News update
  • Dhaka’s air quality ‘unhealthy’ 5th worst in world Saturday     |     
  • Dhaka’s air recorded unhealthy on Friday morning     |     
  • Teesta activists announce ‘Silent Rangpur’ campaign in 5 districts     |     
  • Ceasefire Offers Lifeline, but Gaza Hospitals in Ruins     |     
  • Christensen calls next election most consequential in decades     |     

বাগেরহাটের খান জাহান আলীর(রহ.) মাজারে কুমিরের মৃত্যু

গ্রীণওয়াচ ডেক্স জীববৈচিত্র 2023-10-20, 4:42pm

image-110951-1697773657-b0bac0bbc6f1e9dd25e5937f243e534e1697798567.jpg




ঐতিহাসিক হযরত খান জাহান আলীর(রহ.)মাজার সংলগ্ন দিঘিতে থাকা দুটি কুমিরের একটি মারা গেছে।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রশাসনের নির্দেশে দিঘি থেকে কুমিরের মরদেহটি উপরে ওঠানো হয়। এর আগে দুপুরের দিকে দিঘির দক্ষিণ পশ্চিম কোনে পুরুষ(বড়) কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ, খাদেমসহ দর্শনার্থীরা মাজার প্রাঙ্গণে ভীড়

করেন। কুমিরের মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. লুৎফর রহমান।

এর আগে ২০২১ সালের ১২ জুন এই কুমিরটি বেশ অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিল। তখন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির ও স্থানীয় খাদেমদের সহায়তায় কুমিরটিকে উপরে তোলা হয়েছিল। প্রাণি সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে কুমিরটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।তারপর থেকে মোটামুটি সুস্থ্য ছিল পুরুষ কুমিরটি। স্থানীয় ফকিরদের দাবি কুমিরের একটি চোখ অন্ধ ছিল।

মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, কুমিরগুলো আসলে  দিঘির প্রাণ ছিল। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এই কুমিরকে টাকা কামানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতেন। কুমিরকে আটকে রেখে দর্শনার্থী ও ভক্তদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হত। ৬-৭ মাস ধরে কুমিরটিকে একজনের বাড়ির পুকুরে আটকে রাখা হয়েছিল। এতদিন ধরে কুমির এক জায়গায় থাকে না। আমরা এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগও করেছি।  কুমিরের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন এই খাদেম।

প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. লুৎফর রহমান বলেন, কুমিরটি তিন বছর আগেও একবার অসুস্থ্য হয়েছিল। তখন আমরা চিকিৎসা দিয়েছিলাম। এরপরে মোটামুটি ভাল ছিল। আমরা কুমিরের মরদেহের ময়নাতদন্ত করব। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করব।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। মাদ্রাজ থেকে আনা দুটি কুমিরের পুরুষ কুমিরটি মারা গেছে। এখানে খাদেমদের অভিযোগ রয়েছে, আমরা তদন্ত করছি। এছাড়া কুমিরের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুলতানী শাসন আমলে খ্রিস্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে হযরত খান জাহান আলী (রহ.) বাগেরহাটে ‘খলিফতাবাদ’

নগর বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তিনি এই অঞ্চলে ৩৬০টি দিঘী খনন করেন। এর মধ্যে সব থেকে বড় ‘ঠাকুর দিঘি’। যে দিঘীর পাড়ে তার সমাধী রয়েছে।এই দিঘীতে তিনি দুটো মিঠাপানির প্রজাতির কুমির ছেড়ে ছিলেন। যাদের নামছিল ‘কালাপাহাড় ও ‘ধলাপাহাড়। খানজাহান (রহ) এর মৃত্যুর পর মাজারের খাদেম ও ভক্তরা ওই কুমির দুটিকে নিয়মিত খাবার দিতেন। দীর্ঘদিন পর্যন্ত ওই কুমির যুগলের বংশ ধরেরা এখানে বসবাস করে আসছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময় মারা যাওয়ার কারণে কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়ের বংশধরেরা শঙ্কায় পড়ে। সর্বশেষ ২০০৬ সালে দিঘির কুমির ‘কালা পাহাড়’ এবং ২০১৫ সালে ‘ধলাপাহাড়’ কুমিরটি মারা যায়। ধলাপাহাড় নামক কুমিরটির চামড়া বাগেরহাট যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

এরই মাঝে মাজারে কুমিরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ ক্রোকোটাইল ব্যাংক থেকে ৬টি কুমির এনে মাজারের দিঘিতে ছাড়া হয়।নিজেদের মধ্যে মারামারি করে দুটি কুমির মারা যায়। দুটি কুমির সুন্দরবনের করমজলে পাঠানো হয়। অবশিষ্ট দুটি কুমির এতদিন এই মাজারে ছিল। এদের মধ্যে নারী কুমিরটি কয়েকবার ডিম পাড়লেও, কোন বাচ্চা হয়নি।পুরুষ কুমিরটি অস্বাভাবিক মৃত্যুতে নারী কুমিরটি সঙ্গী হারা হয়। তথ্য সূত্র বাসস।