News update
  • Dhaka’s mosquito menace out of control; frustration mounts     |     
  • 10-day National Pitha Festival begins at Shilpakala Academy     |     
  • Dhaka concerned at dwindling funds for Rohingyas     |     
  • Rohingya crisis in uncertainty; WASH sector faces challenges     |     
  • HRW delegation meets Commission of Inquiry on Disappearances     |     

মিয়ানমারে গোলাগুলি: সেন্টমার্টিন নিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের কেন এত গুজব?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-06-15, 10:20am

fsgsgs-edb9ad6603e2a42afe0de49b77a6a6961718425206.jpg




বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) নানা গুজব ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এতদিন কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে দ্বীপটিতে যেতে বাংলাদেশের নৌযানগুলো নাফ নদের মিয়ানমারের কিছু অংশ ব্যবহার করতো। কিন্তু মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে সেই রুট কিছুটা সরিয়ে আনা হয়েছে। আর এটাকেই কেন্দ্র করে ফেসবুকে নানা গুজব ছড়াচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। তবে এসব গুজবকে ভিত্তিহীন বলছে প্রশাসন।

পর্যটকবাহী জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ট্রলার মালিকরা জানান, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচরে চর জেগে যাওয়ায় দেখা দেয় নাব্যতা সংকট। এই নাব্যতা সংকটের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে গত ১০ বছর ধরে জাহাজ, ট্রলার ও স্পিডবোটগুলোকে যাতায়াত করতে হয় মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া জলসীমা দিয়ে। একেবারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এই জলসীমা অতিক্রম করতে সময় লাগে ৩০ মিনিটের বেশি। কিন্তু এতদিন ধরে নাফ নদের মিয়ানমার অংশ দিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন রুটের সব নৌযান চলাচল করলেও কোনো সমস্যা হয়নি। 

তবে চলতি বছরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে শুরু হয় সংঘাত। যার জের ধরে এই মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া জলসীমায় চলছে গোলাগুলি। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ রাখা হয়েছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল।

এ বিষয়ে সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুট ১০টির বেশি জাহাজ চলাচল করে। কিন্তু শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচরে চর জেগে যাওয়ায় মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া চ্যানেল ৩০ থেকে ৪০ মিনিট তাদের অভ্যন্তর দিয়ে জাহাজগুলোকে যেতে হয়। মিয়ানমারের সংঘাতের আগে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ, ট্রলার ও স্পিডবোটগুলো নির্বিঘ্নে চলাচল করেছে। কিন্তু চলতি বছর থেকেই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত শুরু হয়। ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে মৌসুমের আগেই নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। আর বিকল্পপথ ইনানী ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট দিয়ে জাহাজ চলাচল করা হয়। মিয়ানমারের সংঘাত এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

গত ৫ জুন থেকে নাফ নদীর মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া জলসীমা নতুন করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মিয়ানমারের স্থলভাগে অবস্থানরত বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির সঙ্গে নাফ নদের জলসীমায় অবস্থানরত মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে থেমে থেমে গুলি ও গোলাবর্ষণ হচ্ছে। এর কিছু অংশ এসে পড়ছে বাংলাদেশের জলসীমায়। এ সময় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ট্রলার ও স্পিডবোট নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে গুলিও এসে পড়ে ট্রলারে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে এই নৌরুটে বন্ধ করে দেয়া হয় নৌযান চলাচল।

তবে দ্বীপবাসী বলেন, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ। তাদের যুদ্ধের কারণে দুর্ভোগ কিংবা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দ্বীপবাসীদের। আর এরই মধ্যে বিকল্পপথ বঙ্গোপসাগর হয়ে ট্রলার নিয়ে শুরু হয়েছে যাত্রীদের যাতায়াত ও কক্সবাজার থেকে জাহাজে খাদ্যসামগ্রী গেছে সেন্টমার্টিনে।

দ্বীপের বাসিন্দা কেফায়েত খান বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের দ্বীপের তো কোনো যুদ্ধে হচ্ছে না। মূলত যুদ্ধটা হচ্ছে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের যুদ্ধের কারণে আমাদের যাতায়াতের নৌরুট বন্ধ হয়ে গেলো। কারণ গোলাগুলির মধ্যে তো আমরা যেতে পারি না। দ্বীপবাসীর পাশাপাশি দ্বীপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। তারা আমাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু মিয়ানমারের যুদ্ধের কারণে দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

টেকনাফের নাফ নদের সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কাছে ঘোরাঘুরি করছে রহস্যজনক বিশাল একটি জাহাজ। ছবি: সময় সংবাদ

জানতে চাইলে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, মিয়ানমারে তাদের জলসীমায় যা হচ্ছে এটা তাদের নিজেদের বিষয়। আমরা তাদের জলসীমা ব্যবহার করে আসা-যাওয়া করি। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে ওই জলসীমা দিয়ে আমরা যাতায়াত করছি না। কিন্তু বাইরের একটা মহল ফেসবুকে গুজব ছড়াচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে নিয়ে। আমরা দ্বীপবাসী আমাদের মতো করে আছি। আর আমাদের প্রশাসনসহ সবাই সহযোগিতা করছে।

মিয়ানমারের এ অভ্যন্তরীণ সংঘাতকে কেন্দ্র করে সেন্টমার্টিন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা গুজব। একটি মহল চেষ্টা করছে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এটা মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে করা হয়েছে। তবে বিকল্পপথ বঙ্গোপসাগর হয়ে ট্রলার নিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত ও কক্সবাজার থেকে জাহাজে খাদ্যপণ্য পাঠানো হয়েছে। সাগর উত্তাল হওয়ায় একটু সমস্যা হচ্ছে। 

তবে সেন্টমার্টিন এখনো বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে উল্লেখ করে গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটন মৌসুমে যাতায়াত করে ১০টির বেশি জাহাজ। জাহাজগুলো ৪ থেকে ৫ মাস চলাচল করলেও ১২ মাসেই দ্বীপের বাসিন্দারা এই নৌরুটে যাতায়াত করে ট্রলার এবং স্পিডবোটে। প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বসবাস করে ১০ হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দা। আর হোটেল মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁয় চাকরি করেন এক হাজার মানুষ। সময় সংবাদ