Speakers at the discussion meeting on the Kashmir Problem and the security in South Asia in Dhaka on Sunday
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন-র উদ্যোগে ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ইং রোজ রবিবার সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় ‘কাশ্মীর সমস্যা এবং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকাতে আয়োজন করা হয়েছে। সঞ্চালনা ও সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংস্থার সভাপতি কে.এম রকিবুল ইসলাম রিপন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্ণেল অবসরপ্রাপ্ত আশরাফ আল দ্বীন ভারতকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গণতন্ত্র চর্চার আহ্বান জানান। তিনি কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। হিন্দুত্ববাদী পলিসির মাধ্যমে কাশ্মীর হতে পারে আগামীর ইসরাইল। ফিলিস্তিনের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে কাশ্মিরিদের। ৩৭০ বাতিল করার মধ্য দিয়ে সকল ভারতীয় কাশ্মীরে জমি ক্রয় করতে পারবে। এই নীতির কারণে অদূর ভবিষ্যতে নিজ ভূমে পরবাস হতে পারে কাশ্মিরের মুসলিম জনতা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুধু পাকিস্তান ও ভারতকে সংযত থাকার অনুরোধ করে, কিন্তু কাশ্মীরের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের জন্য কেউ কাজ করে না। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা রক্ষায় সংঘাতমুক্ত কাশ্মীর প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক ও গবেষক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের উভয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অধিকাংশ মুসলিম এবং তারা নিয়মিত নির্যাতিত হচ্ছে। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ সকল রাষ্ট্রের জনগণের সোচ্চার হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সার্ক-কে কার্যকরী করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। কাশ্মীরের মানবাধিকার লংঘন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। কাশ্মীরের অধিবাসীদের মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং সংঘাতমুক্ত কাশ্মীর প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ এবং ভারতের ভূমিকার উপর তিনি গুরুত্ব দেন। তিনি কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।কাশ্মীর যতক্ষন পর্যন্ত দেশ না হবে ততদিন পর্যন্ত কাশ্মীরের মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে না বলেও মনে করেন তিনি।
কাশ্মীর সংকট দক্ষিণ এশিয়া তথা সারা বিশ্বের জন্য হুমকি স্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। তিনি বলেন, কাশ্মীরিদের যে বিশেষ স্বায়ত্বশাসন (আর্টিকেল ৩৭০) তা রদ করে ভারত এই অঞ্চলকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলেছে। ভারত সরকারকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাম্প ছেড়ে কাশ্মীরের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের উচিৎ কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়ানো। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাশ্মীর সংকটের সমাধান করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গন অধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ খান কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দল সমূহকে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি। জাতিসংঘের মাধ্যমে গণভোট আয়োজনের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরীদের মতামত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন। মানবাধিকার সংরক্ষন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের কথা বলেন এবং সেখানে যুব সমাজের দুর্দশা ও তাদের উপর সশস্ত্র বাহিনীর নির্মমতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কাশ্মীরে নির্বিচার হত্যাকান্ড, গুম, নির্যাতন ইত্যাদি মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজের জন্য ভারতকে দায়ী করেছে এবং নিন্দা জানিয়েছে।
দ্যা ডেইলি গ্লোবাল নেশন, বাংলাদেশ এর ডিপ্লোমেটিক করেস্পন্ডেন্ট মো. শাহিন বলেন, কাশ্মীরের সংকটের ভুক্তভোগী আমরা সবাই। কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে আজকের এই সংহতি দিবসে আমাদের সবাইকেই একত্রিত হওয়া উচিত।কারফিউ, অবৈধ আটক, খুন, সুপরিকল্পিত হত্যা, অবরোধ, বসতবাড়িতে আগুন, নির্যাতন, গুম, ধর্ষন, মুসলিম নারীদের উপর নির্যাতন এবং নকল এনকাউন্টারের মাধ্যমে হত্যা কাশ্মীরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব মৃত্যু এবং নির্যাতন বন্ধের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সুশীল সমাজ এবং জাতিসংঘের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দল সমূহকে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, বিজেপি কাশ্মীর তথা ভারতের মুসলমানদের নির্যাতন করছে সাথে শোষণ করছে বাংলাদেশকেও। তাই এখনই প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারতের আগ্রাসন নীতিকে প্রতিহত করা। - প্রেস বিজ্ঞপ্তি