News update
  • Rail link with Khulna cut off as train derails in Chuadanga     |     
  • 3 killed, 10 injured in Pabna Bus-truck collision     |     
  • UN Chief Appalled as Gaza Crisis Deepens, Aid Blocked     |     
  • Dhaka’s air quality ‘moderate’ also on Friday morning     |     
  • Russia 1st country to recognize Taliban rule in Afghanistan     |     

৫ কোটি টাকার চুক্তিতে এমপি আনার খুন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-05-23, 7:15am

iuiweur8w8e9-24cd5874e5fe3643e37ab45080def6501716426923.jpg




ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। দিনভর নানান গুঞ্জনের পরে জানা গেলো, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীন।

তিনি ঝিনাইদহের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। শাহীনের ভাই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর মেয়র। এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক বন্ধু ও চরমপন্থি নেতা আমানউল্লাহ আমানকে।

আনারকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে আমানকে কিছু টাকা দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পর বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, কলকাতায় বসে হত্যার চূড়ান্ত ছক এঁকে বাংলাদেশে চলে আসেন শাহীন। পরে আমানসহ ছয়জন মিলে এমপি আজীমকে সঞ্জীবা গার্ডেন নামের একটি ফ্ল্যাটে ট্র্যাপে ফেলে ডেকে আনেন। এরপর তাকে জিম্মি করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলি ব্যাগে ভরে ফেলা হয় অজ্ঞাত স্থানে।

মিশন সফল হওয়ার পর আনারের মরদেহের টুকরোগুলো গুম করার জন্য সিয়াম ও জিহাদ নামের দুজনকে দায়িত্ব দিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আমান। ঢাকায় এসে আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে দেখা করেন। তবে শাহীন পরবর্তীতে আমানকে কত টাকা দিয়েছেন সেটা জানা যায়নি।

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ। তারা হলেন- হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানউল্লাহ আমান, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল।

গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আমান জানিয়েছে, এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল হত্যাকাণ্ডের পর।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় এসে মোহাম্মদপুরের বোনের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন আমান। সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার ভারতীয় ঘনিষ্ঠ বন্ধু পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার মলপাড়া লেনের বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। পরদিন ১৩ মে দুপুরে চিকিৎসককে দেখানোর উদ্দেশে বেরিয়ে যান। কিন্তু সন্ধ্যায়় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। উল্টো দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে জানান, তাকে আর ফোন করতে হবে না। দরকার হলে তিনি তাকে (গোপাল বিশ্বাস) ফোন করবেন। কিন্তু এরপর থেকে আর কোনোভাবেই তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠা ছড়ায় তার বাংলাদেশের বাসায়। পাশাপাশি গোপাল বিশ্বাসও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপরই কোনও উপায় না দেখে গত ১৮ মে শনিবার বরানগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল বিশ্বাস।

জিডিতে গোপাল বিশ্বাস লিখেছেন, গত ১৩ মে দুপুর দেড়টার পর ডাক্তার দেখানোর কথা বলে আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান আনোয়ারুল আজীম আনার। যাওয়ার সময় বলে যান, দুপুরে খাবো না, সন্ধ্যায় ফিরে আসবো। যাওয়ার সময় নিজে গাড়ি ডেকে বরাহনগর বিধান পার্ক কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে উঠে চলে যান। এরপর তিনি সন্ধ্যায় বরাহনগর থানার অন্তর্গত মণ্ডলপাড়া লেনে বাড়িতে না ফিরে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেন, আমি বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছি। গিয়ে ফোন করবো, তোমাদের ফোন করার দরকার নেই।

গোপাল বিশ্বাস মিসিং ডায়েরিতে আরও লিখেছেন, গত ১৫ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে জানান, আমি দিল্লি পৌঁছালাম, আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছে, ফোন করার দরকার নেই।

এদিকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করা হয়েছে।

বুধবার (২২ মে) অপহরণের অভিযোগে মামলাটি করেন এমপি আনারের মেয়ে মুনতারিন ফেরদৌস ডরিন। তবে এতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। সন্ধ্যায় শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আহাদ আলী। আরটিভি