দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতেও বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনিয়ম ও দুর্নীতি যেন থামছেই না। গেলো এক সপ্তাহ ধরে অর্ধেক চিকিৎসকই হাসপাতালটিতে সেবা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ ওঠেছে।
দ্বীপ জেলা ভোলার কলেজপড়ুয়া কামাল হোসেন ও মাঈনুদ্দীন। গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে আসেন। তবে অতিরিক্ত টাকা না দিলে মিলছে না সেবা -- এমন অভিযোগ স্বজনদের।
তারা বলেন, ‘দুই-একটা স্যালাইন দিছে, এছাড়া সবই কিনতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার টাকা শেষ। একটা বালিশের জন্যও টাকা দিতে হয়।
রোগীরা বলেন, ‘সরকার আসে, সরকার যায়; কিন্তু এই হাসপাতালে সেবার মান বাড়ে না। পদে পদে হয়রানি আর ঘুষ বাণিজ্যের কারণে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আর নিয়মিত আসেন না চিকিৎসকরাও।’
এছাড়া নিম্নমানের খাবার বিতরণের অভিযোগ তো আছেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরিসহ শিক্ষার্থীরা নানান অনিয়ম খুঁজে বের করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘হাসপাতালের বেশকিছু সমস্যা আমাদের চোখে পড়েছে। এর মধ্যে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, অপরিষ্কার টয়লেট ও পর্যাপ্ত আলোর অভাব অন্যতম।’
এদিকে, চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালন নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই। ক্ষমতার পটপরিবর্তনে কেউ ভয়ে আসছেন না। আবার কেউ নিজেকে ক্ষমতার লোক হিসেবে জাহির করছেন। এতে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব ঘাটতি রয়েছে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হবে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে’
বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘সেবা দেয়ার জন্যই চিকিৎসকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাহলে সেখানে কেন সিন্ডিকেট থাকবে? এক্ষেত্রে কোনো অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ হলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
এক হাজার শয্যার এ হাসপাতালটিতে বেশিরভাগ সময় গড়ে দুহাজার রোগী ভর্তি থাকেন। আর বহির্বিভাগে সেবা নেন আরও ৩ হাজারের বেশি রোগী। তবে সংকটময় সময়েও যেসব স্বাস্থ্যকর্মী সেবা দিচ্ছেন, তারা প্রশংসিত হচ্ছেন। সময় সংবাদ