News update
  • UN Warns Refugees Caught in Climate–Conflict Cycle     |     
  • Mohammadpur Sub-Jail in Magura lies abandoned     |     
  • BD trade unions demand 10-point climate action ahead of COP30     |     
  • Bangladesh criticises Rajnath remarks on Yunus     |     
  • ‘Very unhealthy’ air quality recorded in Dhaka Sunday morning     |     

প্রথম দিন অলআউট হয়ে হতাশায় পুড়লো বাংলাদেশ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্রিকেট 2022-06-25, 7:02pm




ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দিন ২৩৪ রানেই  অলআউট হয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন লিটন দাস। 

জবাবে ১৬ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ৬৭ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ১৬৭ রানে পিছিয়ে ক্যারিবীয়রা। 

ড্যারেন স্যামি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দু’টি পরির্তন নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। সাবেক অধিনায়ক মোমিনুল হক ও মুস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ হয় ব্যাটার এনামুল হক  বিজয় ও পেসার শরিফুল ইসলামের। ৭ বছর ৯ মাস পর টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন  বিজয়। 

একাদশে জায়গা পেয়েই রেকর্ড গড়েছেন বিজয়। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার রেকর্ড গড়েন তিনি। সর্বশেষ ম্যাচের পর ৭ বছর ৯ মাস ১১ দিন পর টেস্ট খেলতে নামেন তিনি। এর আগে ২০০৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর অভিষেক হওয়ার  ৭ বছর পর নিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন পেসার নাজমুল হোসেন।

মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন তামিম ইকবাল। প্রথম ৬ ওভারে নান্দনিক ৩টি চার মারেন তামিম।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার কেমার রোচের করা সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে লেগ বিফোর আউট হন জয়। আম্পায়ার আউট দিলেও, রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান জয়। পরের ডেলিভারিতে আবারও জয়কে লেগ বিফোর আউট দেন আম্পায়ার। এবারও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান জয়। দু’বারই বল লেগ-স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলো। 

জয়কে কিছুটা নার্ভাস মনে  হলেও অন্যপ্রান্তে কভার ড্রাইভ-বোলারস ব্যাক ড্রাইভ-আপার কাট শটে কিছু বাউন্ডারি আদায় করে নিয়ে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন তামিম। ১০ ওভারের মধ্যে তামিম যেখানে ৬টি চার মারেন, সেখানে ১১তম ওভারে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান জয়। 

পরের ওভারে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার এন্ডারসন ফিলিপের বলে বোল্ড হন জয়। ব্যাট-প্যাডের মাঝ দিয়ে বল উইকেট ভাঙ্গে জয়ের। ৩১ বলে ১০ রান করে জয়  আউট হলে  দলীয় ৪১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ভালোই এগোচ্ছিলেন তামিম। হাফ-সেঞ্চুরির পথে ছিলেন তিনি। কিন্তু ২৩তম ওভারে আলজারি জোসেফের অফ-স্টাম্পের বলটি ঠিকঠাক খেলতে না পারায় পয়েন্টে জার্মেই ব্ল্যাকউডকে সহজ ক্যাচ দেন তামিম। ৯টি চারে ৬৭ বলে ৪৬ রান করেন তামিম।

তামিমের বিদায়ে উইকেটে আছেন বিজয়। মিড-অন দিয়ে দারুন এক শটে বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খুলেন তিনি। শান্তকে নিয়ে দিনের প্রথম সেশন শেষ করেন বিজয়।  ২৬ ওভারে ২ উইকেটে ৭৭ রান তুলেছিলো বাংলাদেশ। 

বিরতি থেকে ফিরেও আত্মবিশ্বাসের সাথেই খেলছিলেন বিজয়-শান্ত জুটি। দারুণ শটে বাউন্ডারিও আদায় করে নিচ্ছিলেন তারা। ৩৩তম ওভারে কাইল মায়ার্সের বলে দু’টি চারও মারেন বিজয়। পরের ওভারে ফিলিপের নীচু হওয়া বলে লেগ বিফোর আউট হলে ৫টি চারে ৩৩ বলে ২৩ রানে থামে তার ইনিংস। রিভিউতেও নিজের উইকেট বাঁচাতে না পারা বিজয় ৩৭ রান যোগ করেন  শান্তর সাথে। এই জুটিতেই দলীয় রান ১শ স্পর্শ করে বাংলাদেশ। 

সতীর্থ বিজয়ের বিদায়ের পরের ওভারে বিদায় ঘটে শান্তর। দুর্ভাগ্যের শিকার হন তিনি। মায়ার্সের বলটি উইকেট থেকে কিছুটা উপরে ছিলো। কিন্তু আম্পায়ারস কলে লেগ বিফোর হন শান্ত। ৪টি চারে ৭৩ বলে ২৬ রান করেন শান্ত।

১০৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর চাপে পড়ে বাংলাদেশ। আর তখনই উইকেটে যান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথম টেস্টের মত এবারও অধিনায়কের কাছ থেকে ভালো ইনিংসের প্রত্যাশায় ছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু এবার আর পারেননি সাকিব। জেইডেন সিলেসের অফ-স্টাম্পের বল ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এডজ হয়ে বোল্ড হন সাকিব। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই হাফ-সেঞ্চুরি করা সাকিব এবার ৮ রান করেন। 

সাকিবের আউটের পর বাংলাদেশকে চেপে ধরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা। আলজারি জোসেফের বাউন্সার সামলাতে না পেরে উইকেটরক্ষক পেছনে ক্যাচ দেন ৭ রান করা নুরুল হাসান।

