News update
  • Pahela Baishakh Monday     |     
  • China to Gift 1,000-Bed Hospital to Rangpur     |     
  • Arrest Orders Hasina, Rehana, Tulip, 53 others      |     
  • Investment Summit Yields Tk 3,100cr in Proposals: BIDA Chief     |     
  • Cox’s Bazar Records Highest 36.8°C Temperature     |     

রক্তের সম্পর্কের মধ্যে বিবাহ না করার গুরুত্বারোপ বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক স্বাস্থ্য 2024-05-16, 4:34pm

image-137720-1715697036-c15f2e9b15f6f216037a2b6e16c3e7cd1715855682.jpg




বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা: দীন মো. নূরুল হক রক্তের সম্পর্কের নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহ না করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তিনি বলেন, উইলসন ডিজিজটি মূলত উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। দুই জিন একত্র হলেই সন্তান এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।  সেক্ষেত্রে খালাতো, মামাতো, চাচাতো এবং ফুফাতো  বোনের সঙ্গে বিয়ে বন্ধ করতে হবে। তাহলেই এই রোগে আক্রান্তের হার কমে আসবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে  বিএসএমএমইউয়ে উইলসন্স রোগীদের জেনেটিক পরিবর্তন  ও এর উপসর্গ নিয়ে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।

উপাচার্য বলেন, মূলত জেনেটিক ডিসঅর্ডারের কারণে শরীরে অতিরিক্ত কপার জমা হয়ে মস্তিস্কে এবং লিভারের ক্ষতিগ্রস্তকারী রোগ উইলসন ডিজিজ নিয়ে বিশদ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। দেশে উইলসন ডিজিজের নতুন ২টি মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে। বিএসএমএমইউ নিউরোলজি বিভাগ এবং এনাটমি বিভাগের যৌথ গবেষণায় এ বিষয়টি উঠে এসেছে। এমনকি এই রোগের চিকিৎসা টার্গেট জিন থেরাপির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েই হচ্ছে বলে জানান তিনি।

 নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া এর সভাপতিত্বে প্রধান গবেষক হিসেবে ফলাফল উপস্থাপন করেন এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব হেলাল। 

গবেষণার প্রতিবেদনে জানানো হয়,উইলসন ডিজিজ একটি জেনেটিক ডিসঅর্ডার যাতে শরীরে অতিরিক্ত কপার জমা হয়। লক্ষণগুলি সাধারণত মস্তিস্ক এবং লিভারের সাথে সম্পর্কিত।  লিভার সম্পর্কিত উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে বমি, দুর্বলতা, পেটে তরল জমা হওয়া, পা ফুলে যাওয়া, ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া এবং চুলকানি। মস্তিস্ক সম্পর্কিত লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে কম্পন, পেশী শক্ত হওয়া, কথা বলতে সমস্যা, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, উদ্বেগ এবং মনোবিকার ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানে এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু জানান, গবেষণায় মোট রোগীর সংখ্যা ছিল ৫০ জন, এরমধ্যে পুরুষ ২৮ জন এবং মহিলা ছিল ২২ জন। তাদের ৬ জন রোগীর মধ্যে ৩টি মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ২ টিই বাংলাদেশে নতুন। তাদেরকে টার্গেট জিন থেরাপির মাধ্যমে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা চলছে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতি ত্রিশ হাজার জনে একজন উইলসন ডিজিস রয়েছে। সেই হিসেবে রোগীর সংখ্যা হবে ৬ হাজারের মত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ২০০ জনের চিকিৎসা দিয়েছি। কারও মধ্যে এই রোগটি শনাক্ত হলে তাকে আজীবন চিকিৎসা নিতে হয়। সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে সারা জীবন ভালো থাকার সুযোগ রয়েছে। চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেলে এ রোগের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পরিবারের একজনের যদি রোগটি শনাক্ত হয়, তাহলে অন্য সদস্যদের পরীক্ষার মাধ্যমে রোগটি দ্রুত শনাক্ত করা গেলে ঝুঁকিমুক্ত থাকা সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

নিউরোলজি বিভগের অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব হেলাল বলেন, এই গবেষণায় নিউরোলজি বিভাগের মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার ক্লিনিক এবং আন্তঃবিভাগ থেকে রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রোগী থেকে ৩ মি.লি লিটার রক্ত সংগ্রহ করে এনাটমি বিভাগের জেনেটিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে এবং এই ল্যাবে জেনেটিক এনালাইসিস করা হয়েছে। তিনি জানান, রোগীদের বয়স সীমা ছিল ৯ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। অধিকাংশ রোগী পাওয়া গেছে ৯ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং এর সংখ্যা ছিল ৪৩ জন। গবেষণায় প্রথম জেনারেশনের আত্মীয়দের মধ্যে আক্রান্ত ছিল ৭ জন। এই রোগের কারণে স্কুল ছাড়তে হয়েছে ২৬ জন বাচ্চাকে। 

রোগীদের উপসর্গ প্রসঙ্গে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, আমরা যেই রোগীগুলো পেয়েছি, তাদের মধ্যে ভেতরে ঢোক গিলতে সমস্যা ছিল ২৭ জনের, হাত পায়ের কম্পন ছিল ২৮ জনের, হাত-পা শক্ত হয়ে যাওয়া ছিল ২১ জনের, অনিয়ন্ত্রিত ঘাড় মোচড়ানো সমস্যা ছিল ১৪ জনের, অনিয়ন্ত্রিত হাত পা মোচড়ানোর সমস্যা ছিল ১১ জনের, নৃত্যের মতো অনিয়ন্ত্রিত নড়াচড়া ছিল ৪ জনের। রোগটি কাদের হতে পারে, এমন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বাবা-মা দুজনেরই যদি এই রোগের জিন থাকে, তাহলে সন্তানও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্য আমরা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহ না করার পরামর্শ দিয়ে থাকি বলেও উল্লেখ করেন।  বাসস।