মিয়ানমারের সৈনিক পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। তবে বাংলাদেশে প্রবেশের ঘটনা এবারই প্রথম ঘটলো।

নাইক্ষংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু হেডম্যান পাড়া চাকমাপল্লীর অবস্থান সবচেয়ে কাছাকাছি। মিয়ানমার সীমান্তের কাঁটাতার ঘেঁষা এই পল্লীতে ২৭ টি পরিবারের বসবাস।

মিয়ানমারের চলমান ঘটনার প্রেক্ষাপটে এই পল্লীর বাসিন্দারা রাতে পালা করে জেগে থেকে পাহারা দিচ্ছেন।

মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এর বড় একটা অংশই পড়েছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ এবং বান্দরাবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়।