ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলনে দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আলাদা করে বৈঠক করার পর উভয় সরকারের পক্ষ থেকে পৃথক বিবৃতিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রত্যাশার কথা বলা হয়েছে।
প্রথম বারের মত দক্ষিণ কোরিয়া জুনের ২৯ থেকে ৩০ তারিখে অনুষ্ঠিত নেটো সম্মেলনে সহযোগী দেশ হিসেবে অংশ নেয়। সম্মেলনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘নেটো ও ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বৈশ্বিক মূল্যবোধের প্রতিরক্ষায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে।’ তবে তিনি চীনের নাম নেননি। এ সম্মেলনের পরই দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বৈঠকের আয়োজন হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ প্রেক্ষাপটে বলা যায়, সিওল সতর্কতার সঙ্গে তাদের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার বেইজিং-এর প্রভাব থেকে সরে এসেছে। ইউন নিয়মিতই আমেরিকা ও আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জোটগুলোর সমর্থনে কথা বলেন।
বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেন, ইউনের নেটো সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়টিতে নিশ্চিত হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া আমেরিকা ও আমেরিকার মিত্র ও সহযোগীদের দিকে ঝুঁকতে চাইছে।
নেটো সম্মেলন নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানান, ‘আবারও চীনকে ভুলভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে" এবং তার পররাষ্ট্রনীতিকে "কলঙ্কিত" করা হয়েছে। পশ্চিমা জোট ভুলভাবে বেইজিংয়ের "স্বাভাবিক সামরিক অবস্থানের" দিকে "আঙ্গুল" তুলেছে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, নেটোর সমালোচনা করলেও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ না করার বিষয়ে চীন যত্নশীল। দক্ষিণ কোরিয়াও চীনের শীর্ষ ৫ বাণিজ্য অংশীদারের অন্যতম।
হোয়াইট হাউজের সাবেক কর্মকর্তা গ্যারি সামোর জানান, বেইজিং ও সিওলের জটিল সম্পর্কে উত্তর কোরিয়ার প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার মনোভাব অনেক বড় প্রভাব ফেলবে।
র্যান্ড কর্পোরেশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ডেরেক গ্রসম্যান জানান, ইউনের বক্তব্যের মধ্যে লুকিয়ে আছে চীনকে প্রতিহত করার প্রতীকী অঙ্গীকার। তবে তিনি আরও জানান, এই বক্তব্য কিংবা নেটো সম্মেলনে যোগ দিলেও বেইজিং-এর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
তবে তিনি আরও জানান, যদি দক্ষিণ কোরিয়া কোয়াড জোটে যোগ দিয়ে চীনের বিরুদ্ধে সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়, সেটাতে ‘সমস্যা তৈরি হতে পারে।’ তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।