২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে। যা চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত। সুযোগ পাওয়াদের ভর্তি কার্যক্রম ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। তবে ক্লাস শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর।
সরকারের পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৫০০ টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে প্রকাশিত নীতিমালা থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বৃহস্পতিবারে দেওয়া এ নীতিমালা অনুযায়ী, ঢাকার মেট্রোপলিটন এলাকার ইংরেজি ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং বাংলা ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৫০০ টাকা ফি নিতে পারবে।
ঢাকার বাইরে অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ইংরেজি ভার্সনের নন-এমপিও কলেজ সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা এবং বাংলা ভার্সনের নন-এমপিও কলেজ ৫ হাজার টাকা ফি নিতে পারবে।
জেলা পর্যায়ে ইংরেজি ভার্সনের নন-এমপিও কলেজ সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা এবং বাংলা ভার্সনের নন-এমপিও কলেজ ৩ হাজার টাকা ফি নিতে পারবে।
উপজেলা পর্যায়ে ইংরেজি ভার্সনের নন-এমপিও কলেজ ৩ হাজার টাকা এবং বাংলা ভার্সনের নন-এমপিও কলেজ ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ফি নিতে পারবে।
এ ছাড়া এমপিওভুক্ত কলেজগুলোর ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় (উভয় ভার্সন) সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ে (উভয় ভার্সন) সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা এবং উপজেলা পর্যায়ে (উভয় ভার্সন) সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি কলেজে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) এর উপসচিব মো. আবদুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যে শিক্ষাবর্ষে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তার পূর্ববর্তী দুই বছরের মধ্যেও উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। বিদেশি বোর্ডের ক্ষেত্রে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড মান নির্ধারণ করে অনুমোদন দিলেই ভর্তি করা যাবে।
বিভাগ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেকোনো বিভাগে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) আবেদন করতে পারবে। তবে ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাবে না। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি বা দাখিল ভোকেশনালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের যে কোনো বিভাগে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
সরকারি ও বেসরকারি কলেজে মোট আসনের ৯৩ শতাংশ থাকবে সকল শিক্ষার্থীর জন্য উন্মুক্ত। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য, ১ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এবং ১ শতাংশ অধীনস্থ দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে সংরক্ষিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সেসব আসনে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সমান জিপিএ প্রাপ্ত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত মোট নম্বর দেখে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। যদি নম্বরও সমান হয়, তাহলে বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে গণিত, জীববিজ্ঞান ও ইংরেজি এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার ক্ষেত্রে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ের নম্বর পর্যায়ক্রমে বিবেচনায় নেওয়া হবে।
একই কলেজে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব কলেজে নির্ধারিত বিভাগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তি হতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আসন পূরণ করার পর অবশিষ্ট আসনে বাইরের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা যাবে। ভর্তি প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে এবং কলেজগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ও নোটিশ বোর্ডে ভর্তিসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
ভর্তিসংক্রান্ত ফি নির্ধারণ করবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এবং তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হবে। অনুমোদিত ফি-এর অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করা যাবে না এবং রশিদ ছাড়া কোনো ফি গ্রহণ করা নিষিদ্ধ।
তবে ভর্তি শেষে কলেজ পরিবর্তনের সুযোগ থাকলেও অন্য বিভাগ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ফিরে আসার সুযোগ থাকবে না। একইভাবে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর অন্য বিভাগে যাওয়া গেলে পরে বিজ্ঞান বিভাগে ফিরে যাওয়া যাবে না।
একইসাথে বোর্ডের অনুমতি ছাড়া কোনো কলেজ শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র (টিসি) দিতে পারবে না এবং অন্য প্রতিষ্ঠানে সেই ছাড়পত্র দেখিয়ে ভর্তি নেওয়াও যাবে না। বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে ছাড়পত্র দেওয়া ও গ্রহণ সংক্রান্ত তথ্য ১৫ দিনের মধ্যে বোর্ডে জমা দিতে হবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো কলেজ যদি অনুমোদিত না হয় বা অনুমোদনবিহীন ক্যাম্পাসে কোনো বিষয়ে ভর্তি কার্যক্রম চালায়, তবে তাদের স্বীকৃতি ও এমপিও বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকারি কলেজের ক্ষেত্রেও নীতিমালা লঙ্ঘনের প্রমাণ মিললে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন নীতিমালাটি দেশের সকল কলেজে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রমে প্রযোজ্য হবে। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরবর্তী ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে অনলাইনে আবেদন, মেধা তালিকা প্রকাশ, ভর্তি ও ক্লাস শুরু পর্যন্ত সমস্ত কার্যক্রম শেষ করতে হবে বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।