News update
  • 2025: Resilient Economies, Smart Development, and More Jobs      |     
  • Dhaka rejects India's statement on incident at BD HC residence, New Delhi      |     
  • Stocks end lower; trading falls at DSE, improves at CSE     |     
  • No need to be kind to election disruptors: EC to law enforcers     |     
  • No Media Faced Arson Attacks in 53 Years: Mahfuz Anam     |     

ফখরুলের বক্তব্য গণতন্ত্রের রীতিনীতি ও মূল্যবোধ পরিপন্থী: ওবায়দুল কাদের

গ্রীণওয়াচ ডেস্কঃ Politics 2022-02-12, 5:33pm




আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন, নতুন সার্চ কমিটি এবং নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য গণতন্ত্রের রীতিনীতি ও মূল্যবোধ পরিপন্থী। আজ এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিষেদগার ও অবান্তর’ দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই ধরনের বক্তব্য গণতন্ত্রের রীতিনীতি ও মূল্যবোধ পরিপন্থী।                   

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন শুধু একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানই নয়, এটি বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের জন্য রেগুলেটরি বডি বা রেফারির মতো। খেলায় কোনো দল খারাপ খেললে অনেক ক্ষেত্রেই তারা রেফারিকে দোষারোপ করে। বিএনপির অবস্থাও অনেকটা সেরকম। খেলায় পরাজিত হয়ে অথবা খেলায় অংশগ্রহণ না করে রেফারিকেই দোষারোপ করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি নির্বাচনী মাঠে অংশগ্রহণ না করায় বা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা করে; নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনে যদি কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়ে থাকে তার দায়ভার বিএনপিকেই নিতে হবে। একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি তোয়াক্কা না করে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রকেই প্রতিনিধিত্ব করে। দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই কমিশনের প্রতিটি সিদ্ধান্তই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। তাই নির্বাচন কমিশনের প্রতি এ ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণ দেশের সংবিধান পরিপন্থী। যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেউ না কেউ সংক্ষুব্ধ হতে পারে। কিন্তু সে সংক্ষুব্ধতা প্রকাশের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি রয়েছে। সে পথে না গিয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ জাতীয় বিষেদগার রাষ্ট্র, সমাজ ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির ভিত্তিমূলে আঘাত। 

তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান সংযোজিত হয়। সে সময় বিশ্বের অনেক দেশেই নির্বাচন পরিচালনার বিষয়টি নির্বাহী বিভাগের হাতে রাখা হতো, কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে নির্বাচন পরিচালনার সর্বময় ক্ষমতা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খুনি মোশতাক-জিয়া চক্র অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করে। স্বৈরশাসক জিয়া অবৈধ ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেওয়ার অভিপ্রায়ে ১৯৭৭ সালের ৩০ মে হ্যাঁ/না ভোটের আয়োজন করে এবং তার পক্ষে হ্যাঁ ভোট দেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে এক নিকৃষ্টতম প্রহসনে রূপ দেয়। জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরে স্বৈরশাসক এরশাদ এবং খালেদা জিয়া। 

আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তনের পর খালেদা জিয়া একইভাবে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে কলুষিত করে তোলেন। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালীন গঠিত অন্তত দু’টি নির্বাচন কমিশনকে (কে. এম. সাদেক ও এম. এ আজিজ) বিদায় নিতে হয়েছে সম্মিলিত জনরোষের মুখে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টায় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করে বিএনপি। দলীয় লোককে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে বিচারপতিদের বয়সসীমা বাড়ানো হয়। অন্যদিকে ২০০১ পরবর্তী সময়ে প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার প্রস্তুত এবং ছাত্রদলের ক্যাডারদের নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনে পেরেক ঠুকে ক্ষমতা জবর দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় বিএনপি। কিন্তু এর বিপরীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সৃষ্ট গণআন্দোলন ও দাবির মুখে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত হওয়ায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় বিএনপির নির্বাচনী রাজনীতি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও প্রশাসনিক কাঠামো বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইনসহ যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে তা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। ২০০৯ সালের আগে নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি সংস্থা ছিল। ২০০৯ পরবর্তী সময়ে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোট ব্যাংক বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষমতা দখলের উপায়ন্তর না পেয়ে জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সাহস হারিয়ে ফেলে। ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা এবং নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে আন্দোলনের নামে শত শত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট।

ওবায়দুল কাদের বলেন, খুনি-যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক বিএনপি ধারাবাহিকভাবেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত; তাই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ভ্রষ্ট নীতি গ্রহণ করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে বিএনপি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং সাংবিধানিক বিধান ও আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপির প্রতি জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। তাই জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত বিএনপি সার্চ কমিটির প্রতি বিরূপ মন্তব্য ও লাগাতার অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।  

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আছে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই ক্ষমতায় থাকবে। সংবিধানসম্মতভাবে যথাসময়েই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ আবারও রাষ্ট্র পরিচালনায় থেকে উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। সূত্রঃ বাসস।