News update
  • US Faces Pressure as UN Votes on Gaza Ceasefire     |     
  • Prof Yunus includes 4 political leaders in UNGA tour del     |     
  • Tarique calls for vigilance to prevent troubles during Puja     |     
  • Parties divided on constitution order move over July Charter     |     
  • Khulna’s ‘white gold’ shrimp eyes Tk 22,600cr export goal     |     

রোজার মাসে কীভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক স্বাস্থ্য 2024-03-14, 5:05am

dd4654d0-df91-11ee-92c9-235855c3f215-11e4924b930f04eaeb494a6080c848911710371145.jpg




ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান মাস হলো আধ্যাত্মিক এবং শারীরিক পরিশুদ্ধির মাস। তারা ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থেকে এই পরিশুদ্ধি লাভের চেষ্টা করে।

রমজান মূলত ভালো কিছু করার প্রতিশ্রুতি, নিজেকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার ও গভীরভাবে ধর্মীয় রীতিগুলো চর্চার মাস।

রোজা পালনের মাধ্যমে একজন মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন অংশের দারিদ্র্য, বঞ্চনা এবং দুর্ভিক্ষের মধ্যে বসবাস করা লাখ লাখ মানুষের কষ্ট এবং বেদনা সম্পর্কে সচেতন হতে পারে।

তবে একটানা লম্বা সময় পর্যাপ্ত পানি পান না করা, অনিয়মিত ঘুম এবং দুর্বল পুষ্টি আপনার শরীর এবং ত্বকের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ড. মুনিব শাহ যিনি টিকটকে ডার্ম ডক্টর হিসাবে ব্যাপক পরিচিত, তিনি এই পবিত্র মাসে রোজাদারদের ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিবিসি এশিয়ান ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্কের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে মি. শাহ বলেছেন, “যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন আমার তেমন একটা দক্ষিণ এশীয় বন্ধু বা মুসলিম বন্ধু বা রোজাদার বন্ধু ছিল না।”

সোশ্যাল মিডিয়ার ড. শাহ তার প্রথম টিকটক ভিডিও স্ট্রিম করেন ২০২০ সালে। এরপর থেকে টিকটকে তার ফলোয়ারের সংখ্যা এখন ১৮ মিলিয়ন অর্থাৎ এক কোটি ৮০ লাখেরও বেশি এবং বর্তমানে এই প্ল্যাটফর্মে তিনিই একমাত্র চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ যার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ফলোয়ার রয়েছে।

ডা. শাহ বিবিসির সাথে তার সাক্ষাৎকারে ত্বকের যত্নের বিষয়ে প্রচলিত বিভ্রান্তিকর ধ্যান ধারণা বা মিথগুলো দূর করার চেষ্টা করেছেন।

সেইসাথে রমজান মাসে রোজা রাখা যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে তার উপর আলোকপাত করেছেন।

তিনি বলেছেন, “অনেক চর্মরোগ, যেমন সোরিয়াসিস এবং ব্রণ, সবই সংক্রমণের কারণে হয় এবং কিছু গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে রমজান মাসে যারা রোজা রাখেন তাদের মধ্যে সোরিয়াসিসের মতো রোগের তীব্রতা অনেকটাই কমে যায়।”

তাহলে রমজান মাসে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য ড. শাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস কী কী?

একটি চমৎকার দিক হলো, আপনি বিশ্বের যেখানেই থাকুন না কেন, আপনি এমন লোকদের খুঁজে পেতে পারেন যারা আপনার মতো বা এর কাছাকাছি অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যায়।"

ত্বকে স্বাস্থ্যকর পানির ভারসাম্য বজায় রাখা

রোজা রাখার সময়, ত্বক সহজেই আর্দ্রতা হারাতে পারে এবং এতে ত্বকে পানির মাত্রা কমে যায়।

তাই রমজানে যারা রোজা রাখেন তাদেরকে ডা. শাহ, এমন কিছু পণ্য ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন যা ত্বককে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করবে।

“দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং নামাজের আগে ওজু করার সময় কিছু কিছু মানুষের ত্বক বিশেষ করে যারা শুষ্ক ত্বকের অধিকারী তাদের ত্বক বার বার ধোয়ার ফলে আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে,” তিনি বলেছেন।

“তাই প্রতিবার মুখ ধোয়ার পরে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করা উচিত, কারণ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, না হলে এটি প্রোটেকটিভ স্কিন ব্যারিয়ার বা ত্বকের সুরক্ষা প্রাচীরকে সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।”

সুষম খাবার খান

“কেউ কেউ আমাকে জানান যে রমজানে তাদের ত্বকের অবস্থা খারাপ হয়ে যায় কারণ এই মাসে তাদের খাদ্যাভ্যাস নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হয়, কেননা এই মাসজুড়ে তারা সারাদিন রোজা রাখার পর খাবার খায়,” ড. শাহ ব্যাখ্যা করেন।

