News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

বাংলাদেশকে তিস্তা-গঙ্গার পানি দিতে আপত্তি মমতার

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2024-06-25, 6:38am

momota_1-18e17620caa9a144a2a765060b88ec1a1719275929.jpg




সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। আজ সোমবার (২৪ জুন) মোদিকে কড়া ভাষায় লেখা চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরের প্রসঙ্গে আমি এই চিঠিটি লিখছি। বৈঠকে গঙ্গা ও তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের মতামত ছাড়া এই ধরনের একতরফা আলাপ-আলোচনা গ্রহণযোগ্য নয়, কাম্যও নয়।’

মমতা বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সম্পর্কের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আমি বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি। সবসময় তাদের মঙ্গল কামনা করি। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অতীতে বেশ কয়েকটি ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে।’

মমতা ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময়, ভারত-বাংলাদেশ রেললাইন এবং বাস সার্ভিস বিনিময়সহ বেশ কয়েকটি সফল সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। তবে তিনি পানিসম্পদের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘পানি খুবই মূল্যবান এবং এটি মানুষের জীবনরেখা। এমন একটি স্পর্শকাতর ইস্যুতে আমরা আপস করতে পারি না, যা জনগণের ওপর মারাত্মক ও বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই ধরনের চুক্তির প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ।’

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ২০২৬ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ ভারত-বাংলাদেশ ফারাক্কা চুক্তির নবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি একটি চুক্তি যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানি বণ্টনের নীতি বর্ণনা করে এবং আপনারা জানেন যে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের জীবনযাত্রা রক্ষার জন্য এটি বিশাল প্রভাব ফেলে এবং ফারাক্কা বাঁধে যে পানি সরানো হয়, তা কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।’ 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের নদীর অঙ্গসংস্থানবিদ্যার পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেন, যা পশ্চিমবঙ্গে পানির প্রাপ্যতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ‘গত ২০০ বছর ধরে গঙ্গার (এবং বাংলাদেশে পদ্মা) পূর্বমুখী অভিবাসনের ফলে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি নদীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। যেমন পদ্মা থেকে জলঙ্গি ও মাথাভাঙ্গা নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে সুন্দরবনে মিঠা পানির প্রবাহ কমে গেছে।’

এসব বিষয়ে তার আগের চিঠিতে সাড়া না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একাধিকবার চিঠি লিখেছি।’ তিস্তা নদী প্রসঙ্গে মমতা লিখেছেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সিকিমে একের পর এক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ, উঁচু অববাহিকায় বন উজাড় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তিস্তা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

বাংলাদেশে তিস্তা পুনরুদ্ধারে ভারত সরকারের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রস্তাবের সমালোচনা করে মমতা ভারতের অংশে তিস্তা পুনরুদ্ধারে জলবিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের অভাবের কথা উল্লেখ করেন। মমতা বলেন, ‘আমি অবাক হয়েছি যে জলবিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় নদীটিকে তার আসল রূপ এবং ভারতীয় অংশে নদীর অংশ পুনরুদ্ধারের জন্য কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি। উল্লিখিত কারণে তিস্তায় বছরের পর বছর ধরে পানির প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে এবং ধারণা করা হয়, যদি বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো পানি বণ্টন করা হয় তবে সেচের পানির অপর্যাপ্ত প্রাপ্যতার কারণে উত্তরবঙ্গের (পশ্চিমবঙ্গ) লাখ লাখ মানুষ মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে।’

চিঠির শেষ অংশে মমতা তার তীব্র আপত্তির কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘পরিশেষে আমার দৃঢ় আপত্তির বার্তা দিতে চাই যে, তিস্তার পানি বণ্টন এবং ফারাক্কা চুক্তি নিয়ে রাজ্য সরকারের সম্পৃক্ততা ছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা উচিত নয়। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থ সবার আগে, যার সঙ্গে কোনো মূল্যেই আপস করা উচিত নয়।’ এনটিভি নিউজ।