News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

ইসরায়েলের চার জিম্মি উদ্ধার অভিযান, শত শত ফিলিস্তিনি নিহত

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংঘাত 2024-06-09, 10:12am

rdsgsdgsd-a93c5e1275ed1f821b998e3dcf490e641717906323.jpg




ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ৭ অক্টোবর হামাসের সন্ত্রাসী হামলার সময়ে পণবন্দিদের মধ্যে চারজনকে শনিবার ইসরায়েলি সৈন্যরা উদ্ধার করার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতেনিয়াহু বলেন ইসরাইল সন্ত্রাসের কাছে হারবে না।

নেতেনিয়াহু বলেন, “ ইসরায়েল সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে না। আমরা এটা চলতে দেবো না যে অবধি না আমাদের মিশন সম্পন্ন হচ্ছে এবং সব পণবন্দিকে আমরা ঘরে ফিলিয়ে আনতে পারছি, জীবিত ও মৃত সকলকেই। তিনি এই উদ্ধার অভিযানের পর তাঁর দপ্তরের সিচিউশান রুমে এই বক্তব্য রাখেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গালান্ট বলেন শনিবারের এই উদ্ধার অভিযানটি ছিল কঠিন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “ আমাদের সৈন্যরা গাজায় শাহরিক পরিবেশে প্রচন্ড গোলাগুলির মধ্যে এই অভিযান চালিয়ে অত্যন্ত সাহস দেখিয়েছে”।

গালান্ট এটিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় তাঁর ৪৭ বছরের চাকরিতে তার দেখা অভিযানগুলির মধ্যে অন্যতম, “সাহসী ও অসামান্য অভিযান”বলে অভিহিত করেন।

রয়টার্স জাণিয়েছে গাজার নুসেইরাতে এই উদ্ধার অভিযানের সময়ে বিমান আক্রমণে কম করেও ২১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪০০ জন আহত হন। এলাকাটি বিপুল জনসংখ্যা অধ্যূষিত। স্থানীয় চিকিত্সা কর্মকর্তারা এই ঘটনাকে যুদ্ধ শুরু হবার পর সব চেয়ে রক্তক্ষয়ী বলে বর্ণনা করেন।

যদিও রয়টার্স এই ঘটনার সত্যতা তাত্ক্ষণিক ভাবে যাচাই করতে পারেনি, সামাজিক মাধ্যমগুলির ছবিতে এই ভয়াবহতা ধরা পড়েছে।

একজন প্যারামেডিক ও নুসেইরাতের অধিবাসী যিনি কেবল তার নামের প্রথম অংশ জিয়াদ বলে জানান, তিনি বলেন “এ যেন ভয়ের চলচ্চিত্রের মতো কিন্তু এতো ছিল বাস্তব ধ্বংসযজ্ঞ। ইসরায়েলের ড্রোন ও যুদ্ধবিমানগুলি ইচ্ছেমতো সারা রাত লোকজনের বাড়িতে এবং যারা সেখান থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল তাদের উপর আক্রমণ চালায়।

তিনি রয়টার্সকে একটি মেসেজিং অ্যাপের মাধমে জানান যে এই বোমা হামলায় একটি স্থানীয় বাজারকে এবং আল আওদা মসজিদকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়।

তিনি বলেন চার জনকে মুক্ত করতে তারা ডজন ডজন নিরাপরাধ অসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন যে একটি আবাসিক এলাকার কেন্দ্রস্থলে গোলাগুলির মাধ্যমেই এই উদ্ধার অভিযান চালানো হয় । তিনি বলেন সেখানেই গাজার অসামরিক জনগণের মধ্যে হামাস বন্দিদের লুকিয়ে রেখেছিল আর এই সশস্ত্র জঙ্গিরা তাদের পাহারা দিচ্ছিল।

হাগারি বলেন ইসরাইলি বাহিনী পাল্টা গুলি চালায় , বিমািন আক্রমণও চালায় । পুলিশের একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এই অভিযানের সময়ে একজন ইসরায়েলি সৈন্যও নিহত হয়।

পণবন্দিদের পরিবারের সদম্যরা সদ্যমুক্তি প্রাপ্ত পণবন্দিদের দেখেতে রামাত গানে একটি হাসপাতালের দিকে যাচ্ছেন।

