News update
  • IAEA Chief Calls for Renewed Commitment to Non-Proliferation     |     
  • UN Aid Chief Warns Humanitarian Work Faces Collapse     |     
  • Arab-Islamic Summit yields limited action over Israeli strike on Doha     |     
  • National Consensus Commission term extended till October 15     |     
  • EU Helping BD prepare for free, fair elections: Envoy Miller     |     

বঙ্গোপসাগরে নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে মাছ আহরনে মৎস্য সম্পদ হুমকীতে

Fishery 2025-01-22, 12:29am

fish-catching-in-the-bay-under-an-illegal-method-7ad6c5770b4afeb58ded021f58a03a271737484176.jpg

Fish catching in the Bay under an illegal method



পটুয়াখালী: বঙ্গোপসাগরে দিন দিন বাড়ছে মাছ ধরার অনুমোদনহীন নৌযান ট্রলিং বোট। এসব নৌযানে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করায় মারা যাচ্ছে সব প্রজাতির মাছের পোনা। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চললেও অদ্যবধি ব্যবস্থা নেয়নি মৎস্য বিভাগ।  

মৎস্য গবেষকদের মতে, অগভীর সমুদ্রে ট্রলিং বোট দিয়ে মাছ শিকার করায় ধ্বংস হচ্ছে মাছের আবাসস্থল। এতে ভেস্তে যাচ্ছে সরকারের সকল মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা। অনুমোদনহীন নৌযান ট্রলিং বোটের মাধ্যমে মাছ শিকার করায় কমে যাচ্ছে উৎপাদন। জেলে সহ মৎস্য আড়ৎ মালিকদের দাবী, ট্রলিং বোটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে না পারলে আগামী দু’ এক বছরের মধ্যেই মাছ শূন্য হয়ে পড়বে সমুদ্র।

সরেজমিনে মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর দেখা যায়, সমুদ্রে মাছ শিকার শেষে শিববাড়িয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে নোঙর করে আছে নিষিদ্ধ ট্রলিং বোট।   এসব নৌযানে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হয়। প্রতিটি বোটেই রয়েছে নিষিদ্ধ জালে ভরা।

মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, ট্রলিং বোটের মাধ্যমে নির্বিচারে মাছ শিকার করায় সমুদ্রে মাছের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মৎস্য আহরণে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে মাছ শূন্য হয়ে পড়বে সমুদ্র। ট্রলিং বোট ব্যবসায়ীরা সংখ্যায় কম হলেও ক্ষতি হচ্ছে অনেক বেশী। মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর বহিরাগত সহ ট্রলিং ব্যবসায়ীর সংখ্যা রয়েছে ৫০ থেকে ৬০টি। কিন্তু এ অঞ্চলে লম্বাজাল, খুটাজাল, ছান্দিজালের মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে কয়েক হাজার। আর এই সমস্ত ট্রলারের হাজার হাজার জেলে পরিবারের ভরণ পোষণের একমাত্র মাধ্যম সমুদ্রে মাছ শিকার করা। বঙ্গোপসাগরে ট্রলিং বোট দিয়ে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করায় সব প্রজাতির মাছের পোনা মারা যাওয়ায় মাছ শুন্য সাগরে বৈধ প্রক্রিয়ায় মাছ শিকারে যাওয়া জেলেরা মাছ না পেয়ে এখন দিশেহারা। হাজার হাজার সাধারণ জেলে কর্মহীন হয়ে বর্তমানে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।  একদিকে যেমন মাছ না পেয়ে জেলেরা হতাশাগ্রস্থ, অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে রূপালী ইলিশ না থাকায় কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

নীতিমালা অনুযায়ী, ৪০ মিটার গভীরতার কম পানিতে মাছ শিকার করতে পারবে না ট্রলিং বোট। কিন্তু এর তোয়াক্কা না করেই বঙ্গোপসাগরে ট্রলিং বোট দিয়ে মাছ শিকার করায় সরকারের মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির সকল পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে। নিষিদ্ধ ট্রলিং বোট নিয়ে বিপাকে পড়ছে মৎস্য বিভাগও। মালিকরা ট্রলিং বোট চলাচলের বিষয়ে রিট আবেদন দাখিল করায় কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারছে না মৎস্য বিভাগ। সমুদ্রে দাপিয়ে  বেড়ানো ট্রলিং বোটগুলোর মধ্যে আলীপুর-মহিপুরে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি এবং বহিরাগত বোট রয়েছে ৩০ থেকে ৩৫টি, এছাড়া পাথরঘাটা-বরগুনায় রয়েছে ৫৫ থেকে ৬৫টি। এছাড়াও রয়েছে সারা দেশে শত শত অনুমোদনহীন নৌযান ট্রলিং বোট।  

খাজুরা এলাকার জেলে ছিদ্দিক ফকির বলেন, ‘যেসব জেলেরা বৈধ প্রক্রিয়ায় সমুদ্রে মাছ শিকার করে, তারা মাছ না পাওয়ায় দিন দিন লোকসানে পড়ছে। এজন্য দায়ী ট্রলিং বোট। এই এসকল বোট বন্ধ করতে না পারলে সমুদ্র মাছ শূন্য হয়ে পড়বে। বিশেষ করে হাজার হাজার সাধারণ জেলে কর্মহীন হয়ে বিপদগ্রস্থ হয়ে পড়বে।’

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা  মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রলিং এর নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরায় আমি বোট মালিকদের নোটিশ দিয়েছিলাম। তারা আমার নোটিশ নিয়ে সমুদ্রে মাছ শিকার করার আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছেন। এ কারণে আমরা ট্রলিং বন্ধের জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তারপরও আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সচেতনতার জন্য মাইকিং করেছি, বিভিন্ন সভা সেমিনার করেছি, তবে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আশাকরছি খুব শীঘ্রই রিট আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। তারপর আমরা পুরোদমে ট্রলিং বন্ধের জন্য অভিযান শুরু করবো।’ - গোফরান পলাশ