News update
  • US Pledges $2 Billion for UN Humanitarian Aid, Covers Bangladesh     |     
  • Postal Ballots Sent to Over 376,000 Bangladeshi Voters Abroad     |     
  • Arms smuggling attempts rise ahead of BD polls: Home Adviser     |     
  • Dense fog blankets Dhaka as wintry chill disrupts normal life     |     
  • BGB must maintain strategic relations with neighbours: Adviser     |     

ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2022-05-23, 7:35am




প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিবিধান প্রণয়ন এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল করা হলে, দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের পাশাপাশি দক্ষ ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমুল পরিবর্তন আসবে। এ লক্ষ্যে ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের বিভিন্ন উদ্যোগ দ্রুত ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভূমি সেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য ভূমি মন্ত্রণালয় নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, খতিয়ান ও পর্চা, জরিপ এবং জমির ম্যাপ সম্পর্কিত কাজ করে।

এদিকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নামজারি এবং খতিয়ানের ডাটাবেজ আইন মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত নিবন্ধন অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ই-নামজারির জন্য আধুনিক ফরম চালু করা হবে। এই ফরম চালু হলে, আবেদন করার সময় আবেদনে ত্রুটি আছে কি না তা বোঝা যাবে। এছাড়া কল সেন্টারের মাধ্যমেও নামজারির আবেদন জমা দেওয়া যাবে।

জমির যেসব ডকুমেন্ট সরকারের কাছে রক্ষিত আছে, তার কোনো কপি নাগরিককে নামজারি আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে না। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিবন্ধন দলিলমূলেও নামজারি করা হবে। এতে জমি হস্তান্তরে নতুন করে নামজারির প্রয়োজন হবেনা। এসব উদ্যোগ পুরোপুরি কার্যকর হলে জমির মালিকানা হস্তান্তরের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে। আগামী মাসেই ই-নামজারীর নতুন ফরম চালু করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে ৬৫ লক্ষ নামজারি আবেদনের মধ্যে ৫৭ লক্ষ আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে।

এ যাবৎ ৫ কোটি ১৩ লক্ষ খতিয়ান ডিজিটাইজ করা হয়েছে। একটি খতিয়ান থেকে পরবর্তীতে কতটি খতিয়ান তৈরি হয়েছে, সেটাও ডিজিটাল সিস্টেম থেকে জানা যাবে। এতে বোঝা যাবে মূল খতিয়ানের অর্ন্তগত জমি এবং মূল খতিয়ানের অর্ন্তগত অন্যান্য খতিয়ানের জমির পরিমাণের মধ্যে সামঞ্জস্য। খতিয়ান ডাটাবেজ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করা হলে, একই জমি বারবার বিক্রি হওয়ার কোনো ধরনের সুযোগ থাকবে না এবং জাল দলিল তৈরি রোধ হবে। একই সঙ্গে এখন কিউআর কোড দিয়েও দলিলের সঠিকতা যাচাই করা যাচ্ছে।

'মৌজা ও প্লট ভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি জোনিং’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সকল মৌজায় ডিজিটাল ও স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে মানচিত্র তৈরি করে ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। চলতি বছরের ১২ মে মৌজা ও প্লট ভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশের ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪১২টি মৌজা ম্যাপ ডিজিটাইজ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিজিটাইজ ম্যাপের সঙ্গে ক্রয় করা স্যাটেলাইট ভূমির ছবি সমন্বয় করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, কার্যকর ডিজিটাল ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ তৈরি হবে। একটি ক্লিকেই জমির শ্রেণি কি এবং জমির মালিক কে, তা দেখা যাবে।

এছাড়া, অল্প কিছুদিনের মধ্যে পটুয়াখালী এবং বরগুনা জেলায় 'বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে' তথা 'বিডিএস' শুরু হবে, যা পর্যায়ক্রমে সকল জেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। বিডিএস শেষ হলে বাংলাদেশে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ভূসম্পদ সংক্রান্ত জরিপ তথা ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে করার আর প্রয়োজন হবে না।

এদিকে  ২ দশমিক ৫ কোটি হোল্ডিং ডিজিটাইজ করা হয়েছে, বাকিগুলোও খুব দ্রুত শেষ হবে। মানুষ এখন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে না গিয়েই ভূমি কর দিতে পারছেন। বর্তমানে এনআইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে কিংবা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া দু’ভাবেই ভূমি কর জমা দেওয়া যাচ্ছে। এনআইডি নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সরাসরি ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, মূল ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থায় জমির মালিকের প্রোফাইলে না ঢুকেই জমির মালিকের নিবন্ধিত ও হোল্ডিং এন্ট্রি সম্পন্নকৃত জমির ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়া যাবে। অর্থাৎ যে কোনো ব্যক্তি ভূমি উন্নয়ন কর অপরের পক্ষেও দিতে পারবেন। এই ব্যবস্থা কর্মব্যস্ত মানুষের জন্য সুবিধাজনক হবে। তবে সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য দাখিলা যেন কেবল জমির মূল মালিক গ্রহণ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে। ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে দাখিলা প্রদানের বিষয়টিও বিবেচনাধীন আছে।
এখন পর্যন্ত  প্রায় ৩ কোটি ৮ লক্ষ সুবিধাভোগী অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের জন্য নিবন্ধন করেছেন। জমির ৩ কোটি জমির তথ্য ইতোমধ্যে ম্যানুয়াল থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ নাগরিক স্বচ্ছভাবে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেছেন। অন্তত ৫০ শতাংশ নাগরিকের হয়রানী কমেছে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে।
আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সমগ্র দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প'। ভূমি মালিকানা প্রমাণের জন্য উপযুক্ত অনেকগুলো দলিলাদির বদলে একটি “ভূমি মালিকানা সনদ” তথা ‘সার্টিফিকেট অফ ল্যান্ড ওনারশিপ’ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। ভূমি সংস্কার আইন, ভূমি উন্নয়ন কর আইন এবং হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন পেয়েছে। ভূমি মালিকানা ও ব্যবহার আইন এবং ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার সহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় আইন খুব শীগগরই মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
ভূমি রাজস্ব মামলা ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের উদ্দেশ্য হলো সকল অভ্যন্তরীণ মামলা (মিস কেস, রিভিউ ও রেন্ট সার্টিফিকেট) একই প্ল্যাটফর্মে পরিচালনা করা, অনলাইনে মামলার অবস্থা মনিটরিং সুপারভাইজ করা, দেওয়ানি মামলা ব্যবস্থাপনা ও একটি পরিপূর্ণ ডাটাবেজ তৈরি করা।  বিভিন্ন জনবহুল এলাকা স্টেশন, বিপণী-বিতান, উপজেলা অফিস কমপ্লেক্সের মতো বিভিন্ন  জায়গায় ভুমি সেবা ডেস্ক স্থাপন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নাগরিকগণ প্রয়োজনীয় ফির বিনিময়ে জমির খতিয়ান, জমির ম্যাপ প্রিন্ট করতে পারবেন। দিতে পারবেন ভূমি উন্নয়ন কর। জানা যাবে নামজারি আবেদনের আপডেট।
ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি কর্মকর্তাদের পারফরমেন্স মনিটরিং করা শুরু করেছে, অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতায় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য সূত্র বাসস।