News update
  • 2025: Resilient Economies, Smart Development, and More Jobs      |     
  • Dhaka rejects India's statement on incident at BD HC residence, New Delhi      |     
  • Stocks end lower; trading falls at DSE, improves at CSE     |     
  • No need to be kind to election disruptors: EC to law enforcers     |     
  • No Media Faced Arson Attacks in 53 Years: Mahfuz Anam     |     

৫২ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়েছেন প্রধান বিচারপতি

আদালত 2023-10-04, 6:02pm

download-13-bab580c2113dc63e8522cb5251f4b5301696420950.jpeg

Chief Justice Obaidul Hasan.



নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সুপ্রিমকোর্টের ৫২ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউনাইটেড ল’ইয়ারস ফ্রন্ট (ইউএলএফ)। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর থেকে ফুলের শুভেচ্ছা নিতে নিতে, এক পর্যায়ে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন, যার সচিত্র প্রতিবেদন গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের ৫২ বছরের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা এবং প্রবীণ আইনজীবীদের ভাষায় বিচার বিভাগের জন্য চরম বেদনার মুহূর্ত। শুধু তাই নয় শপথ গ্রহণের দুই দিনের মাথায় একটি জেলা সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিতর্কিত পুলিশ অফিসার, আইনজীবী নিপীড়নকারী এবং নিয়মিত মানবাধিকার লংঘনকারীর কাছ থেকে একটি বৃহদাকার ‘তলোয়ার’ উপহার হিসাবে প্রধান বিচারপতির গ্রহণ করার ছবি গণমাধ্যমে প্রচারের পর বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজ হতাশ এবং বিস্মিত হয়েছে। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন শুরু করতে না করতেই সংবর্ধনার মেলা এবং নানাবিধ বক্তব্য প্রধান বিচারপতির মতো সর্বোচ্চ সাংবিধানিক বিচারিক পদকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।’

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘বিশেষ করে গত এক অক্টোবর নেত্রকোনা স্টেডিয়ামে নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঞ্চালনায় প্রধান বিচারপতির সম্মানে সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সরকারের প্রতিমন্ত্রী, ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোটের সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিচারপতিগণ, বিচারকসহ স্থানীয় আমলা ও পুলিশের কর্মকর্তা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আওয়ামী লীগের দলীয় সংবর্ধনা গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে প্রধান বিচারপতির মতো নিরপেক্ষ পদের মর্যাদা ও সম্মান হানি ঘটিয়েছেন। এতে বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ মানুষের অনাস্থা আরও গভীরতর হচ্ছে। বিচার বিভাগ নিপতিত হবে গভীর সংকটে। এরপরেও আমরা মনে করি এই সংগঠনকে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর লক্ষ্যে কোনো দলের পক্ষে বিচার বিভাগের প্রধান হিসাবে আপনার দায়িত্ব থাকবে… নিরপেক্ষ থাকবেন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউএলএফ’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহ-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ইউএলএফ এর প্রধান সমন্বয়ক বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, গাজী কামরুল ইসলাম সজল সহ প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির এডহক কমিটি ইতোমধ্যেই আগামী ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং পরবর্তীতে বারের সদস্যদের সঙ্গে শ্রদ্ধেয় বিচারকবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাতের কর্মসূচি বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ইউএলএফ অত্যন্ত ব্যথিত চিত্তে বিচার বিভাগের মর্যাদা, সম্মান, প্রধান বিচারপতি পদের ভাব গাম্ভীর্য এবং বিচার বিভাগের উপরে বাংলাদেশের জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ৮ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট বারের তথাকথিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে সেদিন সুপ্রিম কোর্ট বার চত্বরে বর্জনের সিদ্ধান্তের সমর্থনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল এবং আইনজীবী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

জয়নুল আবেদীন আরও জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে অবসর গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি গত ১২ সেপ্টেম্বার, আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দেন। তিনি শপথ গ্রহণ করেন ২৬ সেপ্টেম্বর। সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবীসহ দেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ প্রত্যাশা করেছিল প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বিচারালয়ের সর্বোচ্চ চেয়ারের মর্যাদা, ভাব গাম্ভিয্য এবং দীর্ঘ দিন ধরে গড়ে উঠা বিচারিক ঐতিহ্য (জুডিশিয়াল ট্রেডিশন) বজায় রাখবেন। যদিও তার রাজনৈতিক অতীত এবং বারে আইনজীবী থাকাবস্থায় বর্তমান সরকার এবং সরকারি দলের সকল প্রকার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রশ্নাতীতভাবে তার নিয়মিত অংশগ্রহণ আইনজীবী সমাজের জানা আছে। তারপরও আমরা অত্যন্ত বেদনাহত মন নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছি। - প্রেস বিজ্ঞপ্তি