
সিরিয়ার একাধিক শহরে ফের তীব্র রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য মতে, এতে একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আরও অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদন মতে, আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) লাতাকিয়া, তারতুস ও জাবলেহ শহরে বিক্ষোভকালে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষমতাচ্যুত একনায়ক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সশস্ত্র বাহিনীর আটক সদস্যদের মুক্তি এবং চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে তারতুস ও লাতাকিয়ায় শিয়া ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘু আলাওয়ি সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
লাতাকিয়ায় আজহারি চত্ত্বরে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তারতুসে বানিয়াস পুলিশ স্টেশনে হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে অজ্ঞাত হামলাকারীরা। এতে দুইজন সেনা সদস্য আহত হন। তবে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি সিরীয় কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গত বছরের (২০২৪) ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের আক্রমণে বাশার আল-আসাদের পতন ঘটে। এরপর সাবেক আল কায়েদা নেতা আহমেদ আল শারার নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় এলেও শান্তি ফেরেনি। গত এক বছরে দেশটিতে বেশ কয়েকটি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
গত শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সিরিয়ার হোমস শহরে ওয়াদি আল-দাহাব এলাকার ইমাম আলী বিন আবি তালিব মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় আটজন নিহত হয়। ওই ঘটনার দু’দিন পর আজ রোববার দেশটির উপকূলীয় ও মধ্যাঞ্চলে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়।
দেশজুড়ে এই বিক্ষোভের ডাক দেন প্রবাসে থাকা আলাউয়ি ইসলামিক কাউন্সিলের প্রধান গাজাল গাজাল। প্রবাসী নেতার ডাকে লাতাকিয়া, তারতুস ও জাবলেহ শহরে রাস্তা নামেন অনুসারীরা। এ সময় তাদের হাতে গাজালের ছবি ও তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে লেখা ব্যানার দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডে ‘সাম্প্রদায়িক বক্তব্য’ বন্ধের দাবিও জানানো হয়।
৪০ বছর বয়সি গৃহিণী হাদিল সালহা বলেন, ‘আমাদের প্রথম দাবি রক্তপাত বন্ধ করার জন্য শিগগিরই ফেডারেল ব্যবস্থা চালু করা। কারণ আলাউইতদের রক্ত সস্তা নয়, সাধারণ সিরীয়দের রক্তও সস্তা নয়। আমরা আলাউয়ি বলেই আমাদের হত্যা করা হচ্ছে।’
লাতাকিয়ায় অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের একজন আলোকচিত্রী জানিয়েছেন, তিনি সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের আলাউয়ি বিক্ষোভকারীদের দিকে পাথর ছুঁড়তে দেখেছেন। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের একটি দল প্রতিপক্ষের এক বিক্ষোভকারীকে মারধর করে।
এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে এবং উড়ো ফায়ার করে। এতে বিক্ষোভকারীরা হতাহত হন। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।