News update
  • Rally held at DU against Israeli Zionism     |     
  • 30 injured, bogies derailed as two trains collide in Gazipur     |     
  • 20 killed in mountain bus accident in Pakistan     |     
  • 70% of envir journalists report attacks, threats, pressure: UN     |     
  • Dhaka air ‘unhealthy’ Friday morning     |     

সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2022-06-20, 7:07am

image-46930-1655647056-7ce702562ce9178c8dcc959bbc14ee3d1655687229.jpg




সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে সারাদেশে বন্যা উপদ্রুত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। এ ছাড়া আসামের পানি নামতেও সময় লাগতে পারে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনিস্টিটিউটের পরিচালক এ কে এম সাইফুল ইসলাম রবিবার বাসসকে এসব কথা জানান। 

তিনি বলেন, সোমবারের পর থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে পারে। তবে, বর্তমানে বিপদসীমা অতিক্রম করে রেকর্ড লেভেলে রয়েছে। এজন্য পানি সম্পূর্ণ নামতে এক সপ্তাহ লাগতে পারে। বন্যার পানি বৃদ্ধি সোমবারের পরে হ্রাস পেতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগবে।    

সাইফুল ইসলাম বলেন, আগামী ৪৮ ঘন্টায় বন্যা পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। সুনামগঞ্জের আগামী ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টির পানি নামবে। গত এক সপ্তাহ যাবত ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সুনামগঞ্জ ও সিলেট এলাকায় বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুদিন আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে। শনিবার ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, আজ রোববার ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টির পানি সিলেট, সুনামগঞ্জসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে এখনো নামছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদে আবার আসামের পানিও নামছে।

এছাড়া আগামী ২৪ ঘন্টার প্রবল বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী অঞ্চলে ভূমিধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ  ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক।

তিনি বাসসকে বলেন, দেশে যে আকষ্মিক বন্যা তা শুধু বৃষ্টিপাতের কারণেই হয় না, পাহাড়ের উজান থেকে নেমে আসা ঢলও তার একটি কারণ। 

এছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম ও সিলেট ডিভিশনে অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও বন্যার পানিতে প্লাবিত সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী দুইদিনে এই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। 

তিনি বলেন, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুরে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। অন্যদিকে সিলেটে অতি সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সিলেটে এক মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গলে ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, আজকের দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম। তবে আগামী কয়েকদিনে সারাদেশে  থেমে থেমে  বা বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হতে পারে।

এছাড়া সারাদেশের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তরপূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আজিজুর রহমান বাসসকে বলেন, সুনামগঞ্জ ও সিলেট অঞ্চলে যে ভারী বর্ষণ হচ্ছে শুধু তারই প্রভাবে এই আকষ্মিক বন্যা হয়নি, এটা পাশ্ববর্তী মেঘালয়, চেরাপুঞ্জী ও আসামে অতিভারী থেকে ভারী বর্ষণের প্রভাবে এই বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। 

তিনি বলেন, সারাদেশে জুন মাস থেকে মৌসুমী বায়ু বিরাজ করছে। এর প্রভাবে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশের উপরে দুর্যোগ বিরাজ করছে। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ উত্তরপূর্বাঞ্চল  অর্থাৎ রংপুর, সিলেট এবং ময়মনসিংহ বিভাগ অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত আগামী বুধবার পর্যন্ত তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। ২১ জুনের পর কিছু কিছু অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের তীব্রতা কমে আসবে। তবে সারাদেশে বৃষ্টিপাত মৌসুমী বায়ুর প্রভাব সক্রিয় থেকে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাবে। 

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্র মতে, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী  ৪৮ ঘন্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তরপূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের স্থানসমূহে মাঝারী থেকে ভারী এবং কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে আগামী ৪৮ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ,গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ সকল প্রধান নদনদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।  

তথ্য অনুযায়ী, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও শনিবার থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত তুলনামূলক বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বন্যা উপদ্রুত কিছু এলাকার পানি হ্রাস পেয়েছে। সিলেট অঞ্চলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোয় সৃষ্ট উজানের কারণে পানিস্তর বৃদ্ধি পেতে পারে।  তথ্য সূত্র বাসস।