দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩’। তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। এতে প্রথম দিনেই বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী ও প্রতিনিধিদের থেকে ব্যাপক সারা পাওয়া গেছে।
শনিবার (১১ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট- ২০২৩’ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতিনিধি, বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দুইশ থেকে পাঁচশ ডলার খরচ করে ৮৯৬ জন রেজিস্ট্রেশন করে এই বিজনেস সামিটে অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া আমরা আমাদের সরকারের বিভিন্ন নীতি নির্ধারকসহ মন্ত্রী-সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দাওয়াত দিয়েছিলাম। একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও বিদেশি ব্যবসায়ী ও প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আপনারা দেখেছেন, এখানে অনেক ভালো একটা জমায়েত হয়েছে। অনেকে সামিটে অংশ নিয়েছে।
তিনি বলেন, সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রী মাজেদ বিন আব্দুল্লাহ আল কাসাবি ৫৬ জন ডেলিগেটর নিয়ে বিজনেস সামিটে অংশ নিয়েছেন। সৌদি সরকার এবং তাদের বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে সৌদি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট তার সঙ্গে ছিলেন। এ ছাড়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার উপ-মহাপরিচালক, ভুটানের বাণিজ্যমন্ত্রী, চীনের ভাইস মিনিস্টার ছিলেন এবং জাপান-কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় দুইশর বেশি প্রতিনিধি এই সামিটে অংশ নিয়েছেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এই সামিটের মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশের সক্ষমতা জানান দিতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ হওয়া। এখানে আমরা ‘বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপো’র আয়োজন করেছি। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলো এবং আমাদের দেশীয় উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী প্রদর্শন করা হবে। আমাদের দেশেই অনেক বিশ্বমানের পণ্য তৈরি হচ্ছে। এসব সক্ষমতা তুলে ধরার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। এখানে যারা এসেছেন, ক্রেতা বা বিদেশিরা, তারা এগুলো দেখছেন।
তিনি জানান, সৌদি আরব আমাদের জ্বালানি, সমুদ্র সেক্টরে বিনিয়োগ করতে চায়। তাদের সঙ্গে সরকারের ইতোমধ্যেই চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। এ ছাড়া আমরা তাদের সঙ্গে একটি বিজনেস কাউন্সিল করতে সম্মত হয়েছি। একই সঙ্গে এফবিসিআইয়ের সঙ্গে চায়নার সিসিটি আইটির একটি এমওইউ স্বাক্ষর হয়েছে।
তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন আগামী ১৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে। সম্মেলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত নিয়ে ১৭টি সেমিনার ও ৩টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ৭টি দেশের মন্ত্রী এবং ১২টি বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী, বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শ'র বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ী নেতারা সম্মেলনে অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে অনেকেই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এই সামিটের মাধ্যমে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলন, যোগাযোগ, পোশাক ও বস্ত্র, হালকা প্রকৌশল, কৃষি ও স্বাস্থ্য-শিক্ষার মতো খাতে বিপুল বিদেশি বিনিয়োগের আশা করা হচ্ছে। সামিটের আন্তর্জাতিক মিডিয়া পার্টনার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন এবং দেশীয় মিডিয়া পার্টনার আরটিভি।তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।