পণবন্দিদের পরিবারের সদম্যরা সদ্যমুক্তি প্রাপ্ত পণবন্দিদের দেখেতে রামাত গানে একটি হাসপাতালের দিকে যাচ্ছেন।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, নোয়া আরগামানি (২৫), আলমগ মেইর জান (২১), আন্দ্রে কোজলভ (২৭) ও শ্লোমি জিভ-কে (৪০) এই চারজনকে তারা উদ্ধার করেছে। নুসেইরাতে দিনের বেলা এক জটিল ও বিশেষ অভিযান চালিয়ে এদের উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী আরও বলেছে, নুসেইরাতের কেন্দ্রস্থলে দুটি জায়গা থেকে জিম্মিদের উদ্ধার করা হয়।

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, “ আমাদের জনগণ আত্মসমর্পণ করবে না এবং এই অপরাধী শত্রুর বিরুদ্ধে আমাদের নিজেদের রক্ষা করার অধিকারের জন্য প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে”। আরেক জন হামাস কর্মকর্তা বলেন আট মাস আগে যুদ্ধ শুরু হবার পর ইসরায়েলের মাত্র চারজন পণবন্দিকে মুক্ত করা , “অর্জন নয়, ব্যর্থতারই চিহ্ন”।

হামাস আরও বলে তাদের হাতে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক পণবন্দি রয়েছে এবং এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এই উদ্ধার অভিযান এমন এক সময় চালানো হলো যখন গাজায় অসামরিক লোকজনের সুরক্ষার জন্য ইসরায়েলের উপর আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে।

অস্ত্রবিরতির জন্য চাপ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় জীবিত চারজন ইসরায়েলি পণবন্দিকে স্বাগত জানান। প্যারিসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন তিনি তার স্বাগতিক দেশের সঙ্গে মিলে পণবন্দির প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানাই। “আমরা ততদিন অবধি কাজ করে যাবো যতদিন না সব পণবন্দি ঘরে ফিরে আসছেন এবং অস্ত্রবিরতি হচ্ছে।

শনিবার এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসও আমেরকান নাগরিকসহ অবশিষ্ট সব পণবন্দির মুক্তি নিশ্চিত করতে সকল প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি নতুন রোড ম্যাপ প্রস্তাব করার পর নভেম্বরে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির পর সংঘাতটিতে প্রথম যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করার সর্বসাম্প্রতিক প্রচেষ্টা শুরুর এক সপ্তাহ পরে স্থবির হয়ে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে।

নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যুদ্ধ শেষ করার জন্য চাপের মুখে বাইডেন বলেন, তিনি ছয় সপ্তাহের জন্য লড়াই বন্ধ করার জন্য পরিকল্পনা করেন। আর ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ের জিম্মি মুক্তির ও প্রস্তাব দেয়া হয়।

এই পরিকল্পনায় গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণ জোরদার করারও কথা রয়েছে।

বিশ্ব শক্তির জি -সেভেন গ্রুপ এবং আরব রাষ্ট্রগুলি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে। সাথে ১৬ জন বিশ্বনেতা হামাসকে চুক্তিটি মেনে নেওয়ার জন্য বাইডেনের আহ্বানে যোগ দিয়েছেন।

হামাস এখনও বাইডেনের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। ইসরায়েল আলোচনার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তবে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটিকে ধ্বংস করতে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে।

প্রধান মতবিরোধের বিষয়গুলির মধ্যে হামাসের একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলের পূর্ণ প্রত্যাহারের উপর জোর দেওয়ার দাবি রয়েছে, যেই দাবিগুলো ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।

একটি নতুন কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তার অষ্টম মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইসরায়েল এবং প্রধান আঞ্চলিক অংশীদার মিশর, জর্ডান এবং কাতার সফরে যাচ্ছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষ কূটনীতিক "হামাসকে দেওয়া প্রস্তাবটি গ্রহণ করার গুরুত্বের উপর জোর দিবেন" যাতে "ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি উভয়েরই উপকার হবে।" ভয়েস অফ আমেরিকা