Distribution of relief rice to fishermen in Kalapara
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ২২ দিনের ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মাছধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের সরকারের দেয়া প্রনোদনার ২৫ কেজি চাল বিতরন নিয়ে মাথা পিছু ৫০ টাকা হারে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের মুন্সী বাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার এ নিয়ে স্থানীয় জেলে আ. ছালাম মিয়ার বরাত দিয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে মুঠো ফোনে অভিযোগ জানান সাগর নামের পটুয়াখালী জেলা শহরে কর্মরত যুগযুগান্তর পত্রিকার এক গনমাধ্যম কর্মী। তবে সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান তাঁর উপস্থিতিতে চাল বিতরনে এরকম টাকা উত্তোলন করা হয়নি এবং তাকেও এক সাংবাদিক এ নিয়ে জানতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুঠো ফোনে তাঁকে চাল বিতরনে টাকা আদায়ের অভিযোগ জানানোর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিঁনি ইউএনও, কলাপাড়াকেও বিষয়টি অবগত করার জন্য বলেছেন বলে জানায় সূত্রটি।
সূত্র জানায়, মা ইলিশ সংরক্ষনে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর ২২ দিন ইলিশ শিকার থেকে বিরত থাকা উপজেলার ১৮ হাজার ৩০৫ জন জেলের জন্য ৪৫৭ মে.টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয় মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয়। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে জেলেদের জন্য এ মানবিক সহায়তার চাল উপজেলার ১২ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার তালিকাভুক্ত জেলেদের মাঝে বিতরন শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। আগামী দু’এক দিনের মধ্যে জেলেদের এ ভিজিএফ’র চাল বিতরন সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
এদিকে জেলেদের এ মানবিক সহায়তার চাল তালিকাভুক্ত হয়েও পাচ্ছেন না বলে উপজেলার লতাচাপলি ইউনিয়নের একাধিক জেলে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন। এসময় তিঁিন প্রয়োজনীয় পদেক্ষপ নেয়া হবে বলে তাদের আশ^স্ত করেন। জেলেদের অভিযোগ, স্থানীয় সরকার পরিষদের আগামী ভোট নিয়ে মেম্বর তাঁর নিজেদের লোকদের চাল দিচ্ছেন। যারা তার মাই ম্যান নন তাদের নাম তালিকায় থাকলেও তাঁরা সরকারের এ সহায়তার চাল পাচ্ছেন না।
মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞাকালীণ সময়ে ইলিশ পরিবহন, মজুদ, বেঁচা-কেনা এবং বিনিময় করা যাবে না। কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। গত ৬দিনে উপজেলায় ৯ জেলেকে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার অভিযোগে ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গনমাধ্যম কর্মী সাগর জানান, বৃহস্পতিবার সকালে চম্পাপুর ইউনিয়নের মুন্সী বাজার এলাকায় জেলেদের ভিজিএফ চাল বিতরনে জব্বার মেম্বর ৫০ টাকা হারে আদায় করছেন বলে অভিযোগ পান স্থানীয় জেলে আ. ছালাম মিয়ার কাছ থেকে। এ নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মেম্বর জব্বার সহ ট্যাগ অফিসার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এবং অভিযোগকারী ছালামকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন। তবে তিনি বিষয়টি তাৎক্ষনিক মৎস্য কর্মকর্তা সহ উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন বলে জানান।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ’চম্পাপুর ইউনিয়নের মুন্সীবাজার এলাকায় জেলেদের চাল বিতরনে ৫০ টাকা করে মেম্বর নিচ্ছেন বলে এক সাংবাদিক আমাকে জানিয়েছেন। আমি তাকে ইউএনও, কলাপাড়াকেও বিষয়টি অবগত করার জন্য বলি। এছাড়া লতাচাপলি ইউনিয়নে তালিকাভুক্ত জেলেরা চাল পাচ্ছেন না বলে জানালে তাদের বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে আশ^স্ত করার পর তারা বাড়ী ফিরে যান। ’
অপু সাহা আরও বলেন, ’জেলেদের বিশেষ প্রনোদনার চাল নিয়ে যে কোন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত সাপক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। ’ - গোফরান পলাশ