News update
  • Israel says Gaza ceasefire delayed      |     
  • TikTok shuts down US access     |     
  • Gaza ceasefire: Gazans hope to return to their ruined homes     |     
  • ‘Lebanon is on the cusp of a more hopeful future’: UN chief      |     
  • Ziaur Rahman's 89th birth anniversary today, BNP programs      |     

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে আজ, নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি 

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংঘাত 2025-01-19, 10:04am

erewrewrqw-99a58bd966e1e78862b9f2702051207b1737259482.jpg




দীর্ঘ ১৫ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে মৃত্যুপুরীতে পরিণত গাজায় অবশেষে কার্যকর হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি। কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূ-খণ্ডটিতে যুদ্ধবিরতি টানতে সম্মত হয়েছে হামাস-ইসরায়েল। বহু প্রতীক্ষার পর উৎকণ্ঠাহীন ঘুমের স্বপ্ন দেখছে নিরীহ গাজাবাসী। তবে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগেই ভয়াবহ এক হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

তিনি বলে রেখেছেন, গাজার এই ‘যুদ্ধবিরতি সাময়িক’ এবং ‘অভিযান এখনো শেষ হয়নি’। এমনকি আগামীকাল মার্কিন মসনদে বসতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাকে এ ব্যাপারে সমর্থন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। খবর বিবিসির।

ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার অনুমোদনের প্রেক্ষিতে রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে গাজায় কার্যকর হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি। মূলত ফিলিস্তিনি বন্দি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির শর্তে এ যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। এ চুক্তির মাধ্যমে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরা চলা ইসরায়েলি গণহত্যা অন্তত ছয় সপ্তাহের জন্য থামতে পারে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে। এর অধীনে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। সেখানে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

তৃতীয় ধাপে নিহত জিম্মিদের মরদেহ ইসরায়েলের কাছে ফেরত দেওয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।

এদিকে ইসরায়েলি মন্ত্রীসভায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন পেলেও ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এ বৈঠকে চুক্তির ঘোর বিরোধিতা করেছেন ৮ জন কট্টরপন্থী মন্ত্রী। বিরোধিতাকারীদের মধ্যে আছেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতমার বেন গভির ও অর্থ মন্ত্রী বেজালেল স্মৎরিচও। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরে অনুমোদন দিলেও গাজায় ভবিষ্যতে আরও ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞ শুরুর ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন বক্তৃতায় নেতানিয়াহু বলেন, এই ‘যুদ্ধবিরতি সাময়িক’ এবং ‘অভিযান এখনো শেষ হয়নি’। আবার গাজায় হামলা চালানোর অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, উভয়ে সমর্থন করবেন। আমরা যদি আবার হামলা শুরু করি, তা হবে আরও জোরালো।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছি। হামাস বর্তমানে ‘সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ’। এই বক্তৃতার আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, জিম্মিদের মধ্যে কাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, হামাসের সেই তালিকা আমাদের হাতে না আসা পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি করবে না। চুক্তির লঙ্ঘন সহ্য করবে না ইসরায়েল।

ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে যে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত তালিকার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষগুলো বলছে, রোববার যে তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তাদের নাম এখনো পাননি তারা।

যুদ্ধবিরতির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ১ হাজার ৮৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এই ধাপে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দেওয়া হবে। অবশ্য, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, এই ধাপে অন্য সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিনিময়ে আরও ফিলিস্তিনিকে কারাগার ও বন্দিশালা থেকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।

উল্লেখ্য, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পরও গাজায় এখন পর্যন্ত বন্ধ হয়নি ইসরায়েলি আগ্রাসন। দখলদার বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৭ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই হামলা-অভিযানে আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে গত ১৫ মাসে নিজেদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন গাজার ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে জীবন যাপন করতে হচ্ছে ভূ-খণ্ডটির প্রত্যেক বাসিন্দাকে। আরটিভি