কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকশ। বুধবারও কর্মসূচি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এরই মধ্যে আজ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের তাৎক্ষনিক খবর জানতে আমাদের লাইভ আপডেটের সঙ্গে থাকুন।
দুপুর ১:৩৩- বগুড়ার শেরপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ওসি রেজাউল করিম রেজা, সাংবাদিকসহ ১০ আন্দোলনকারী আহত। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
দুপুর ১:৩২- ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পুলিশী বাঁধায় কোটা আন্দোলন পণ্ড, ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
চিরনিদ্রায় শায়িত পুলিশের গুলিতে নিহত কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয় কমিটির সদস্য ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। বুধবার সকালে রংপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামে জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুর ১:২৯- পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা সকলেই হল ত্যাগ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
দুপুর ১:২৬- দেড় ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেয়ায় ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক।
দুপুর ১:১৬- গাইবান্ধা জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর।
দুপুর ১:১৫- ফরিদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরতলীর গঙ্গাবর্দী এলাকায় অবস্থিত কৃষি প্রশিক্ষণ ইনিস্টিউিটের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। হঠাৎ করেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা দৌড়ে ক্যাম্পাসে ঢুকলে ছাত্রলীগের কর্মীরাও পিছু নেয়। পরে ক্যাম্পাসের ভেতর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
দুপুর ১:১৬- কোটা সংস্কারের এক দফা দাবি, শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও হল বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের জিরো পয়েন্ট এলাকা অবরোধ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
দুপুর ১:০৬- শরীয়তপুরের জাজিরায় ছাত্রলীগ ও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। আহত ৩।
দুপুর ১:০৫- গতকাল বিএনপি-জামাতের হামলায় নিহত ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী সবুজ আলীসহ নিহতদের স্মরণে বুধবার বিকাল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে- ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
বেলা ১২:৪৮- কোটা সংস্কারের দাবিতে খুলনার শিববাড়ি মোড়ের সড়ক অবরোধ করেছেন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১২:৩৫- শরীফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান নামে শাহবাগ থানায় আটক দুই ছাত্রকে মুক্ত করে নিয়ে গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বেলা ১২:০০- সিদ্ধান্ত ছাড়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের প্রথম সভাটি শেষ হয়েছে। এরপর সদস্যরা দ্বিতীয় বৈঠক করার জন্য উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে রয়েছেন।
কোটা আন্দোলন নিয়ে সময় সংবাদের গতকালের লাইভ আপডেট দেখুন এখানে।
আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। তখন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল ৩০ শতাংশ। এছাড়া ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা ছিল। সব মিলিয়ে ৫৬ শতাংশ।
কোটা বাতিল করে সরকারের পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর রুল দেন হাইকোর্ট। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে ৪ জুলাই। রিট আবেদনকারীপক্ষ সময় চেয়ে আরজি জানালে সেদিন আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এ অবস্থায় কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গত ৯ জুলাই আবেদন করেন দুই শিক্ষার্থী।
দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানির জন্য১০ জুলাই আপিল বিভাগে ওঠে। শুনানি শেষে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। কিছু পর্যবেক্ষণ, নির্দেশনাসহ এ আদেশ দেয়া হয়। এই স্থিতাবস্থা চার সপ্তাহের জন্য উল্লেখ করে আপিল বিভাগ আগামী ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
তবে আদালতের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে-এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ায় পর থেকেই ফেসবুকে ছড়াতে থাকে, ‘আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতি-নাতনি’ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। যার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেকে ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দিয়ে রাতভর বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এরপর সোম এবং মঙ্গলবার ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত এবং কয়েকশ আহত হন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে বুধবার দেশজুড়ে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি পালন করার কথা। সময় সংবাদ