News update
  • Trump Denies US Role in BD Crisis, Leaves Resolution to Modi     |     
  • Climate Change Brings Human Insecurity on Vanuatu and Guam     |     
  • No time to lose in Gaza, as ceasefire offers fragile respite     |     
  • USAID Shut Down Threatens to Endanger World’s Poorer Nations     |     

আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সিজারিয়ান ডেলিভারি, কী পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক হাসপাতাল 2025-02-03, 2:40pm

rwrwerwer-cdbe1e97560f46f7f8d8d4d82d798bbc1738572012.jpg




দেশে সিজারিয়ান সেকশন বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়াই উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, অপ্রয়োজনে সিজারের কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন মা ও নবজাতক। কেন্দ্রীয়ভাবে সারা দেশে অডিটের ব্যবস্থা করলে এই হার কমিয়ে আনা সম্ভব।

প্রসূতি মায়ের কষ্ট, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সন্তানের স্বাস্থ্যঝুঁকি আর নিশ্চিতভাবেই বেশি খরচের ধাক্কা। এরপরও সিজারিয়ান পদ্ধতিতে কেন বাড়ছে সন্তান প্রসবের প্রবণতা? মায়েদের কাছেই মিলেছে এই প্রশ্নের উত্তর।

সাদিয়া আফরিন নামে এক নারী জানান, স্বাভাবিক প্রসবের তীব্র ইচ্ছা থাকলেও শেষ সময়ে সিজারিয়ানে যেতে হয় তাকে। অস্ত্রোপচারের পর, এখন তিনি ভুগছেন শারীরিক বিভিন্ন জটিলতায়।

সময় সংবাদকে তিনি বলেন, সিজার না করলে এখান থেকে চলে যাওয়ার পর কোনো সমস্যা হলে এর দায়ভার কিন্তু আমাদের না। স্বাভাবিকভাবে এ কথা শুনলে তো ভয় লাগবেই। পরে ভোরে আমার সিজার হয়। তখন বুঝিনি যে কত বড় একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। এখন প্রচণ্ড ব্যাক পেইন হয়। রাতে শোয়ার সময়ও আমার স্বামীর সাহায্য নিয়ে আরেক পাশ হতে হয়। ঠিক মতো কাজ করতে পারছি না। নানা সমস্যা হচ্ছে। তলপেটেও স্থূলতা বেড়ে গেছে। মাঝে মাঝে বুকেও ব্যথা করে এখন।

সোনিয়া নামে আরেক নারীর গল্পটাও একই। প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান এই গৃহবধূ। ১০ দিন আগে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের পর গুরুতর ইনফেকশন নিয়ে, হাসপাতালের চার দেয়ালে দিন কাটছে তার। সঙ্গী অসহ্য যন্ত্রণা।

তিনি বলেন, ‘সিজারের পর সেলাই কাটাতে এসেছি। এখন ইনফেকশন ধরা পড়েছে। সেলাই খুলে দেয়া হয়েছে। এখন তারা বলছে, ড্রেসিং করা হবে।’

আরেক নারী বলেন, ‘সিজার হয়েছে অনেক আগে। ইনফেকশনের জন্য হাসপাতালে আবার ভর্তি হতে হলো। এমনটা জানলে সিজার করতাম না।’

বিশ্বব্যাপী ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রসব সিজারিয়ান বা সি-সেকশনে করানোর সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অথচ বাংলাদেশে সেই সীমা ছাড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ১০টির মধ্যে ৬টি শিশুর জন্ম হচ্ছে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে-বিডিএইচএস ২০২২- এর প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, ২০১১ সালে সিজারিয়ান সন্তান জন্মদানের হার ছিল ১৮ শতাংশ, ২০১৪ সালে এই হার বেড়ে হয় ২৪ শতাংশ। ২০১৭-১৮ সালে ৩৪ শতাংশ ও ২০২২ সালে এটি ছিল ৪৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে সিজারিয়ান অপারেশনের বেশির ভাগই হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোতে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস ট্রেনিং সেন্টারের বিভাগীয় প্রধান সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. খোদেজা পারভীন সময় সংবাদকে বলেন, 

প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সিজারিয়ান বেশি হয়। কারণ তারা মা ও নবজাতকের জন্য ঝুঁকি নিতে চায় না। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানে নরমাল ডেলিভারিটাই বেশি হয়।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হলে সিজার করা হয়। কিন্তু যত বেশি নরমাল ডেলিভারির দিকে যাওয়া হবে, মা ও শিশুর জন্য তত ভালো।    

আইসিডিডিআরবির গবেষণায় উঠে এসেছে, সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ে ৩৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি প্রসূতি মায়েরা বেশি খরচ করছেন, যার মধ্যে শিক্ষিতের হার সবচেয়ে বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে সচেতনতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোকেও আনতে হবে জবাবদিহির আওতায়। 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. লেলিন চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সারা দেশে সিজার অডিটের একটা ব্যবস্থা থাকতে হবে। এর মধ্য দিয়ে অপ্রয়োজনীয় সিজারগুলো বাদ দেয়া যাবে।