সেহরিতে যখন খাবার খাওয়া অনুমোদিত তখন পুষ্টিকর খাবার না খেয়ে শুধু চর্বিযুক্ত খাবার খেলে সেটি ত্বকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ড. শাহ উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, রোজাদারদের রোজা ভাঙার সময় সেইসব খাবার খাওয়া উচিত যা তিনি খেতে উপভোগ করেন।

তবে সেই খাবার পরিমিত হারে খাওয়ার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন তিনি।

“ভাজা খাবার খেলেই যে ব্রণ হবে এমনটা ঠিক নয়, তবে যে কোনো ধরনের খাবার বেশি খেলে ত্বকের উপর এর প্রভাব পড়তে পারে।”

“আমি সাধারণত ইফতারে প্রচুর ভাজা খাবার খাই এবং আমি মনে করতাম এতে আমার ত্বকের কিছু হবে না, পরে অনেকে লক্ষ্য করি যে এটি আমার ত্বকে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলেছে।”

ত্বকের যত্নের রুটিন

রমজানের সময়, খাওয়া এবং ঘুমের ধরন নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়, তাই অনেকে তাদের দৈনন্দিন ত্বকের যত্নের রুটিন সামঞ্জস্য করে।

কিন্তু ডা. শাহ বলেন, ত্বকের যত্নে আপনি যে পণ্য ব্যবহারে অভ্যস্ত তার সবই রমজানে ব্যবহার করা সম্ভব।

“অনেকের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে আপনি রোজা রাখার সময় আপনার ত্বকের যত্নের নিয়মিত পণ্যগুলো ব্যবহার করতে পারবেন না,” ডা. শাহ বলেছেন।

তিনি যোগ করেন, “আমি মনে করি আপনি রোজা রাখার সময় আপনার ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।”

এক নজরে তার সুপারিশগুলো হলো:

১. ত্বক পরিষ্কার করা, ২. ময়েশ্চারাইজ করা, ৩. ক্ষতিকর সূর্যের রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করা।

এছাড়াও তিনটি পরামর্শ দিয়েছেন তিনি:

১. রাতে ত্বক পরিষ্কার করা, ২. এমন কোনো ক্রিম ব্যবহার করা যেটায় রেটিনল আছে এবং ৩. তারপরে আবার ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা।

ডা. শাহের মতো, সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ফারাহ ফেরেরো এই প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে তার ফলোয়ারদের রমজানে ত্বকের যত্নের টিপস দিতে।

ইংলিশ শহর লেইসেস্টারের বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সী ফারাহ মনে করেন যে রমজান মাসে ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত পণ্যের ধরন সম্পর্কে বিশেষ করে কোন ধরনের পণ্য ব্যবহার করা উচিত, কোনগুলো উচিত নয়, এ নিয়ে ইন্টারনেটে প্রচুর বিভ্রান্তিকর তথ্য রয়েছে।

তিনি এর একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “কিছু লোক রমজান মাসে অ্যালকোহলযুক্ত পণ্য ব্যবহার করা এড়িয়ে চলে।”

“টোনার হিসাবে পরিচিত ত্বক পরিষ্কার করার পণ্যগুলোয় অ্যালকোহল থাকে। একজন মুসলিম হিসাবে আমি অ্যালকোহল পান করি না; তবে এই অ্যালকোহলযুক্ত পণ্য কাউকে নেশাগ্রস্ত করে না, তাই এটি ত্বকে প্রয়োগ করায় কোনও ক্ষতি নেই।”

ফারাহ রমজান মাসে ত্বকে ডবল ক্লিনজিং করার পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ডাবল ক্লিনজিং বলতে প্রথমে তেল জাতীয় ক্লিনজার বা মাইকেলার ওয়াটার ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করা, তারপর ত্বক আরও গভীরভাবে পরিষ্কার করতে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়াকে বোঝায়।”

তার ধারণা রমজানের সময় স্বচ্ছতা প্রয়োজন, তাই তিনি তার ফলোয়ারদের সাথে ত্বকের যত্ন নেওয়ার পদক্ষেপগুলি পর্যালোচনা করেন।

“কখনও কখনও, যখন আমার খুব আলসেমি হয় তখন আমি ওয়েট ওয়াইপস ব্যবহার করি, যেখানে একটি প্যাকেটে টিস্যু বা রুমালের মতো ওয়াইপস ক্লিনজারে ভেজানো থাকে।”

“আমি এই ওয়াইপ ব্যবহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য পাই যে ওয়াইপ ব্যবহার করা ত্বকের জন্য ভালো নয়,” ফারাহ বলেছেন৷

“কিন্তু যখন আমি দীর্ঘ সময় কাজ শেষে বাড়ি ফিরি, আমাকে বাসায় এসে রান্না করতে হয়, আরও অনেক কাজ করতে হয় তাই ত্বকের যত্নে আমার জন্য যা সহজ সেই জিনিসগুলো ব্যবহার করতে চাই, এবং এতে কোনো ক্ষতি নেই,” তিনি বলেন। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।