দল যখন চিন্তায়, তখন দারুন শব শটে বাউন্ডারি আদায় করে নেন লিটন। জোসেফ-মায়ার্সকে ড্রাইভ-পুল-কাটের বাহারি শট মারেন লিটন।

লিটনকে নিয়ে যখন চিন্তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন উইকেট দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মায়ার্সের অফ-স্টাম্পের বল কাট করেন মিরাজ। পয়েন্টের বাঁ-দিকে ঝাপিয়ে পড়ে দারুন ক্যাচ নেন অতিরিক্ত ফিল্ডার ডেভন থমাস। ৯ রানে শেষ হয় মিরাজের ইনিংস। 

মিরাজের বিদায়ের পর মিড উইকেট দিয়ে ফ্লিকে বাউন্ডারি মেরে ৬৫ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। হাফ-সেঞ্চুরির পর থামতে হয় লিটনকে। 

৫৮তম ওভারে জোসেফের ডেলিভারিতে পুল শট খেলতে গিয়ে বলের উপর জোরে শট নিতে পারেননি লিটন। মিড উইকেটে দাঁড়ানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দিলে শেষ হয়ে যায় ৮টি চারে ৭০ বলে ৫৩ রান করা লিটনের ইনিংসের। 

দলীয় ১৯১ রানে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে লিটন আউট হলে ২শর নীচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। 

কিন্তু ৫৯তম ওভারে রোচের তিন বলে তিনটি চার মারেন শরিফুল। এতে ২শ রান স্পর্শ করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন ক্যারিয়ারে আগের ১৬ টেস্টে ১২ রান করা এবাদত হোসেন।

নবম উইকেটে ৩০ বলে মারমুখী ৩৬ রান তুলেন এবাদত ও শরিফুল। ৬৪তম ওভারে এই জুটি ভাঙ্গেন সিলেস। ১৭ বলে ৫টি চারে ২৬ রান করে আউট হন শরিফুল। আগের ৪ ম্যাচে ১২ রান করা শরিফুলের এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। 

বাংলাদেশের শেষ ব্যাটার খালেদ আহমেদকে ১ রানে আউট করে বাংলাদেশকে ৬৪ দশমিক ২ ওভারে গুটিয়ে দেন সিলেস। অন্যপ্রান্তে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন এবাদত। ৩৫ বল খেলে ৩টি চার মারেন তিনি। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিলেস-জোসেফ ৩টি করে এবং ফিলিপ-মায়ার্স ২টি করে উইকেট নেন। 

জবাবে খেলতে নেমে বাংলাদেশ বোলারদের উপর চড়াও হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটার ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল। দু’জনে ৯টি চার মারেন। ৪টি চারে ৫৫ বলে ব্র্যাথওয়েট ৩০ রানে ও ৫টি চারে ৪১ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন ক্যাম্পবেল। 

নিজেসহ পাঁচ বোলার ব্যবহার করেও দিনের শেষভাগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। 

স্কোর কার্ড : (টস-ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস :

তামিম ইকবাল ক ব্লাকউড ব জোসেফ ৪৬

মাহমুদুল হাসান জয় বোল্ড ব ফিলিপ ১০

নাজমুল হোসেন শান্ত এলবিডব্লু ব মায়ার্স ২৬

আনামুল হক এলবিডব্লু ব ফিলিপ ২৩

লিটন দাস ক ব্র্যাথওয়েট ব জোসেফ ৫৩

সাকিব আল হাসান বোল্ড ব সিলেস ৮

নুরুল হাসান ক ডা সিলভা ব জোসেফ ৭

মিরাজ ক থমাস (অতিরিক্ত) ব মায়ার্স ৯

এবাদত হোসেন অপরাজিত ২১

শরিফুল ইসলাম ক ব্লাকউড ব সিলেস ২৬

খালেদ ক বোনার ব সিলেস ১

অতিরিক্ত (লে বা-৩, নো-১) ৪

মোট (অলআউট, ৬৪.২ ওভার) ২৩৪

উইকেট পতন : ১/৪১ (জয়), ২/৬৮ (তামিম), ৩/১০৫ (আনামুল), ৪/১০৫ (শান্ত), ৫/১২৫ (সাকিব), ৬/১৩৮ (নুরুল), ৭/১৬৫ (মিরাজ), ৮/১৯১ (লিটন), ৯/২২৭ (শরিফুল), ১০/২৩৪ (খালেদ)। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং :

রোচ : ১৫-৩-২১-২ (ও-১),

সিলেস : ১৪.২-৪-৩৩-৩,

জোসেফ : ১৫-১-৩৩-৩,

এন্ডারসন ফিলিপ : ৯-১-১০-২,

রেইফার : ৩-১-১-০,

মায়ার্স : ৮-০-১০-২।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস :

ব্রার্থওয়েট অপরাজিত ৩০

ক্যাম্পবেল অপরাজিত ৩২

অতিরিক্ত (লে বা-৫) ৫

মোট (বিনা উইকেট, ১৬ ওভার) ৬৭

বাংলাদেশ বোলিং :

শরিফুল : ৬-৬-১০-১,

খালেদ : ৩-৪-১৫-০,

সাকিব : ২-৪-১৮-১ (নো-২),

এবাদত : ৪-২-২০-০,

মিরাজ : ১-১-২৮-০। তথ্য সূত্র বাসস।