
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই ছিল বাংলাদেশের। বিশেষ করে চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ১৫০ থেকে ১৬০ রান তাড়া করে জেতা খুব কঠিন নয়। তবুও দুই ম্যাচেই হেরে ইতোমধ্যে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচটি এখন ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচার।
এমন লক্ষ্যে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচটিও মাঠে গড়াবে সন্ধ্যা ৬টায়। সরাসরি খেলা দেখাবে টি-স্পোর্টস ও নাগরিক টিভি। অনলাইনে খেলা যাবে ট্যাপম্যাড অ্যাপ-এ।
দ্বিতীয় ম্যাচে ক্যারিবীয়দের ঝড় থামিয়ে দেড়শর মাঝেই আটকে রেখেছিলেন বোলাররা। বলহাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন নাসুম আহমেদ-মুস্তাফিজুর রহমান-রিশাদ হোসেন। প্রথম ১০ ওভারে ১০০ রান তুলে ফেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেমেছিল ১৪৯ রানে।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে সেই রানও তুলতে পারেননি ব্যাটাররা। একরাশ হতাশা উপহার দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেরেন লিটন দাস-জাকের আলী অনিক-তাওহীদ হৃদয়-শামীম পাটোয়ারীরা। সর্বসাকুল্যে তুলেতে পারে ১৩৫ রান। ১৪ রানে হেরে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হারে বাংলাদেশ।
ফলে কার্যত এ ম্যাচটি এখন বাংলাদেশের জন্য হয়ে ওঠেছে লজ্জার হাত থেকে বাঁচার। আজ বিকেলে শেষ ম্যাচের উইকেট দেখে মনে হয়েছে, এ ম্যাচেও একই রকম উইকেটে খেলা হবে। ফলে এ ম্যাচেও গুরুত্ব পড়বে সেই ব্যাটারদের হাতেই। এখন তারা কি করে, সেটির উপর নির্ভর করবে ম্যাচের ভাগ্য।
দ্বিতীয় ম্যাচে ১২০ বলের মধ্যে বাংলাদেশ ডট খেলেছিল ৫০টি বল। মূলত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল এখানেই। শেষ ম্যাচে ডট বল কমিয়ে খেলাকে বড় করার কথা জানিয়েছিলেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কিভাবে আরও ডট বল কম খেলে খেলাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। আমরা ব্যাটাররা ধারাবাহিকভাবে ক্লিক করতে পারছি না। এটার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’
বাংলাদেশ অবশ্য সিরিজ শুরু করেছিল ফেবারিটের তকম নিয়ে। ওয়ানডে সিরিজে সফরকারীদের হারিয়েই টি-টোয়েন্টির মিশনে নেমেছিল লিটন দাসের দল। এর আগে দুই দলের সর্বশেষ দেখায়ও টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করার আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
সেই হোয়াইটওয়াশের প্রতিশোধ এবার নিতে চায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের ওপেনার আথানাজে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে চাই। আমরা কাউকে হালকাভাবে নিচ্ছি না এবং শুক্রবার আমরা সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব। আমরা অবশ্যই এই সুযোগ লুফে নিব।’
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের সঙ্গে সঙ্গে পরিসংখ্যানেও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২১বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরমধ্যে বাংলাদেশের জয় ৮টিতে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ১১ ম্যাচে। ২ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের জন্য ঘুরে ফিরে সামনে আসছে সেই একই কথা–দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটারদের। বিশেষ করে মিডলঅর্ডারে দীর্ঘদিন ধরে যে রানখরা চলছে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হৃদয়-জাকের-শামীমদের।
ব্যাটাররা রানে ফিরলেই ম্যাচ জয়ের ধারায় ফিরবে বাংলাদেশ। কারন, গত বছর দুয়েক ধরে দারুণ বোলিং করছেন টাইগার বোলাররা। যেকোনো দলের জন্যই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠতে পারেন মুস্তাফিজ-তানজিম হাসান সাকিব-নাসুমরা। যা বারবার করে দেখাচ্ছেন তারা।
শেষ ম্যাচের একাদশে একাধিক পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টর কথা বিবেচনায় রেখে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে পেসার তাসকিন আহমেদকে। বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে রিশাদ কিংবা নাসুম আহমেদের কোনো একজনকে। তাদের পরিবর্তে সিরিজে প্রথমবার একাদশে দেখা যেতে পারে শেখ মেহেদিকে।
বাংলাদেশ দল : লিটন দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামীম পাটোয়ারী, নুরুল হাসান সোহান, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।